রাষ্ট্রদূত পর্যায়ে রদবদল সেপ্টেম্বরের মধ্যে

23

কাজিরবাজার ডেস্ক :
সেপ্টেম্বরের মধ্যে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে রাষ্ট্রদূত পর্যায়ে বড় ধরনের রদবদল হবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আব্দুল মোমেন। তিনি সোমবার (১০ জুন) সাংবাদিকদের তার দফতরে বলেন, ‘আমি আসার পর বড় ধরনের কোনও পরিবর্তন করিনি। আগামীতে আমরা পরিবর্তন করবো। কারণ, অনেকের অনেক বছর হয়ে গেছে।’
উল্লেখ্য, জানুয়ারি মাসে দায়িত্ব নিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আগামীতে আমরা পরিবর্তনের ইচ্ছা রাখি এবং এগুলো আমাদের করতে হবে সেপ্টেম্বরের আগে, কারণ ওই সময়ে স্কুল শুরু হয়। যারা নতুন জায়গায় যাবেন তাদের সন্তানদের যেন পড়াশোনার কোনও অসুবিধা না হয়। আমাদের সরকারের একটি আইন হচ্ছে তিন বছর কোথাও থাকলে পরে তাকে অন্য জায়গায় পাঠানো হয়।’
উল্লেখ্য, বাংলাদেশের ৭০ এর অধিক মিশনে অন্তত ২০জন রাষ্ট্রদূত ও মিশন প্রধান আছেন, যারা এক জায়গায় তিন বছরের বেশি কর্মরত আছেন অথবা যারা ১০ বছরের অধিক সময় ধরে বিদেশে রাষ্ট্রদূত হিসাবে কাজ করছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা তার হতাশা ব্যক্ত করে বলেন, ‘বর্তমান অবস্থার যদি পরিবর্তন না হয়, তবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনেক কর্মকর্তাই রাষ্ট্রদূত না হয়ে অবসরে চলে যাবেন।’
উল্লেখ্য, প্রত্যেক কূটনীতিকের অভিষ্ট লক্ষ্য হচ্ছে রাষ্ট্রদূত হওয়া।
তিনি বলেন, ‘তিন বছর মেয়াদে দুটি ঊর্ধ্বে তিনটি রাষ্ট্রদূত পোস্টিং করার ওই কূটনীতিক দেশে ফেরত না এলে রাষ্ট্রদূত হওয়ার যোগ্য জুনিয়র অফিসাররা কীভাবে বিদেশে যাবেন।’
বর্তমানে মহাপরিচালক হিসাবে কাজ করছেন এমন একাধিক কর্মকর্তা তাদের হতাশার কথা বলতে গিয়ে বলেন, ‘আমদের কাজের ধরন রবি থেকে বৃহস্পতি এবং নয়টা-পাঁচটা নয়। এখানে পররাষ্ট্র সচিব থেকে মহাপরিচালক এবং অধ্বস্থন কর্মকর্তাদেরও রাত পর্যন্ত কাজ করতে হয় এবং শুক্রবার বা শনিবার অফিস করতে হয়। এত পরিশ্রম করার পর মিশন প্রধান হিসাবে পোস্টিং না পাওয়াটা দুঃখজনক বলে মন্তব্য করেন তারা। তাদের মতে এর ফলে তাদের কর্মস্পৃহার ওপর প্রভাব পড়তে পারে।
একজন মহাপরিচালক বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে যারা রাষ্ট্রদূত হিসাবে কাজ করছেন, তারা দেশে ফেরত আসতে আগ্রহী হননা বলে তাদেরকে দেশে ফেরত আনা হয়না।’
তাদেরকে দেশে ফিরিয়ে না আনাটা একটি ভুল সিদ্ধান্ত বলে মন্তব্য করেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘তারা ফেরত আসার পরে এক বা একাধিক উইং (অনুবিভাগ) এর দায়িত্বপ্রাপ্ত হলে অসুবিধা কোথায়।’
রাষ্ট্রদূতরা ফেরত আসার পরে দক্ষিণ এশিয়া, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, পূর্ব এশিয়া, পশ্চিম এশিয়া, ইউরোপ বা আমেরিকাস, জাতিসংঘ অনুবিভাগ বা রাষ্ট্রাচার প্রধানের দায়িত্ব নিতে পারেন বলে মন্তব্য করেন তিনি।
উল্লেখ্য, দক্ষিণ এশিয়া অনুবিভাগের অধীনে রায়েছে ভারত, পাকিস্থান এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেশী দেশ, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অনুবিভাগের অধীনে আছে মিয়ানমার, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুরের মতো দেশ, পশ্চিম এশিয়া অনুবিভাগে আছে সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো, পূর্ব এশিয়াতে আছে চীন, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ২০ এর অধিক অনুবিভাগ ও ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে বর্তমানে মাত্র দুইজন রাষ্ট্রদূত পর্যায়ের কর্মকর্তা আছেন।