ঐতিহাসিক বদর দিবস পালিত

107
ঐতিহাসিক বদর দিবস উপলক্ষে আলোচনা ও দোয়া মাহফিলে নসীহত শেষে মোনাজাত করছেন মুরশিদে বরহক হযরত আল্লামা ইমাদ উদ্দিন চৌধুরী বড় ছাহেব ফুলতলী।

দরগাহ হযরত শাহজালাল (রহ.) মাদরাসার মুহতামিম ও শায়খুল হাদিস আল্ল¬ামা মুহিব্বুল হক গাছবাড়ি বলেছেন, ঐতিহাসিক বদর দিবসের তাৎপর্য অপরিসীম। ইসলামের বিজয় সূচনা হয়েছিল বদর যুদ্ধের মাধ্যমে। নবী মুহাম্মদ (স.) ও সাহাবায়ে কেরাম কোনো শক্তি না থাকা সত্ত্বেও তৎকালীন ক্ষমতাধর কাফের বাহিনীর বিরুদ্ধে মরণপণ লড়াই করে বিজয় লাভ করেছিলেন। এটাই ছিলো ইসলামের প্রথম বিজয়। গতকাল বৃহস্পতিবার (১৭ রমজান) সিলেট নগরীর বালুচরস্থ জামিআ সিদ্দিকিয়ায় ঐতিহাসিক বদর দিবস উপলক্ষে আয়োজিত দোয়া মাহফিল ও ইফতারপূর্ব আলোচনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
শায়খুল হাদিস আল্ল¬ামা মুহিব্বুল হক গাছবাড়ি বলেন, তাকওয়া অর্জনের মাস রমজান। আজ ১৭ রমজান চলে গেলো। কিন্তু আমাদের কতটুকু তাকওয়া অর্জন হলো, সেটা ভাবতে হবে। এই তাকওয়ার জন্যই বদর যুদ্ধে মুসলমানরা বিশাল কাফের শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করে বিজয় অর্জন করতে পেরেছিলেন। আমরাও যদি তাকওয়া অর্জন করতে পারি, তবে কেউ আমাদের পরাজিত করতে পারবে না।
জামিআ সিদ্দিকিয়ার প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি কবি ও গবেষক সৈয়দ মবনুর সভাপতিত্বে ও উপ-পরিচালক মাওলানা রেজাউল হক ও শিক্ষাসচিব মাওলানা আফতাবুজ্জামান মোহাম্মদ হেলালের যৌথ সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন জামিআ সিদ্দিকিয়ার পরিচালক মুফতি মনসুর আহমদ। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন ৫ নং টুলটিকর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এসএম আলী হোসেন, ইসলামী ঐক্যজোট নেতা মুফতি ফয়জুল হক জালালাবাদী, গল্পকার সেলিম আউয়াল, কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদের সাধারণ সম্পাদক দেওয়ান মাহমুদ রাজা চৌধুরী ও বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক কর্মকর্তা মীর ফয়সল আলী।
অনুষ্ঠানের শুরুতে কোরআন তেলাওয়াত করেন জামিআর ছাত্র হাফিজ আব্দুর রাজ্জাক। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন মাহফিল উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক মাওলানা মো. জাফর ইকবাল। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োটেকনোলজি অনুষদের ডীন ড. মেহদী হাসান খান, ছড়াকার এডভোকেট আব্দুস সাদেক লিপন, কবি বাছিত ইবনে হাবীব, ইসলামী ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা মাওলানা মামুনুল হক, কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদের সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্পাদক এডভোকেট আব্দুল মুকিত অপি, সাংবাদিক মাওলানা রুহুল আমীন নগরী, ছাত্র অভিভাবক মাওলানা মাসুমুর রহমান, ডা. আব্দুর রহমান, শৈলীর উপদেষ্টা সচিব মাহবুব মুহম্মদ, উপদেষ্টা হেলাল হামাম, উপদেষ্টা ফিদা হাসান, উপদেষ্টা সালেহ আহমদ সাদী এবং শৈলীর সভাপতি মাজিদুল ইসলাম চৌধুরী।
এদিকে উস্তাযুল কুররা ওয়াল মুহাদ্দীসিন, মুরশিদে বহরক হযরত আল্লামা ইমাদ উদ্দিন চৌধুরী বড় ছাহেব কিবলাহ ফুলতলী বলেছেন, বদর যুদ্ধে কঠিন মনযিল অতিক্রম করে যারা জান্নাতের সার্টিফিকেট অর্জন করেছেন মহান আল্লাহ নিজে তাদের প্রশংসা করেছেন। এমন শক্তিতে বলিয়ান যে, হাজারের মোকাবেলায় তাদের একজনই যথেষ্ট। তারা পরস্পরের ব্যাপারে অত্যন্ত অনুগ্রহ পরায়ণ। তাদের পরস্পরে এমন ভালোবাসা ছিল যার নযির দুই ভাইয়ের মধ্যেও পাওয়া যায় না।
