গোলাপগঞ্জে কিশোরের রহস্যজনক মৃত্যু নিয়ে ধূম্রজাল

21
গোলাপগঞ্জে রহস্যজনকভাবে মারা যাওয়া তাহমিদ।

সেলিম হাসান কাওছার গোলাপগঞ্জ থেকে :
গোলাপগঞ্জে তাহমিদ আহমদ (১৫) নামে এক কিশোরের রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। সে উপজেলার ঢাকাদক্ষিণ ইউপির সুনামপুর গ্রামের কাতার প্রবাসী আব্দুল হান্নানের ছেলে। প্রায় ৫ বছর আগে নিহতের বাবা আব্দুল হান্নান স্ত্রীসহ সন্তানদের বাড়ী থেকে তাড়িয়ে দেওয়ায় রাবিয়া বেগম (৩৫) প্রথমে পিত্রালয়ে ও পরে গোলাপগঞ্জ পৌরসভার সস্বতি ময়না মিয়া ব্রিক ফিল্ডের পাশে ২য় তলার একটি বাসায় বসবাস শুরু করেন। নিহতের মা রাবিয়া জানান, তাহমিদ খুব চঞ্চল ছিল। খারাপ লোকদের সাথে চলাফেরা করতো। এ নিয়ে সোমবার (৯এপ্রিল) দিবাগত সাড়ে ১২টায় আমার বড় ছেলে আবু তাহের ফরহাদ (১৮) ও আমি তাকে কালমন্দ করি। রাত ১টায় তার রুমের দরজা লাগিয়ে টুল দিয়ে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ফ্যানের সাথে ঝুলার পর ছটফটের শব্দ শুনে তাকে ডাকাডাকি করি এবং তার কোন সাড়া শব্দ না পেয়ে বড় ছেলে ফরহাদকে নিয়ে দরজা ভেঙে দেখি সে ফ্যানের সাথে ঝুলে রয়েছে। তাৎক্ষণিক তাকে উদ্ধার করে সিএনজি যোগে সিলেট সিলেট নর্থইষ্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তবে এ ঘটনার অন্যরকম ভাষ্য দেয় পুলিশের কাছে নিহতের বড় ভাই ফরহাদ। সরিজমিন ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই কিশোরের আত্মহত্যার কোন চিহ্ন পাওয়া যায়নি। গলায় বিভিন্ন অংশে হাতের আংগুলে ছাপও দেখা যায়। বেলা ১২টায় খবর পেয়ে গোলাপগঞ্জ মডেল থানার ওসি (তদন্ত) দিলীপ কান্ত নাথ,এসআই মাহবুব নিহত ওই কিশোরের লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করেন। ওই বাসা মালিক দিলু মিয়া জানান, ওইদিন রাত আড়াইটায় নিহতের পিতা পরিয়কারী বাবুল আহমদ আমার বাসা দেখা শোনার দায়িত্বে থাকা আমার খালাতো ভাই শেখ জালালকে ফোন দিয়ে জানানো হয় তাহমিদ নামে ওই কিশোর মারা গেছে। বাবুল স্ত্রী সন্তান পরিচয় দিয়ে প্রায় ২ মাস আগে আমার বাসায় উঠেন। গতকাল মঙ্গলবার সকালে বাবুলকে ফোন দেওয়া হলে তিনি বলেন, এরা তার কিছু না। তিনি বিয়ে করেননি! তিনি ঢাকাদক্ষিণ বাজারে ব্যবসা করেন। এ বিষয়ে নিহতের পিতা পরিচয়কারী বাবুল আহমদের ব্যবহৃত মোবাইলে ফোন দেওয়া হলে তিনি বলেন, এরা আমার কিছু না। আমার দোকানে তারা চাকরী করতো। আপনি ওই বাসায় নিয়মিত আসা যাওয়া করেন কেনো’ ও স্ত্রী সন্তান পরিচয় দিয়ে বাসা ভাড়া নিয়েছেন কি জানতে চাইলে তিনি ফোন কেটে দেন।
এ ব্যাপারে গোলাপগঞ্জ মডেল থানার ওসি (তদন্ত) দিলীপ কান্ত নাথের সাথে আলাপ করা হলে তিনি বলেন, ময়না তদন্ত রিপোর্ট হাতে এলে মৃত্যুর ধরণ জানা যাবে। এদিকে ওই কিশোরের মৃত্যু নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে ধূম্রজাল। স্থানীয়রা নিহতের পরিবারের ভাল ও খারাপের বিভিন্ন কাহিনী তুলে ধরছে। নিহত তাহমিদ ৩ভাই বোনের মধ্যে ২য় ছিল। হালিমা বেগম (৮) নামে তার এক বোন রয়েছে।