স্বচ্ছ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রত্যাশা

55

একাদশ সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণের আর মাত্র চার দিন বাকি। এবার সব রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। ফলে দেশের রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহলের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়েরও তীক্ষ্ম দৃষ্টি রয়েছে বাংলাদেশের প্রতি। ওদিকে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণার উত্তাপ-উত্তেজনা মাঝেমধ্যেই সহিংসতায় রূপ নিচ্ছে। দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রার্থীদের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে গোলযোগের ঘটনা ঘটেছে। কয়েক স্থানে নির্বাচনী ক্যাম্পে আগুন দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশের উৎসবমুখর নির্বাচনী পরিবেশের সঙ্গে এসব ঘটনার কোনো মিল খুঁজে পাওয়া যায় না। নির্বাচন ঘিরে প্রার্থীদের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে বিপুল উৎসাহ সব সময় লক্ষ করা যায়। কিন্তু সাংঘর্ষিক পরিস্থিতি কখনো কাম্য নয়। এ ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলগুলোকেই মুখ্য ভূমিকা পালন করতে হবে। রাজনৈতিক দলগুলো সহিষ্ণুতার পরিচয় দিলে কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হবে না। মনে রাখা দরকার, নির্বাচনে যেকোনো একজন জয়ী হবেন। নির্বাচনের ফল মেনে নেওয়ার সংস্কৃতি আমাদের রাজনীতি থেকে উঠে যাওয়ায় সর্বত্রই অসহিষ্ণুতা বাড়ছে। এ অবস্থা থেকে উত্তরণের একমাত্র উপায় হচ্ছে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে পারস্পরিক বোঝাপড়া তৈরি করা। সহিংস আচরণ পরিহার করতে না পারলে ভবিষ্যতে পরিস্থিতি আরো খারাপের দিকে যাবে, এতে কোনো সন্দেহ নেই। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় সব সময় চেয়েছে দেশে একটি সুন্দর গণতান্ত্রিক পরিবেশ বজায় থাকুক। গণতান্ত্রিক উপায়ে যে নির্বাচনটি হতে যাচ্ছে তার মাধ্যমে জনগণের ভোটে নির্বাচিত প্রতিনিধিত্বশীল একটি সরকার বাংলাদেশের আগামী দিনের অগ্রযাত্রায় নেতৃত্ব দেবে। অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জনের যে স্বপ্ন বাংলাদেশ দেখতে শুরু করেছে, আগামী সরকারের হাত ধরে সেই অর্জনের দিকে আরো অগ্রসর হবে বাংলাদেশ। আর সে কারণেই একটি শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠান আবশ্যক। একটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনই আগামী দিনে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি আরো উজ্জ্বল করবে।
দেশের নাগরিকদের মুক্ত ও স্বাধীনভাবে ভোট দেওয়ার অধিকার আছে। এই নাগরিক অধিকারের প্রতি সবাইকে শ্রদ্ধাশীল থাকতে হবে। ভোটের আগে ও পরে দেশে কোনো ধরনের ভীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি যেন না হয় সেদিকে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। রাজনৈতিক দলগুলো দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিলে নির্বাচন কমিশন ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দায়িত্ব পালন সহজতর হয়। পরমতসহিষ্ণুতা ও রাজনৈতিক অধিকারের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকলে সবার অংশগ্রহণে নির্বাচন শান্তিপূর্ণ হবে এ ব্যাপারে কোনো দ্বিমত নেই। রাজনৈতিক দলগুলোর সদিচ্ছা থাকলেই নির্বাচনের পরিবেশ শান্তিপূর্ণ থাকবে। আর সুষ্ঠু ও সুন্দর পরিবেশে স্বচ্ছ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভব হবে। আমরা আশা করব, নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী সব রাজনৈতিক দল দায়িত্বশীলতার পরিচয় দেবে। স্বচ্ছ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে সাধ্যমতো সহযোগিতা করতে হবে। নতুন করে কোনো সহিংসতা নয়, সবার সংযমী মনোভাবে নির্বাচনী পরিবেশ আরো সুন্দর হোক।