বাঁধের কাজের সময় বাকি ৩৮ দিন, এখনো ২২১ পিআইসির কাজ শুরু হয়নি

47

সুনামগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা :
সুনমগঞ্জের ১১টি উপজেলায় এবার ফসল রক্ষা বাঁধের কাজ করবে ৫৫৩টি প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি (পিআইসি)। যার মধ্যে সদর উপজেলায় ৯টি, বিশ্বম্ভরপুর উপজেলায় ১৬টি, ধর্মপাশায় ৭৪টি, জামালগঞ্জে ৫৩টি, তাহিরপুরে ৬৩টি, দক্ষিণ সুনামগঞ্জে ৪০টি, ছাতকে ৭টি, জগন্নাথপুরে ৫০টি, দোয়ারাবাজারে ২৩টি, দিরাইয়ে ১০১টি ও শাল্লা উপজেলায় ১১৪টি রয়েছে। রবিবার বিকেলে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে ফসল রক্ষা বাঁধ মিনিটরিং কমিটির সভায় ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণ কাজের এসব অবস্থা তুলে ধরেন জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকৌশলী আবু বক্কর সিদ্দিক ভূইয়া।
১৫ ডিসেম্বর থেকে শুরু করে ২৮ ফেব্র“য়ারির মধ্যে কাজ শেষ করার কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত ২২১ টি পিআইসি কাজ শুরুই করতে পারেনি ফলে হাওরের ফসল নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছে সুনামগঞ্জের কৃষকরা।
বাঁধ মেরামতে ঠিকাদারেদের গাফিলতির ফলে ২০১৭’তে সুনামগঞ্জের সবগুলো হাওরডুবি হয়। ২০১৭ সালের ২৩ ফেব্র“য়ারি জেলার ধর্মপাশা উপজেলার চন্দ্র সোনার তাল হাওরে পানি প্রবেশ করে। ফেব্র“য়ারি’র শুরুতেই বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছিল এবং ভরাট হয়ে যাওয়া ধনু নদী’র পানি শয়তানখালি’র বাঁধ না হওয়া অংশ দিয়ে ঢুকে চন্দ্র সোনারতাল হাওর তলিয়ে যায়।’২৯ মার্চ জগন্নাথপুর উপজেলার নলুয়ার হাওরের মাছুখালি ও ডুমাইখালি ক্লোজার দিয়ে পানি প্রবেশ করে বিশাল এই হাওরের ফসল ডুবেছিল। এরপর ওই বছর একে একে জেলার সব কয়টি বড় হাওরে পানি ঢুকে ডুবেছিল কাঁচা ধান।
হাওর রক্ষা বাাঁধের পিআইসি গঠনের তারিখ ছিলো নভেম্বর মাসে। নীতিমালা অনুযায়ী গণশুনানীর মাধ্যমে পিআইসি গঠনের কথা। কিন্তু এ নীতিমালা মানা হয়নি। নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি এবং ক্ষমতাসীন দলের নেতারে পছন্দে গঠিত হয়েছে পিআইসি। জেলার শাল্লা উপজেলায় পিআইসি গঠনে দুর্নীতি অনিয়মের অভিযোগ এনে জেলা প্রশাসক বরাবরে ৭ জন কৃষক অভিযোগ দাখিল করেছেন। তারা নীতিমালা অনুযায়ী পিআইসি গঠন করে বাঁধের কাজ শুরু করার দাবি জানান।
অবিলম্বে গণশুনানির মাধ্যমে পিআইসি গঠন করে দ্রুত বাঁধ নির্মাণের কাজ শুরু করা ও অপ্রয়োজনীয় বাঁধ নির্মাণের প্রক্রিয়া বন্ধ সহ তিন দফা দাবিতে মানববন্ধন করেছে হাওর বাঁচাও সুনামগঞ্জ বাঁচাও আন্দোলন। জেলার ১০টি উপজেলায় একযোগে এ মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়।
জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকৌশলী আবু বক্কর সিদ্দিক ভূইয়া বলেন, হাওরে পানি শুকাতে বিলম্ব হওয়া ও জাতীয় নির্বাচনের কারণে যথাসময়ে পিআইসি গঠন না হওয়ায় মোট পিআইসি’র ৩৩২টিতে কাজ শুরু হয়েছে। তবে কয়েকদিনের মধ্যে বাকিগুলোতে কাজ শুরু করা হবে। এবার ফসল রক্ষা বাঁধে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে প্রায় ৯৫ কোটি টাকা। আগামী ২৮ ফেব্র“য়ারির মধ্যে বাঁধ নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করা হবে। এছাড়াও বাঁধ নির্মাণ কাজ তদারকিতে কাজ করবে উপজেলা ও জেলা মনিটরিং কমিটি।