চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স

43

স্পোর্টস ডেস্ক :
জমজমাট ম্যাচে ঢাকা ডায়নামাইটসকে হারিয়ে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) ষষ্ঠ আসরের চ্যাম্পিয়ন হলো কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। এই নিয়ে দ্বিতীয়বার শিরোপা ঘরে তুলল দলটি। শুক্রবার তামিম ইকবালের দুর্দান্ত সেঞ্চুরির দিনে ঢাকার বিপক্ষে ১৭ রানের জয় তুলে নেয় ভিক্টোরিয়ান্সরা। ১৪১ রানের অসাধারণ ইনিংস খেলে ম্যাচ সেরার পুরস্কার জিতেছেন ড্যাশিং ওপেনার তামিম।
মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচটিতে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে তামিম ইকবালের দুর্দান্ত সেঞ্চুরিতে ৩ উইকেটে ১৯৯ রান সংগ্রহ করে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। জবাবে, নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ১৮২ রানে থামে ঢাকা ডায়নামাইটস।
২০১৫ সালে টুর্নামেন্টে নাম লিখিয়েই মাশরাফি বিন মর্তুজার অধীনে শিরোপা জিতেছিল কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। পরের আসরে বাজে পারফরম্যান্সে গ্রুপ পর্বে বিদায় নেয় তারা। ২০১৭ সালে দারুণ শুরু করেও ফাইনাল খেলা হয়নি তাদের। তবে এবার আর কোনো ভুল নয়। নতুন অধিনায়ক ইমরুল কায়েসের অধীনে দ্বিতীয়বারের মতো চ্যাম্পিয়নের তকমা গায়ে মাখাল ভিক্টোরিয়ান্সরা।
অন্যদিকে বিপিএলে ছয় আসরের পাঁচটিতেই ফাইনালে উঠেছে ঢাকা। চারবারের তিনবার শিরোপা জিতেছে দলটি। ২০১৭ সালে শেষবার রংপুর রাইডার্সের কাছে শিরোপা হারায় ঢাকা ডায়নামাইটস। এবারও তীরে এসে তরী ডুবল গেলবারের ফাইনালিস্টদের। কুমিল্লার কাছে হেরে টানা দ্বিতীয়বার ফাইনাল থেকে খালি হাতে বিদায় নিল সাকিব আল হাসানের দল।
এদিন টসে জিতে কুমিল্লাকে ব্যাটিংয়ে পাঠান ঢাকার অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুতে এভিন লুইসকে হারালেও এনামুলকে নিয়ে দুর্দান্ত শুরু করেন তামিম ইকবাল। মাত্র ৩১ বলে তুলে নেন আসরে নিজের তৃতীয় হাফ-সেঞ্চুরি । ১২তম ওভারে সাকিবকে ফিরিয়ে ৮৯ রানের এই জুটি ভাঙেন সাকিব আল হাসান। যাওয়ার আগে দুই বাউন্ডারিতে ২৪ বলে ৩০ রান করেন এনামুল। পরের ওভারে ০ রানে আউট হন সামছুর রহমান।
