সিলেট বোর্ডে জেএসসিতে ফলাফল বিপর্যয়, কমেছে জিপিএ-৫

122
ব্লু-বার্ড স্কুল কলেজের কৃতিত্বপূর্ণ ফলাফল অর্জনকারী শিক্ষার্থীদের উল্লাস। ছবি- রেজা রুবেল

সিন্টু রঞ্জন চন্দ :
সিলেট শিক্ষা বোর্ডের অধীনে জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি-২০১৮) পরীক্ষায় ফলাফল গতকাল সোমবার প্রকাশিত হয়েছে। সিলেটে এ বছর পাসের হার শতকরা ৭৯ দশমিক ৮২ ভাগ। যা গত বছরের তুলায় এবার জেএসসি পরীক্ষায় ফলাফল বিপর্যয় ও জিপিএ-৫ কমেছে। তবে সিলেটে পাসের হার বেড়েছে পিএসসি ও ইবতেদায়িতে।
সোমবার দুপুর ১২টায় মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডের সম্মেলন কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মো. কবির আহমদ আনুষ্ঠানিকভাবে পরীক্ষার ফলাফল ঘোষণা করেন। এ সময় সহকারী পরিক্ষা নিয়ন্ত্রক হাবিবা বাসিত, কলেজ পরিদর্শক সৈয়দ মুয়াজ্জেম হোসেন, সহকার আতিকুর রহমান ও মঈনুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
জানা গেছে, এবারের জেএসসি পরীক্ষায় পাসের হার ৭৯.৮২% হলেও যা গতবারের থেকে ৯.৫৯ শতাংশ কম। গতবারে পাসের হার ছিলো ৮৯.৪১%। পাসের সূচকের মতো এবার কমেছে জিপিএ-৫ প্রাপ্তির সংখ্যাও। এবছর জিপিএ-৫ পেয়েছে মোট ১ হাজার ৬৯৮ শিক্ষার্থী। এদের মধ্যে ছেলে ৬শ’৩৫ ও মেয়ে ১ হাজার ৬৩ জন। যা গতবারের তুলনায় ৫৯২৩ টি কম। গতবার জিপিএ-৫ পায় ৭ হাজার ৬শ’২১ জন পরীক্ষার্থী। জিপিএ-৫ ছাড়াও সিলেট শিক্ষা বোর্ডের পাসকৃতদের মধ্যে ‘এ’ গ্রেডে পাস করেছে ১৪ হাজার ২১৩ জন, ‘এ মাইনাস’ গ্রেডে পাস করেছে ১৫ হাজার ৩৭৭ জন, ‘বি’ গ্রেডে পাস করেছে ২২ হাজার ৮৬৬ জন, ‘সি’ গ্রেডে ৫৩ হাজার ৩৭৯ এবং ‘ডি’ গ্রেডে পাস করেছে ১১ হাজার ৪৩৭ জন শিক্ষার্থী। এছাড়া কৃতকার্য হতে পারেনি ৩০ হাজার ৮৮ জন এবং ১ জনকে বহিষ্কার করা হয়েছিল। সিলেট বোর্ডের অধিনে মোট ১ লক্ষ ৪৯ হাজার ৯৪ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে পাস করেছে ১ লক্ষ ১৯ হাজার ৬ জন। এদের মধ্যে ছেলে ৫০ হাজার ৭শ’ ৩৩ ও মেয়ে শিক্ষার্থী ৬৮ হাজার ২শ’৭৩ জন। বোর্ডে ছেলেদের পাসের হার ৭৯.৪৭ ও মেয়েদের পাসের হার ৮০.০৮।
এবার পাসের হারের পাশাপাশি জিপিএ-৫ প্রাপ্তির সংখ্যাও কমে গেছে। আর সিলেটে পাসের হার কমে যাওয়ার কারণ হিসেবে প্রশ্নপত্র কঠিন হওয়াও একটি কারন চিহ্নিত করেছেন অনেকেই। এ ছাড়াও নিয়মিত ক্লাস করা, বিশেষ ক্লাসে অংশ নেয়াসহ বিভিন্ন ধরনের প্রস্তুতিমূলক পরীক্ষায় অংশ নিয়ে থাকে ছাত্রছাত্রীরা। কিন্তু সিলেটের বিভিন্ন বিদ্যালয় তা করতে পারেনি।
তবে শিক্ষাবিদরা বলছেন, ফলাফল বিপর্যয়ের অন্যতম কারন সৃজনশীল প্রশ্ন পদ্ধতি এবং শিক্ষার্থীদের গাইড লাইনের অভাব। যে কারণে শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা দিতে গিয়ে বিপাকে পড়েন। অমনোযোগী পরীক্ষার্থীরা ঠিকমত খাতায় লিখতেও পারেনি। যার প্রমাণ এবার জেএসসির ফলাফলে।
এবারের ফলাফলের বিপর্যয়ের কারন হিসেবে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মো. কবির আহমদ বলেন, এবারের পরীক্ষা পদ্ধতি বদল হওয়ায় পাসের হার কমেছে। পূর্বে ৪র্থ বিষয় থাকায় কিছু মার্ক ওখান থেকে যোগ হত। এবার ৪র্থ বিষয় ছিলনা। তাছাড়া শিক্ষার্থীরা ইংরেজি ও গণিতে কিছুটা খারাপ করেছে। গত বারের চেয়ে এবার সব সূচকেই সিলেটের শিক্ষার্থীরা খারাপ করেছে। তবে এ ফলাফল সন্তোষজনক।
পাসের হার বেড়েছে পিএসসি ও ইবতেদায়িতে: প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষার (পিএসসি) ও ইবতেদায়ি শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষার ফলাফল গতকাল সোমবার সকালে প্রকাশিত হয়েছে। সিলেটে জেলায় এবার ফলাফলের পাসের হার পিএসসিতে ৯৩.৬৮ এবং ইবতেদায়িতে ৯৫.৩৭। গতবার এই হার ছিল পিএসসিতে ৯১.৮৮ এবং ইএসসিতে ৯০.৪১। এ বছর সিলেট জেলায় পিএসসিতে অংশ নেয় মোট ৭১ হাজার ১৪৫ জন। এদের মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৫ হাজার ১৬৬ জন। সিলেট জেলায় পিএসসিতে অংশ নেয় মোট ৬ হাজার ৪৭৯ জন। এদের মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে ২৪০ জন।
এবারের ফলাফলের বিষয়ে সিলেট জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. ওবায়দুল্লাহ বলেন, এবার শিক্ষার্থীরা ভালো ফলাফল অর্জন করেছে। এবছর ফলাফল সন্তোষজনক।