কমলগঞ্জের কেওলার হাওরে বোরো চাষাবাদের জন্য পানি সংরক্ষণের উদ্যোগ

25

কমলগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা :
কমলগঞ্জ উপজেলার প্রতিবছর বিস্তীর্ণ এলাকায় বোরো আবাদ করা হয়। নিম্নাঞ্চল এলাকা থাকায় কৃষকরা মূলত বোরো চাষাবাদে নির্ভরশীল। লাঘাটা নদীর রূপশপুর এলাকায় ক্রসবাঁধ দিয়ে সেচ সুবিধা নিয়ে বোরো চাষাবাদ করা হতো। তবে এ বছর নদীতে ক্রসবাঁধ না দেয়ায় নিম্নাঞ্চলে লাঘাটা নদী ও কেওলার হাওরে প্রাকৃতিক পানির অভাব দেখা দেয়। এতে করে প্রায় ১৫০ হেক্টর এলাকার বোরো আবাদকৃত বিস্তীর্ণ এলাকা অনাবাদি থাকায় মৌলভীবাজার জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা সরেজমিন পরিদর্শনের পর পানি সংরক্ষণের উদ্যোগ নেন।
জানা যায়, উপজেলার পতনঊষার, মুন্সীবাজার ও শমশেরনগর ইউনিয়নের কিছু অংশ নিয়ে কেওলার হাওরসহ বিল ও বোরো চাষাবাদকৃত বিস্তীর্ণ এলাকা। দীর্ঘকাল ধরে এসব এলাকায় বোরো চাষাবাদ হয়ে আসছে। উপজেলা কৃষি অফিস এ বছর চার হাজার ১১৫ হেক্টর জমিতে বোরো চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। তবে বিগত বছরগুলো থেকে উপজেলায় এ বছর লক্ষ্যমাত্রা কিছুটা হ্রাস পেয়েছে। প্রাকৃতিক পানি ও সেচের অভাবজনিত কারণে অনেক কৃষকের বীজতলা পূর্ণতা পেলেও এখন পর্যন্ত জমি তৈরি করতে পারছেন না বলে অভিযোগ তাদের। বোরো আবাদকৃত এলাকার লাঘাটা নদীর সন্নিকটে কিছু জমিতে সেচ দিয়ে মুষ্টিমেয় ব্যক্তি জমি তৈরি করছেন। তবে হাওরের বিস্তীর্ণ বোরো জমি রয়েছে খাঁ খাঁ মরুভূমি। ধূপাটিলা গ্রামের কৃষক কাপ্তান মিয়া, শেরওয়ান আলী, আকতার মিয়া ও রূপষপুর গ্রামের মোজাহিদ মিয়া বলেন, অন্যান্য বছরের এ সময়ে অনেক জমি আবাদ হয়ে যেত। তবে লাঘাটা নদীতে ক্রস বাঁধ না দেয়ার কারণে এখন পর্যন্ত এখানকার জমি তৈরি করাও সম্ভব হয়নি। নদীতে বাঁধ দেয়ার কারণে নিচু জমিতে পানি প্রবেশ করতো। সেসব জমিতে সেচেরও প্রয়োজন হতো না। এছাড়া অন্যান্য জমিতে সেচ নিয়ে হাওরের অধিকাংশ জমিতে বোরো চাষাবাদ করা যেত।
অবশেষে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, মৌলভীবাজার এর উপ-পরিচালক মো. শাহজাহান ও অতিরিক্ত উপ-পরিচালক (পিপি) মো. শামসুদ্দীন আহমদ গত বুধবার সরেজমিন কেওলার হাওরের রুপশপুর এলাকা পরিদর্শন করেন। এ সময় স্থানীয় কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে অনাবাদি পতিত বোরো জমি চাষাবাদের জন্য সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে দ্রুত ক্রসবাঁধ দেওয়ার আশ্বাস প্রদান করেন। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর মৌলভীবাজার জেলার অতিরিক্ত উপ-পরিচালক (পিপি) মো. শামসুদ্দীন আহমদ সরেজমিন পরিদর্শনের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, আসলে কেওলার হাওরের রুপশপুর এলাকায় লাঘাটা নদীতে প্রতি বছর ক্রসবাঁধ দিয়ে পানি সুবিধা নিয়ে কৃষকরা বোরো আবাদ করেন। এ বছর নতুন কৃষি কর্মকর্তা আসায় এবং পানি সংরক্ষণ বিষয়ে তিনি অবগত না থাকায় বিলম্ব হয়েছে। কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে দ্রুত ক্রসবাঁধের মাধ্যমে পানি সংরক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ ব্যাপারে কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশেকুল হক বলেন, দু’-এক দিনের মধ্যেই কৃষকদের সুবিধার্থে পানি সংরক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
কমলগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রঘুনাথ সাহা বলেন, জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা সরেজমিন পরিদর্শনের পর পানি সংরক্ষণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।