বেহাল বিশ্বনাথ-সিঙ্গেরকাছ সড়কে সাঁকো দিয়ে পারাপার!

36
বিশ্বনাথে সড়কের সাঁকো দিয়ে যাত্রী আর জলাশয়ের মত বড় বড় গর্তের পানিতে ঝুঁকি নিয়ে চলছে যানবাহন।

জাহাঙ্গীর আলম খায়ের বিশ্বনাথ থেকে  :
২০১৫ সালের পর সংস্কার না হওয়া আর স্থানীয় বাসিন্দাদের অপরিকল্পিত বাড়ির নির্মাণের ফলে ‘বিশ্বনাথ-সিঙ্গেরকাছ’ সড়কের অধিকাংশ স্থানে ছোটবড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। ঝুঁকি নিয়ে যানবাহন তো চলছেই, বৈরাগীবাজার ও রহমান নগরসহ একাধিক স্থানে বেশ বড়বড় গর্ত জলাশয়ে পরিনত হয়েছে। ঝুঁকি এড়াতে বাস, মিনিবাস, মাউক্রোবাস ও সিএনজি চালিত অটো রিক্সার যাত্রীদের নামিয়ে নামিয়ে গর্ত পার হওয়ার পর আবার গাড়িতে উঠানো হচ্ছে। যে কারণে দীর্ঘ একমাস যাবত ‘বিশ্বনাথ-সিঙ্গেরকাছ’ সড়কের রহমাননগর এলাকায় যানবাহন পানি দিয়ে আর যাত্রীসাধারণসহ গোয়াহরি ও রহমাননগরের বাসিন্দা, স্কুল-কলেজ ও মাদরাসায় পড়–য়া শিক্ষার্থীদের সড়কে দেওয়া বাঁশের সাঁকো দিয়েই পারপার হতে হচ্ছে। শুধু ‘বিশ্বনাথ-সিঙ্গেরকাছ’ সড়কই নয় ‘ বিশ্বনাথ-জগন্নাথপুর’ বিশ্বনাথ-বাইপপাস সড়কসহ বিভিন্ন স্থানেও এভাবে বড়বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। জরুরী ভিত্তিতে সড়কগুলো সংস্কারের ব্যবস্থা করা না হলে যান চলাচল ব্যাহত হওয়ার পাশাপশি দুর্ঘটনাসহ প্রাণহানীরও আশংকা রয়েছে।
তবে, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অমিতাভ পরাগ তালুকদার এ প্রতিবেদককে বলেছেন, জনদুর্ভোগ এড়াতে জরুরী সংস্কার হিসেবে প্রাথমকিভাবে উপজেলা পরিষদের বরাদ্ধ থেকে বড়বড় গর্তগুলো ভরাটের ব্যবস্থা করা হচ্ছে এবং দ্রুত এ কাজ সম্পন্ন করা হবে।
সরেজমিন বিভিন্ন সড়ক ঘুরে দেখাগেছে, বিশ্বনাথ-জগন্নাথপুর’ সড়কের মিয়ারবাজার, বিশ্বনাথ-বাইপপাস সড়ক ছাড়াও উপজেলার ১৪/১৫টি গ্রামীণ সড়কেরও এমনই বেহাল দশা। এগুলোর যান চলাচলের অনুপযোগী সড়কের মধ্যে রযেছে, ‘বিশ্বনাথ-হাবড়া-ছালিয়া’ সড়ক, ‘কালিগঞ্জ-মনাইকান্দি সড়ক’ ‘কালিগঞ্জ-দাউদপুর-সমসপুর’ সড়ক, ‘কালিগঞ্জ-বরইগাঁও-সদুরগাঁও সড়ক’, ‘বিশ্বনাথ জানাইয়া-খাজাঞ্চি’ সড়ক, ‘বিশ্বনাথ-কুরুয়া বাজার-সরোয়ালা’ সড়ক, ‘রামপাশা-রাজাগঞ্জবাজার’ সড়ক, ‘গুলচন্দবাজার-ভুরকি-মুঞ্চিরবাজার- সোনালী বাংলাবাজার-সিঙ্গেরকাছ’ সড়ক, ‘দশপাইকা-হাবড়া-বাগিচা’ সড়ক, ‘বাগিচা-কজাকাবাদ’ সড়ক, পীরেরবাজার কালভার্ড থেকে ধরারাই-গাজির মোকাম’ সড়ক।
গর্তগুলোতে আরসিসি ঢালাই দেওয়ার দাবি করে গোহরি গ্রামের বাসিন্দা অধ্যক্ষ মুহাম্মদ ইসলামুজ্জমান এ প্রতিবেদককে বলেন, কাপড় ভিজে যাওয়ার কারণে দীর্ঘ একমাস ধরে সিঙ্গেরকাছের কাজিরগাঁও হয়ে অতিরিক্ত ১০কিলোমিটার ঘুরে সকাল-বিকাল তাকে নিজ কর্মস্থল কামালপুরস্থ প্রিন্সিপল উমেন্স মহিলা কলেজে যেতে হচ্ছে।
রহমনানগরের বাসিন্দা ও উপজেলা সুজনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি কবি সাইদুর রহমান সাঈদ আরসিসি ঢালাই দাবি করে তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, গ্রামের লাল মিয়া, আলতাব আলী ও নুর উদ্দিন সড়কের পাশে দেয়াল নির্মাণ করে তাদের বাড়ির সীমানা আলগানোর কারণে পানি নিষ্কাশন না হওয়ায় সড়কের মাঝখানে পুকুরের মত বড়বড় গর্ত হয়েছে। যে কারণে পাকা ওই সড়কে সাঁকো দিয়েই তাদের চলাচল করতে হচ্ছে।
ইনছান আলী নামের এক অটোরিক্সা চালকের সঙ্গে কথা হলে তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, গত শনিবার না জেনে রিজার্ভে যাত্রী নিয়ে সোনালী বাংলাবাজার যান তিনি। আসার পথে আবারও যাত্রী নামিয়ে রহমান নগরের বড় বড় গর্ত পার হন। কিন্তু যাত্রীরা সাঁকো পেরিয়ে গেলেও তার অটোরিক্সাটি পানিতে ভিজে বিকল হয়ে যায়।
শিগগরিই সড়ক সংস্কারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে জানিয়ে উপজেলা প্রকৌশলী হারুনুর রশীদ ভূঁইয়া এ প্রতিবেদককে বলেন, সড়ক সংস্কারে আবারও দরপত্র আহবান করা হচ্ছে। এর আগেও একবার টেন্ডার দেওয়া হয়েছিল কিন্তু কোন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দরপত্র নেন নি।