মৌলভীবাজার জেলার পর্যটন উন্নয়নে ৩৪ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদনের অপেক্ষায়

185

কমলগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা :
৩৪ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি প্রকল্প অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে মৌলভীবাজার বন বিভাগ। মৌলভীবাজার বন রেঞ্জের আওতাধীন মৌলভীবাজার জেলা ও হবিগঞ্জ জেলার তিনটি পার্ক ও উদ্যানে পুরাতন অবকাঠামোর সংস্কার কাজ, পথচারীদের স্বচ্ছন্দে চলাফেরার জন্য ঝুলন্ত সেতু নির্মাণ, লেক ও ছড়ার অবকাঠামো উন্নয়নসহ পর্যটকদের উপযোগী কাজের জন্য এই প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। প্রকল্পটি অনুমোদন পেলেই কাজ শুরু করা হবে বলে জানিয়েছে বনবিভাগ।
মৌলভীবাজার বনবিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ৮৮৭ একর সংরক্ষিত বনভূমি নিয়ে বর্ষিজুড়া হিল রিজার্ভ ফরেস্ট গঠিত। ইকো ট্যুরিজমের বিশাল সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে ২০০৬ সালের জুলাই মাসে এই বিশাল ফরেস্টকে ইকোপার্ক হিসেবে ঘোষণা করা হয়। পরবর্তীতে ২০০৬ সালের জুলাই মাস থেকে ২০১১ সালের জুন পর্যন্ত এই পার্কে কিছু উন্নয়ন কাজ করানো হয়। সে সময় ২ কক্ষ বিশিষ্ট ইকো কটেজ, ৪টি পিকনিক স্পট, ২টি অবজারভেশন টাওয়ার, ৪টি সিকিউরিটি পোস্ট, ৫টি পাবলিক টয়লেট, টিকেট কাউন্টার এবং ১টি ক্যান্টিনসহ কয়েকটি বেঞ্চ নির্মাণ করা হয়। কিন্তু দীর্ঘদিনে এগুলো সংস্কার না হওয়াতে আগাছায় স্থাপনাগুলো ভরে গেছে। বর্তমানে পর্যটকরা এখানে এসে বসা বা ঘোরাফেরার উপযুক্ত পরিবেশ নেই বললেই চলে। তাই এটি ভবিষ্যতে একটি আকর্ষণীয় পরিপূর্ণ মনোরম পর্যটন স্থানে পরিণত করার লক্ষ্যে নতুন অবকাঠামো নির্মাণের পাশাপাশি বিদ্যমান পুরাতন অবকাঠামোসমূহ মেরামত ও উন্নয়ন কাজ করার জন্য একটি প্রস্তাব বন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে বন বিভাগ।
এদিকে জেলার কমলগঞ্জ উপজেলায় অবস্থিত ১২৫০ হেক্টরের লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে নতুন ২টি ওয়াচ টাওয়ার নির্মাণ, উদ্যানের পাশের বাগমারা লেকের অবকাঠামো উন্নয়ন, লাউয়াছড়া উদ্যানের ভেতর দিয়ে বয়ে চলা রেললাইনের উপরে দিয়ে পর্যটকরা চলাচলের সুবিধার্থে ঝুলন্ত সেতু (কেনোপি) নির্মাণসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় উন্নয়ন কাজ করানো হবে।
এছাড়া হবিগঞ্জ জেলার ৬০০ হেক্টর এলাকা নিয়ে সাতছড়ি উদ্যানটি অবস্থিত। এই উদ্যানটি মৌলভীবাজার বন রেঞ্জের আওতাধীন তাই উদ্যানের ভেতর দিয়ে পর্যটকদের পায়ে হাঁটার পথ নির্মাণ, মিষ্টি পানির জন্য নতুন কয়েকটি পুকুর খনন, উদ্যানের ভেতর দিয়ে প্রবাহিত ছড়াগুলোর ভাঙন রোধ কাজ, ওয়াশরুম, লেকসহ সকল পুরাতন ও নতুন অবকাঠামো নির্মাণ করা হবে।
বনবিভাগের এই প্রকল্প হাতে নেয়ায় এলাকার আশেপাশের শিক্ষার্থী ও মানুষের মধ্যে আশার সঞ্চার হয়েছে। তারাও পুরাতন অবকাঠামো সংস্কার ও পর্যটকদের উপযোগী করে ইকো পার্কটিকে গড়ে তোলার দাবি জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ (সিলেট) এর বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আবু মোছা শামসুল মোহিত চৌধুরী জানান, প্রকল্পের এই অর্থ মৌলভীবাজারের বর্ষিজুড়া ইকো পার্ক ও লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান এবং হবিগঞ্জের সাতছড়িতে ব্যয় করার জন্য বন মন্ত্রণালয়ে একটি প্রস্তাবনাা পাঠানো হয়েছে। প্রস্তাবনার ভিত্তিতে ইতিমধ্যে
একটি টিম সরেজমিন এই তিনটি স্পট পরিদর্শন করে।