বিশ্বনাথে আসামী ছিনতাই, পুলিশসহ আহত ৫০ ॥ এসল্ট মামলা ॥ গ্রেফতার ২

48

বিশ্বনাথ থেকে সংবাদদাতা :
বিশ^নাথে পুলিশের কাছ থেকে হাতকড়া ও পুলিশের জ্যাকেটসহ সুহেল আহমদ (৩০) নামের এক আসামিকে ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে। এ সময় নওধার গ্রামের মাদক ব্যবসায়ী সুহেলের অনুসারীদের হামলায় থানা পুলিশের এসআই সবুজ কুমার নাইডু ও কনস্টেবল সুমন মালাকার আহত হয়েছেন। গুরুতর আহত অবস্থায় তাদেরকে বিশ^নাথ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। অপরদিকে পুলিশের লাঠিচার্জে বাজারের ব্যবসায়ী ও পথচারীসহ প্রায় অর্ধশত লোকজন আহত হয়েছেন। তারাও স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নিয়েছেন। গত বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার বৈরাগী বাজারে আসামি ছিনতাইয়ের এ ঘটনাটি ঘটে। পরে রাতভর অভিযান শেষে সুহেলকে না পেলেও গতকাল শুক্রবার ভোররাতে সুহেলের অনুসারী দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এরা হলো বৈরাগী বাজারের পার্শ্ববর্তি রহমান নগর গ্রামের জমসিদ আলীর ছেলে কয়ছর আহমদ (৩০) ও তার ভাই জাকির আহমদকে (২৬) গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নওধার পূর্বপাড়া গ্রামে ছাবাল শাহ্ নামে একটি মাজার রয়েছে। যেখানে প্রতি বৃহস্পতিবার ওরসের নামে অসামাজিক কর্মকান্ড ও মাদক ব্যবসা চালানো হয়। স্থানীয়দের অভিযোগ থানা পুলিশকে বখরা দিয়ে এসব অসামাজিক কর্মকান্ড চালান একই গ্রামের করিম বক্সের ছেলে সুহেল আহমদ। বাবার মাজারে অসামাজিক কর্মকান্ড বন্ধ করতে ছাবাল শাহ্র কলেজে পড়–য়া মেয়ে তাছলিমা বেগম ৬ মাস আগে সুহেল ও আশিক নূরসহ কয়েকজনকে অভিযুক্ত করে আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন (বিশ্বনাথ থানায় সিআর নং ২১৩/১৮ তারিখ ৩/৭/ ২০১৮ইং। মামলাটি তদন্তের মাধ্যমে ব্যবস্থা নিতে বিশ্বনাথ থানা পুলিশকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। কিন্তু দীর্ঘ ৬মাস ধরে ওই সিআর মামলাটি তদন্তের নামে ফেলে রাখায় থানা পুলিশ আদালতে আর কোন প্রতিবেদনও দাখিল করেননি। যে কারণে তাছলিমাকে ঘর থেকে বের করে দিয়ে মালপত্র লুটে নেয় অভিযুক্তরা। এরপর ২০১৮ইং সালের ১৯ জুলাই একইভাবে আদালতের মামলায় অভিযুক্তদের আসামি করে বিশ্বনাথ থানায় আরেকটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন তাছলিমা। সেই লিখিত অভিযোগটি তদন্ত করতেও থানা পুলিশ ৫ মাস ২০ দিন অতিবাহিত করেন। অবশেষে ১০ জানুয়ারি গত বৃহস্পতিবার বিকেলে দীর্ঘ তদন্ত শেষে মামলা রজ্জু করা হয় (মামলা নং ৯)। মামলার প্রেক্ষিতে ওইদিন রাতে বৈরাগী বাজার থেকে এসআই সবুজ কুমার নাইডু সুহেলকে গ্রেফতার করলে সুহেলের ৪ ভাইসহ আরও ১৫/২০জন মাদকসেবী হাতকড়াসহ পুলিশের কাছ থেকে সুহেলকে ছিনিয়ে নেন। এ সময় তাদের হামলায় ২ পুলিশ সদস্য আহতসহ পুলিশের একটি জ্যাকেটও ছিনিয়ে নেওয়া হয়। এরপর পুলিশের লাঠিচার্জে পথচারী আব্দুল মান্নান (৫২), চানাচুর বিক্রেতা সেলিম মিয়া (৩৫), চায়ের দোকানদার আব্দুল হেকিম (৩৬) কওসর আহমদ (৩০) জাকির আহমদ (২৬) সুবিনয় মালাকার (৪৮), আব্দুল মনাফ (২৫), আব্দুল মতলিবসহ (৬০) আর প্রায় ৫০জন আহত হন। পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় সুহেলকে প্রধান আসামি করে থানায় একটি পুলিশ এসল্ট মামলা দায়ের করেছেন এসআই সবুজ কুমার নাইডু, (মামলা নং ১০)। মামলায় ১৫ জনের নাম উল্লেখসহ আরও ১৫জনকে অজ্ঞাত আসামি রাখা হয়েছে।
বৈরাগী বাজারে পুলিশ কাউকে লাঠিচার্জ করেনি জানিয়ে বিশ্বনাথ থানার ওসি শামসুদ্দোহা পিপিএম ও এসআই সবুজ কুমার নাইডু এ প্রতিবেদককে বলেন, হাতকড়া নেয়নি হামলা চালিয়ে গ্রেফতার হওয়া আসামি সুহেলকে ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে। এছাড়া পুলিশের জ্যাকেটটি পরিত্যক্ত স্থানে পাওয়া গেছে বলেও জানিয়েছেন তারা।