কোনো সাহাবী তাঁর সামনে অন্য সাহাবীর সমালোচনা পছন্দ করতেন না। হযরত সাদ (রা.)-এর সামনে এক ব্যক্তি হযরত আলী (রা.)-কে গালি গালাজ করলে তিনি বললেন, আল্লাহ! যদি এ ব্যক্তি মিথ্যাবাদী হয় তাহলে এখনই একটি নিদর্শন দেখান। সঙ্গে সঙ্গে জঙ্গল থেকে একটি বাঘ এসে লোকটিকে খেয়ে ফেললো। সাহাবী সম্পর্কে আমাদের যবান সতর্ক থাকা উচিত। কিছু ফিতনাবাজ লোক আছে, সাহাবীদের বিরোধিতা করা যাদের স্বভাব। এরা আগেও ছিল, এখনও আছে। এদের থেকে সতর্ক থাকবেন।
তিনি গতকাল দারুল কিরাত মজিদিয়া ফুলতলী ট্রাস্ট প্রধান কেন্দ্র ফুলতলী ছাহেব বাড়ি কর্তৃক আয়োজিত ঐতিহাসিক বদর দিবস উপলক্ষে আলোচনা ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির নসীহত প্রদান কালে উপরোক্ত কথাগুলো বলেন।
প্রধান কেন্দ্রের উস্তায মাওলানা আব্দুল কাদির-এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মাওলানা মুফতী গিয়াস উদ্দীন চৌধুরী ফুলতলী, বাংলাদেশ আনজুমানে আল ইসলাহ’র কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক প্রিন্সিপাল মাওলানা মঈনুল ইসলাম পারভেজ, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা মাওলানা মাহমুদ হাসান চৌধুরী, অর্থ সম্পাদক উপাধ্যক্ষ মাওলানা আবু ছালেহ মো. কুতবুল আলম, প্রশিক্ষণ সম্পাদক মাওলানা মো. নজমুল হুদা খান, মুসলিম হ্যান্ডস ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ-এর কান্ট্রি ম্যানেজার ও স্কুল অব একসেলেন্স-এর প্রিন্সিপাল মাওলানা গুফরান আহমদ চৌধুরী, তালামীযে ইসলামিার কেন্দ্রীয় সভাপতি আখতার হোসাইন জাহেদ, সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি মাওলানা আজির উদ্দিন পাশা, হাফিয মাওলানা নজীর আহমদ হেলাল, মাওলানা রেদওয়ান আহমদ চৌধুরী কেন্দ্রীয় সহ সভাপতি মুহিবুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুনুর রহমান লেখন।
প্রধান কেন্দ্রের উস্তায মাওলানা মাহমুদুল হাসানের পরিচালনায় মাহফিলে সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধান কেন্দ্রের উস্তায ইছামতি কামিল মাদরাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মাওলানা শিহাবুর রহমান চৌধুরী, সৎপুর কামিল মাদরাসার আরবী প্রভাষক মাওলানা মনির উদ্দিন, মাওলানা আজিজুর রহমান, ফুলতলী কামিল মাদরাসার আরবী প্রভাষক মাওলানা মোহাম্মদ আলী, তালামীযে ইসলামিয়ার সাবেক কেন্দ্রীয় তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক মাওলানা আব্দুল বাছিত, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা হাফিজুর রহমান, কেন্দ্রীয় শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান ফরহাদ, জকিগঞ্জ সিনিয়র মাদরাসার শিক্ষক মাওলানা ফদ্বলুর রহমান, গাবুরগাঁও দাখিল মাদরাসার সুপার মাওলানা কামরুজ্জামান, দক্ষিণ সুরমা উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মাওলানা মাহবুবুর রহমান, তালামীযে ইসলামিয়া সিলেট পূর্ব জেলা সভাপতি কামাল উদ্দিন, পশ্চিম জেলা সভাপতি আলী হায়দার, হবিগঞ্জ জেলা সভাপতি নাসির উদ্দিন, সুনামগঞ্জ জেলা সভাপতি ছালিক আহমদ। শুরুতে কুরআন তেলাওয়াত করেন প্রধান কেন্দ্রের ছাত্র তাওফিক আলম, ইসলামী সঙ্গীত পরিবেশন করেন বিশিষ্ট ইসলামী সঙ্গীত শিল্পী মাওলানা মুজাহিদুল ইসলাম বুলবুল ও মুনাওয়ার আব্দুর রাফি মিশকাত। বিজ্ঞপ্তি