শিক্ষকতা পেশায় প্রশিক্ষণ

61

সরকারের নেওয়া বেশ কিছু পদক্ষেপের ফলে দেশের প্রাথমিক থেকে শুরু করে মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীর সংখ্যা বাড়ছে। বছরের প্রথম দিন বই উৎসবের পাশাপাশি উপবৃত্তির ব্যবস্থা থাকায় গ্রামাঞ্চলের অভিভাবকরা তাঁদের সন্তানদের স্কুলে পাঠাতে উৎসাহিত হচ্ছেন। প্রতিবছর পাসের হার বাড়ছে। পিইসি, জেএসসি, এসএসসিতে জিপিএ ৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীর সংখ্যা আমাদের আশাবাদী করছে। কিন্তু শিক্ষার প্রকৃত মান কি এর দ্বারা যাচাই করা সম্ভব? প্রত্যন্ত এলাকায়ও এখন মাধ্যমিক পর্যায়ের স্কুল প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। হয়তো এমন কোনো গ্রাম এখন আর খুঁজে পাওয়া যাবে না, যেখানে কোনো স্কুল নেই। সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি বেসরকারি উদ্যোগেও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে উঠছে। এসব স্কুলে শিক্ষার্থীর সংখ্যা বাড়ছে। কিন্তু শিক্ষার মান কি নিশ্চিত করতে পারছে এসব প্রতিষ্ঠান? কোনো কোনো প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে তো বাণিজ্যের অভিযোগও আছে। কালের কণ্ঠে প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, দেশের সরকারি ও এমপিওভুক্ত বেসরকারি স্কুল-কলেজ ও মাদরাসায় শিক্ষক সংখ্যা চার লাখ ৩১ হাজার ৩২২ জন। এর মধ্যে বিএড প্রশিক্ষণ নেই এক লাখ ৫৮ হাজার ৭২২ জন শিক্ষকের। প্রশিক্ষণবিহীন শিক্ষকের বেশির ভাগই মাদরাসার। কোনো পেশায়ই প্রশিক্ষণের কোনো বিকল্প নেই। প্রশিক্ষণের মধ্য দিয়েই একজন পেশাজীবী নিজেকে দক্ষ করে গড়ে তুলতে পারেন। প্রশিক্ষণ ছাড়া দক্ষতা অর্জন করা সম্ভব নয়, দক্ষতা না থাকলে সেই পেশায় কোনো অবদান রাখাও সম্ভব নয়। শিক্ষকতা পেশায় প্রশিক্ষণের কোনো বিকল্প তো থাকতেই পারে না। এ ব্যাপারে সরকারকে কঠোর নীতি অনুসরণ করতে হবে। শুধু শিক্ষাগত যোগ্যতা নয়, শিক্ষকতা পেশায় আসতে হলে অবশ্যই প্রশিক্ষণ নিতে হবে। পেশায় ঢোকার পর প্রশিক্ষণ বাধ্যতামূলক করতে হবে। তাতে শিক্ষাঙ্গনের এবং দেশের কল্যাণ।