দ্রুত দুই উইকেট হারালেও ভয়ংকর হয়ে উঠেন তামিম। ঢাকার বোলারতের পিটিয়ে মাত্র ৫০ বলেই বিপিএলের ইতিহাসে নিজের প্রথম সেঞ্চুরি তুলে নেন । এই পর্যন্ত বিপিএলের মোট ছয় আসরে ১৭টি সেঞ্চুরি হলেও এতোদিন সেঞ্চুরির দেখা পাননি তামিম। এদিন ৩১ বলে হাফসেঞ্চুরি করা তামিম পরের ৫০ করেন মাত্র ১৯ বলে। মোট ৫০ বলে সেঞ্চুরি করতে আটটি চার এবং সাতটি ছক্কা হাঁকান এই ওপেনার। ইনিংস শেষে ১৪১ রানে অপরাজিত ছিলেন তামিম। ৬১ বলে তার ইনিংসটি সাজানো ছিল ১১টি ছক্কা এবং ১০ টি বাউন্ডারি দিয়ে। তামিমের সঙ্গে ১৭ রানে অপরাজিত ছিলেন ইমরুল কায়েস। তামিমের ব্যাটে চড়ে ১৯৯ রান সংগ্রহ করে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স।
ঢাকা ডায়নামাইটসের হয়ে ৪ ওভারে ৪৫ রান দিয়ে একটি উইকেট নেন সাকিব আল হাসান। ৪ রান দিয়ে বাকি উইকেটটি নেন রুবেল হোসেন।
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের দেওয়া ২০০ রানের বিশাল লক্ষ্যে ব্যাট করতে প্রথম ওভারেই শূন্য রানে সুনীল নারাইনকে হারায় ঢাকা ডায়নামাইটস। চাপ সামলে দ্বিতীয় উইকেটে ওপেনার উপুল থারাঙ্গার সঙ্গে দারুণ শুরু করেন রনি তালুকদার। দুজন মিলে গড়েন ১০২ রানের পার্টনারশিপ। ২৭ বলে ৪৮ রান নিয়ে থিসারা পেরেরার বলে সাজঘরে ফিরেন থারাঙ্গা। তিন রানে অধিনায়ক সাকিবকে বিদায় করেন ওয়াহাব রিয়াজ। তবে দুর্দান্ত খেলা রনির ব্যাটে এগিয়ে যায় ঢাকা। তাকে রান আউট করে কুমিল্লাকে খেলায় ফেরান এনামুল হক। যাওয়ার আগে ৬ বাউন্ডারি এবং চার ছক্কায় মাত্র ৩৮ বলে ৬৮ রান করেন রনি তালুকদার। এরপর রাসেল-পোলার্ড ফিরলে আর বেশি দূর যেতে পারেনি ঢাকা। নির্ধারিত ২০ ওভারে ১৮২ রানে শেষ হয় ঢাকা ডায়নামাইটসের ইনিংস।
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের হয়ে ৪ ওভারে ২৮ রান দিয়ে ৩ উইকেট সংগ্রহ করেন ওয়াহাব রিয়াজ। ৩৫ রান দিয়ে থিসারা পেরার শিকার দুই উইকেট।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
ফল: ১৭ রানে জয়ী ঢাকা ডায়নামাইটস।
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স ইনিংস: ১৯৯/৩ (২০ ওভার)
(তামিম ইকবাল ১৪১*, এভিন লুইস ৬, এনামুল হক ২৪, শামসুর রহমান ০, ইমরুল কায়েস ১৭*: রাসেল ০/৩৭, রুবেল ১/৪৮, সাকিব ১/৪৫, নারিন ০/১৮, অনিক ০/১৯, শুভাগত ০/১৪, মাহমুদুল ০/১২)।
ঢাকা ডায়নামাইটস ইনিংস: ১৮২/৯ (২০ ওভার)
(থারাঙ্গা ৪৮, নারিন ০, রনি তালুকদার ৬৬, সাকিব ৩, পোলার্ড ১৩, রাসেল ৪, নুরুল হাসান সোহান ১৮, শুভাগত হোম ০, মাহমুদুল হাসান ১৫, রুবেল হোসেন ৫*, কাজী অনিক ১*; সাইফউদ্দিন ২/৩৮, মেহেদী হাসান ০/৩০, ওয়াহাব রিয়াজ ৩/২৮, সঞ্জিত সাহা ০/১০, শহীদ আফ্রিদি ০/৩৭, থিসারা পেরেরা ২/৩৫)।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: তামিম ইকবাল (কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স)।
প্লেয়ার অব দ্য টুর্নামেন্ট: সাকিব আল হাসান (ঢাকা ডায়নামাইটস)।