৩০ তারিখ পর্যন্ত ঘর খালি, রাস্তা ভরাট —– আ স ম আবদুর রব

184

কাজিরবাজার ডেস্ক :
ভোটারদের একটি ভোট খালেদা জিয়ার মুক্তিকে ত্বরান্বিত করবে বলে মনে করেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নেতা ও জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আমার ডিকশনারিতে ভয় বলে কিছু নেই। সবেমাত্র ৪ দিন গেছে। এখনো দুই সপ্তাহ বাকি আছে। এরইমধ্যে বেসামাল হয়ে গেছেন। এত ভয়ের কারণ কী? ৩০ তারিখ পর্যন্ত ঘর খালি থাকবে, রাস্তা ভরাট হয়ে যাবে। ৪৬ বছর পর জাতিকে দ্বিধাবিভক্ত করেছেন। এখন শান্তির জন্য ভোট, জালিমের বিরুদ্ধে ভোট।
‘আপনার হাতে বুলেট, আমাদের হাতে ব্যালট’ মন্তব্য করে আ স ম আব্দুর রব জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, ৩০ ডিসেম্বর ভোট দেওয়ার পর কেন্দ্র ঘেরাও করবেন। স্লোগান দেবেন—আমার ভোট আমি দেবো, আমার ভোটের হিসাব নেবো। ওইদিন ভোটবিপ্লব হবে। রাত ৪টা থেকে লাইন লাগাবেন।
শনিবার (১৫ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ৮টায় ময়মনসিংহ নগরীতে পৌঁছে ময়মনসিংহ-৪ (সদর) আসনের বিএনপি নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী আবু ওয়াহাব আকন্দ ওয়াহিদের সমর্থনে নগরীর রেলওয়ে কৃষ্ণচূড়া চত্বরে আয়োজিত পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন রব।
পথসভায় জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম নেতা ও গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, বিএনপির ভাইস-চেয়ারম্যান সেলিমা রহমান, ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন বক্তব্য রাখেন।
বক্তব্যের আগে জেএসডি সভাপতি আ স ম আব্দুর রব অন্য নেতাদের সঙ্গে নিয়ে ময়মনসিংহ-৪ (সদর) আসনের বিএনপি মনোনীত প্রার্থী ওয়াহাব আকন্দ ওয়াহিদের হাতে ধানের শীষ তুলে দেন। এর আগে ত্রিশালে পথসভায় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী (ময়মনসিংহ-৭) ডা. মাহবুবুর রহমান লিটনের পক্ষে ভোট চান নেতারা।
পথসভায় গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ঐক্যফ্রন্ট ক্ষমতায় এলে যতগুলো মেগা প্রজেক্ট আছে সবগুলো বহাল থাকবে। কিন্তু খরচ হবে এক-চতুর্থাংশ। তারা যত টাকা চুরি করেছে সব টাকা আদায় করা হবে।
নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি দিয়ে ডা. জাফরুল্লাহ আরো বলেন, দেশে কোনো শিক্ষিত বেকার থাকবে না। আগামী ২ বছরে কমপক্ষে ৫ লাখ গ্র্যাজুয়েটের চাকরি হবে। নন গ্র্যাজুয়েট ২০ লাখের চাকরির ব্যবস্থা হবে। তিন মাসের মধ্যে কৃষক-শ্রমিকের ওষুধের দাম অর্ধেক হবে। চিকিৎসা খরচ অর্ধেক হবে।
বিএনপি’র ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমান বলেন, আর মাত্র ১৫ দিন। আগামী ৩০ ডিসেম্বর আমরা এই সরকারের দুঃশাসনের পতন ঘটাবো। সারা দেশের জনগণ শত প্রতিকূলতা ঠেলে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। কারণ, তারা জানে ধানের শীষ হলো মুক্তির পথ।
বিএনপির পেশাজীবী সংগঠন ড্যাবের মহাসচিব ও দলটির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, ময়মনসিংহ-৪ (সদর) আসনের প্রার্থী আবু ওয়াহাব আকন্দ ওয়াহিদ সংসদ সদস্য নির্বাচিত হলে জনগণের পাশে থাকবেন। এই প্রার্থীকে ভোট দিলে ব্যাংক লুট হবে না। ব্যাংকের ভল্টের সোনা তামা হবে না।
কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি কাদের সিদ্দিকী বলেন, খালেদা দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রী, শেখ হাসিনা সবচেয়ে অপ্রিয় নেত্রী। আপনাদের চিন্তা আছে ভোট নিয়ে নেবে। মানুষ এত ভোট দেবে, চোরেরা চুরি করেও নিতে পারবে না।
‘কত নেতা, পাতি নেতা, কত মন্ত্রী কিন্তু ৭১’র ১৬ ডিসেম্বর তাদের কোনো খবর ছিলো না’ উল্লেখ করে কাদের সিদ্দিকী বলেন, এইখানে (মযমনসিংহ) উত্তর দিকে তেলধারায় জিয়াউর রহমানের সঙ্গে আমার দেখা ও পরিচয় হয়েছিল। আমি খালেদা জিয়ার আগে থেকে জিয়াউর রহমানকে চিনি। আমরা বন্ধু ছিলাম। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে আমি ও জিয়াউর রহমান যুদ্ধ করেছি।
কাদের সিদ্দিকী আরো বলেন, আমি বীর উত্তম, জিয়াউর রহমানও বীর উত্তম। একটা বীর উত্তম নিহত হয়েছে, আরেকটা বীর উত্তম এখনো জীবিত আছে। একাত্তুরে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বাংলাদেশের স্বাধীনতা এনেছিলাম, ২০১৮ সালে ড. কামালের নেতৃত্বে জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা করবো।
ময়মনসিংহ মহানগর বিএনপির সভাপতি অধ্যাপক শফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক শেখ আমজাদ আলীর পরিচালনায় পথসভায় বক্তব্য রাখেন দলীয় প্রার্থী আবু ওয়াহাব আকন্দ ওয়াহিদ, সংরক্ষিত আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও মহিলা কেন্দ্রের নেত্রী বেগম নূরজাহান ইয়াসমিন বুলবুল, দক্ষিণের সাংগঠনিক সম্পাদক আলমগীর মাহমুদ আলম, কোষাধ্যক্ষ আব্দুর রব রতন আকন্দ, মহানগর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহাবুব আলম, কেন্দ্রীয় যুবদল নেতা এনামুল হক আকন্দ লিটন, দক্ষিণ জেলা যুবদলের সভাপতি রোকনোজ্জামান সরকার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।