ওসমানীনগরে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে বৃদ্ধকে খুন, পানির ট্যাংকি থেকে লাশ উদ্ধার

32

শিপন আহমদ ওসমানীনগর থেকে :
ওসমানীগরে পানির ট্যাংকি থেকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় বৃদ্ধের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। সোমবার ভোর ৪টার দিকে থানা পুলিশ উপজেলার সাদিপুর ইউপির তাজপুর গ্রামের এক প্রবাসীর বাড়ির ছাদের উপরে থাকা পানির ট্যাংকি থেকে লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত বৃদ্ধের নাম আনিছ উল্যা (৫৫)। তিনি একই ইউনিয়নের ধরখা মোহাম্মদপুর গ্রামের মৃত রোহাব উল্যার পুত্র। নিহত বৃদ্ধ ওই বাড়িতে (যে বাড়ি থেকে লাশ উদ্ধার করা হয়েছে) একই এলাকার শেরপুর টুল প্লাজা সংলগ্ন প্রবাসী আলাউদ্দিনের বাড়ির কেয়ারটেকারের দায়িত্বে ছিলেন বলে জানা গেছে। থানা পুলিশ লাশ উদ্ধার করে সুরতহাল রিপোর্ট তৈরী করে ময়না তদন্তের জন্য সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করে। হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত সন্দেহে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কয়েকজনকে আটক করেছে পুলিশ।
সরেজমিনে গেলে নিহতের শ্যালক নরুল আমিনসহ অনান্য আত্মীয়-স্বজনরা জানান, রবিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে ৪-৫ লোক নিহত আনিছ উল্লার নিজ বাড়িতে গিয়ে চা-নাস্তা খান। এরপর আনিছ উল্যার দায়িত্বে থাকা বাসাটি ভাড়া নেয়ার প্রস্তাব করে এক পর্যায়ে তারা ওই বাসাটি দেখার জন্য আনিছ উল্যাকে সাথে নিয়ে বাড়ি থেকে বের হন। রাত ১০টা পর্যন্ত আনিছ উল্যা বাড়িতে না ফেরায় স্ত্রী হাফছা বেগম স্বামীর সন্ধান করেন। এক পর্যায়ে রাত ১১টার দিকে আনিছ উল্যার বাড়িতে যাওয়া কয়েকক ব্যক্তির মধ্যে কোনো একজন আনিছ উল্যার বাড়িতে গিয়ে তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি তার স্ত্রীর কাছে দিয়ে আসেন। এ সময় নিহতের স্ত্রী আফছা বেগম তাকে জানান, আমার স্বামীকে বাড়ি থেকে নিয়ে গেলেন এখন শুধু মোবাইল ফোন বাড়িতে নিয়ে আসছেন আমার স্বামী কোথায় তাঁকে নিয়ে আসেন। নিহতের স্ত্রীর এমন প্রশ্নে মোবাইল নিয়ে আসা ব্যক্তি আনিছ উল্লাকে নিয়ে আসার কথা বলে নিহতে বাড়ি থেকে চলে যায়। সাথে সাথে নিহতের স্ত্রী আফছা বেগম তার ভাই নুরুল আমিনকে বিষয়টি অবগত করেন। নুরুল আমিন, তার পিতা ও স্থানীয় লোকজনের সহযোগিতায় নিহতের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন প্রদানকারীকে শেরপুর টোল প্লাজা থেকে আটক করে থানা পুলিশকে খবর দেন। তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী ভোর ৪টার দিকে একই এলাকার তাজপুর গ্রামের শেরপুর টোল প্লাজা সংলগ্ন প্রবাসী আলাউদ্দিনের বাসার পানির ট্যাংকি থেকে লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে এসেছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন । তবে প্রকৃত ঘটনা উদঘাটন ও অধিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ তাদের নাম প্রকাশে অপরগতা প্রকাশ করছে। নিহত আনিছ উল্লা পানি উন্নয়ন বোর্ডের গাড়ি চালক ছিলেন। বর্তমানে তিনি অবসর প্রাপ্ত ছিলেন বলে জানা গেছে।
এ ব্যাপারে ওসমানীনগর থানার অফিসার ইনচার্জ এসএম আল-মামুন বৃদ্ধের লাশ উদ্ধারের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, লাশ ময়না তদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। তদন্তের স্বার্থে এখন এ ব্যাপারে বিস্তারিত কিছু বলা যাচ্ছে না। তবে খুব দ্রুত এই হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটন হবে বলে আশ্বাস প্রদান করেন তিনি।