অর্থ সহায়তা প্রদান প্রকল্প

89

প্রান্তিক মানুষের পাশে দাঁড়ানো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দারিদ্র্য দূরীকরণে যে সব প্রকল্প হাতে নিয়েছেন, তারই একটি অর্থ সহায়তা প্রদান। সে কারণেই সরকারী সহায়তা যাচ্ছে অর্ধকোটির মতো ব্যাংক হিসাবে। উন্নয়নশীল দেশের পথে ধাবমান বাংলাদেশের মানুষের কাছে বিষয়টি নতুন এবং আশাতীত হলেও শেখ হাসিনার কল্যাণে পুরোটাই বাস্তব। ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে বিভিন্ন প্রকল্পভিত্তিক ভর্তুকি বা অর্থসহায়তা দিয়ে আসছে সরকার। ৪৬ লাখ ৫৪ হাজার আট শ’ একান্নটি ব্যাংক হিসাবে এসব অর্থ সহায়তা দেয়া হচ্ছে। সমাজের বিভিন্ন শ্রেণী ও পেশার সুবিধাবঞ্চিত মানুষ ১০,৫০ ও ১০০ টাকায় হিসাব খুলে এসব সহায়তা পেয়ে আসছে।
এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, নামমাত্র অর্থে খোলা ব্যাংক হিসাবের সংখ্যা বর্তমানে দাঁড়িয়েছে প্রায় এক কোটি ৮০ লাখ। আর এসব হিসাবের বিপরীতে জমা রয়েছে এক হাজার ছয় শ’ দশ কোটি টাকা। মোট হিসাবের মধ্যে কৃষকের ব্যাংক হিসাব হচ্ছে ৯৩ লাখ ১৮ হাজার, যা মোট ব্যাংক হিসাবের ৫২ শতাংশ। এ ছাড়া সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচীর আওতায় ভাতাভোগী ২৬ শতাংশ এবং বাকি ২২ শতাংশ অন্যান্য। এসব এ্যাকাউন্টধারী একদিকে যেমন আর্থিক সেবার অন্তর্ভুক্ত হতে পারছেন, অন্যদিকে এসব এ্যাকাউন্টের মাধ্যমে ভর্তুকি কিংবা অর্থ সহায়তাও পাচ্ছেন। একই সঙ্গে তাদের মধ্যে ভবিষ্যতের জন্য সঞ্চয়ের মনোভাব গড়ে উঠছে, অর্থনীতির জন্য যা খুবই ইতিবাচক হিসেবে প্রতিভাত। এখানেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাফল্য। কৃষক, মুক্তিযোদ্ধা, অতি দরিদ্র মহিলা, দুস্থ, ছিন্নমূল ও কর্মজীবী শিশু, এমনকি ভিক্ষুকরাও যাতে দশ টাকায় ব্যাংক হিসাব খুলতে পারে, সে জন্য ব্যাংকগুলোকে নির্দেশনা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। একইভাবে স্কুল পর্যায়ের শিক্ষার্থীরাও যেন এ সুযোগ পায় বাংলাদেশ ব্যাংক সে ব্যবস্থাও করেছে। অন্যান্য ব্যাংক হিসাবের মতো এসব হিসাবের জন্য ন্যূনতম কোন স্থিতি রাখার প্রয়োজন নেই। বাড়তি কোন ‘চার্জ’ও আরোপ করা হয়নি। দশ টাকার এ হিসাবধারীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি হিসাব রয়েছে কৃষকদের। কৃষকসহ অন্যান্য প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে ব্যাংকিং সেবায় আনার জন্য শেখ হাসিনার সরকার এ সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে। অর্থাৎ ন্যূনতম মূল্যে ব্যাংক হিসাব খোলা। এ হিসাবের আওতায় কৃষকদের কৃষি উপকরণ ও ভাতার টাকা বিতরণের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা এসেছে। এতে প্রশাসনের জন্য কাজ করারও অনেক সুবিধা হয়েছে। আগে ভর্তুকি ও সরকারী সহায়তার মধ্যে থাকত মধ্যস্বত্বভোগীরা। ফলে সঠিকভাবে প্রান্তিক মানুষের কাছে সহায়তা ও ভর্তুকি পৌঁছাত না। আবার এ কাজ করতে অনেক বেশি সময় লেগে যেত। এখন তা সহজ হয়েছে। এছাড়া একই এ্যাকউন্ট ব্যবহার করে রেমিটেন্স উত্তোলন, কৃষিঋণ গ্রহণেরও সুযোগ রয়েছে। এ কার্যক্রম যখন শুরু হয়, তখন থেকেই কৃষকদের সঞ্চয়ের মনোভাব গড়ে তোলার কাজ চালু হয়। অন্য হিসাবে সঞ্চয় করলে যে পরিমাণ লাভ দেয়া হয়, তার চেয়ে বেশি পরিমাণে লাভ দিতে ব্যাংকগুলোকে নির্দেশ দেয়ার পর ব্যাংকগুলো ব্যাপক সহায়তা করেছিল।
শেখ হাসিনার সরকারের যুগান্তকারী এ পদক্ষেপের ফলে গ্রামীণ জীবনে যে গুণগত পরিবর্তন এনে দিচ্ছে, তাতে সুবিধা বঞ্চিতরা করুণ দশা থেকে উত্তরণ ঘটাতে পারবে।