সন্ত্রাস চালাচ্ছে ঐক্যফ্রন্ট – শেখ হাসিনা

142
সুধাসদন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে নির্বাচনী জনসভায় বক্তব্য রাখছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

কাজিরবাজার ডেস্ক :
নির্বাচনী প্রচারণায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ওপর বিএনপিসহ জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতাকর্মীরা সন্ত্রাস চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এসব হামলায় পাঁচ কর্মী নিহত এবং চার শতাধিক নেতাকর্মী আহত হওয়ার দাবি করেছেন তিনি।
বুধবার বিকালে নিজের বাসভবন সুধাসদন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে কুষ্টিয়া, নওগাঁ ও চাঁদপুরের তিনটি নির্বাচনী জনসভায় ভাষণ দেন প্রধানমন্ত্রী।
ভিডিও কনফারেন্সে প্রধানমন্ত্রী কুষ্টিয়ার চারটি আসনে আওয়ামী লীগ ও মহাজোটের চারজন প্রার্থীকে পরিচয় করিয়ে দেন। এছাড়া নওগাঁর ছয়টি আসন এবং চাঁদপুরের পাঁচটি আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের পরিচয় করিয়ে দেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দেশের বিভিন্ন জেলায় আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর অত্যাচার করে যাচ্ছে। নির্বাচনী প্রচার মিছিলের ওপর হামলা হচ্ছে। আমাদের নির্বাচনী অফিস পুড়িয়েছে। আমাদের পাঁচজন কর্মী নিহত হয়েছে, কমপক্ষে চারশ নেতাকর্মী আহত হয়েছে। তারা যেখানেই সুযোগ পাচ্ছে সেখানেই হামলা করে যাচ্ছে। প্রায় ২৫ জেলায় তাদের এ হামলা অব্যাহত রয়েছে। ৫১টি জেলায় ৮৮টি সংসদীয় আসনে বিএনপি-জামায়াত জোটের সন্ত্রাসীরা হামলা ভাঙচুর চালিয়েছে, বোমা হামলা ও অগ্নিসংযোগ করেছে। তাদের যে চরিত্র সেটাই করে যাচ্ছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তারা জানে নির্বাচনে তারা বিজয়ী হতে পারবে না। কারণ সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, মানি লন্ডারিং এবং এতিমের অর্থ আত্মসাৎকারীদের মানুষ ভোট দেবে না। সেই কারণে তারা নিজেদের পেশীশক্তি দেখাতে চেষ্টা করছে। ২০০১ সালের মতো তারা আবারও সন্ত্রাসী কার্যক্রম করতে চায়।’
ড. কামাল হোসেনের সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ঐক্যফ্রন্টের নেতাদের আচার-আচরণে কেউ রেহাই পাচ্ছে না। এমনকি নির্বাচন কমিশনে গিয়ে মাস্তানি করে এসেছে। সেখানে গিয়ে আবার পুলিশ বাহিনীকে গালাগালি করে এসেছে। যে অকথ্য ভাষায় ঐক্যফ্রন্টের একজন নেতা, তিনি নাকি আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন আইনজীবী, কিন্তু তার মুখ থেকে এ ধরনের ভাষা কেউ আশা করে না। এটাই ওনার চরিত্র, তিনি কোর্টে বসে আমাদের অ্যাটর্নি জেনারেলকে জঘন্য ভাষায় গালি দিয়েছেন। এখন গোটা পুলিশ বাহিনীকে তিনি গালি দিয়েছেন। তার আগে খামোশ বলে সাংবাদিকদের দেখে নেয়ার হুমকি দিয়েছিলেন। এ ধরনের কর্মকা-ে বোঝা যায় যে, ঐক্যফ্রন্টের নেতাকর্মীরা কতটুকু সন্ত্রাসী কর্মকা-ে পারদর্শী। আমরা এর তীব্র নিন্দা করি।’
দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘নির্বাচন জনগণের ভোটের অধিকার প্রয়োগ করার সুযোগ, গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা রক্ষার সুযোগ। আপনারা যারা ভোটার সবাই নিজেদের ভোট দেবেন। ভোট দিয়ে আপনাদের মনমতো প্রার্থীকে জয়যুক্ত করবেন।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের কথা খুবই স্পষ্ট, আমরা ইশতেহার দিয়েছি। যে ইশতেহারে আগামীর বাংলাদেশ কেমন হবে, তার রূপরেখা দিয়েছি। আমাদের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত থাকবে। সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ এবং মাদকের হাত থেকে দেশকে রক্ষা করবো। সেই সঙ্গে দুর্নীতির বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে। তরুণ সমাজকে আমাদের ইশতেহার উৎসর্গ করেছি। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত দেশগড়ার জন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ভোটের মালিক জনগণ, দেশের মালিকও জনগণ। আমরা চাই শান্তিপূর্ণ পরিবেশে সুষ্ঠু নির্বাচন। জনগণ বেছে নেবে তারা কী ধরনের সরকার চায়, কাকে চায়।’