কালবৈশাখী ঝড়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি ॥ ফেঞ্চুগঞ্জে ধান কাটতে গিয়ে বজ্রপাতে ৩ কৃষক নিহত

19
ফেঞ্চুগঞ্জে বজ্রপাতে মারা যাওয়া গোলাপগঞ্জের ২ কৃষক ও ফেঞ্চুগঞ্জের একজন।

স্টাফ রিপোর্টার :
ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলায় কালবৈশাখী ঝড় ও বৃষ্টির সময় বজ্রপাতে ৩ কৃষক নিহত হয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে উত্তর কুশিয়ারা ইউনিয়নের এলাকায় তেরাকুড়ি গ্রামে হাওরে ধান কাটতে গিয়ে বজ্রপাতে তাদের মৃত্যু হয়। এছাড়া উপজেলায় কালবৈশাখী ঝড়ে বোরো ধান, গাছপালা ও কাঁচা ঘরবাড়ির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি সাধিত হয়েছে।
বজ্রপাতে নিহতরা হচ্ছেন- ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার তেরাকুড়ি এলাকার মৃত তজমুল আলীর পুত্র জিতু মিয়া (৩৮), গোলাপগঞ্জ উপজেলার লক্ষ্মীপাশা এলাকার মই কন্দর আলীর পুত্র রাজন মিয়া (২৮) ও গোলাপগঞ্জ উপজেলার লক্ষীপাশা এলাকার আনোয়ার হোসেন (৪২)।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মঙ্গলবার সকালে ধুপড়িয়া হাওরে ধান কাটতে যান জিতু মিয়া, রাজন মিয়া ও আনোয়ার। দুপুর ১২ টার দিকে আকাশ মেঘলা করে বজ্রপাত শুরু হয়। এ সময় তারা ৩ জনই ঘটনাস্থলে বজ্রাঘাতে মৃত্যুবরণ করেন। বৃষ্টি থামলে আশপাশের লোকজন তাদের লাশগুলো উদ্ধার করেন। পরে কটালপুর গ্রামে নিহতের স্বজনদের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হয়।
উত্তর কুশিয়ারা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আহমেদ জিলু জানান, লাশ ৩টি হাওর থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। প্রশাসনের সহযোগিতায় তাদের দাফনের প্রক্রিয়া চলছে।
বজ্রপাতে ৩ জনের মারা যাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন ফেঞ্চুগঞ্জ থানার ওসি আবুল বাশার মুহাম্মদ বদরুজ্জামান।
সিলেট জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) মাহবুবুল আলম বলেন, ফেঞ্চুগঞ্জে হাওরে ধান কাটতে গিয়ে বজ্রপাতে ৩ জন কৃৃষক মারা গেছেন।
এদিকে, ফেঞ্চুগঞ্জে কালবৈশাখী ঝড়ে বোরো ধান, গাছপালা ও কাঁচা ঘরবাড়ির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ঝড়ের কারণে পুরো উপজেলায় বিদ্যুৎ বিপর্যয় রয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। গতকাল মঙ্গলবার ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলায় সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে হঠাৎ অন্ধকার হয়ে প্রচন্ড বেগে ঝড়ো হাওয়ার সাথে বৃষ্টিপাত শুরু হয়। আধাঘন্টা স্থায়ী হয় এই ঝড়।
জানা যায়, এই ঝড়ে উপজেলাজুড়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। অসংখ্য কাঁচা বাড়িঘর গাছ পালা, দোকান পাট, পোল্ট্রি খামার, আধা পাকা ঘর ভেঙ্গে পড়ে। লণ্ডভণ্ড হয়ে যায় গাছপালা। ফসলেরও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এ সময় বজ্রপাতে ৩ জনের মৃত্যুও হয়েছে।
ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিসার হাবিবুর রহমান জানান, তাৎক্ষণিকভাবে ফসলের ক্ষতির পরিমাণ জানা যায়নি। তবে আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে জানাতে পারলাম ফেঞ্চুগঞ্জসহ সিলেটের অনেক অঞ্চলে সামনের দিনগুলোতে ঝড়, ভারীবৃষ্টি ও শিলা বৃষ্টি হতে পারে। তাই ৮০ ভাগ বোরোধান পাকা হলে তিনি কর্তন করার পরামর্শ দেন।