দেশে তৈরি পোষাক

233

নির্বাচনের আগে দেশের তৈরি পোশাক খাত ক্রমেই অশান্ত হয়ে উঠছে। গাজীপুরে শ্রমিক-পুলিশ ধাওয়াধাওয়ি হয়েছে। বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা গাজীপুর মহানগরের সাইনবোর্ড এলাকায় মহাসড়ক অবরোধ করলে পুলিশ সেখানে যায়। আশুলিয়া শিল্পাঞ্চলের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে শ্রমিকরা বিক্ষোভ মিছিল করেছে। ভাঙচুর চালিয়েছে বিভিন্ন পোশাক কারখানায়। পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে বিজিএমইএ জরুরি সংবাদ সম্মেলন করেছে। তৈরি পোশাক শিল্পের শীর্ষ এই সংগঠনের সভাপতি সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে তৈরি পোশাক খাত অধ্যুষিত অঞ্চলগুলো অশান্ত করার পাঁয়তারা করছে একটি মহল। ন্যূনতম মজুরি বাস্তবায়ন সামনে রেখে তারা শ্রমিকদের উসকানি দিচ্ছে। তিনি যেকোনো মূল্যে উসকানিদাতাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসার অনুরোধও জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি। বিজিএমইএ সভাপতির অভিযোগ, গাজীপুর ও আশুলিয়া এলাকার প্রায় ৪০টির মতো কারখানা বন্ধ করে দিয়েছে শ্রমিকরা। তৈরি পোশাক শিল্পে এই শ্রমিক অসন্তোষের কারণ ন্যূনতম মজুরি। চলতি মাস থেকে ন্যূনতম মজুরি বাস্তবায়িত হওয়ার কথা। বিজিএমইএ সভাপতির ভাষ্য অনুযায়ী দেশের তৈরি পোশাক খাতে ২০১০ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত শ্রমিকদের ৩৮১ শতাংশ মজুরি বাড়ানো হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে বিজিএমইএর সভাপতি জানিয়েছেন, বর্তমান মজুরিও বাস্তবায়ন করা হবে।
দেশের অর্থনীতির অন্যতম চালিকাশক্তি তৈরি পোশাক খাত। এ খাতে দক্ষ-স্বল্পদক্ষ জনশক্তির কর্মসংস্থানের যেমন ব্যবস্থা হয়েছে, তেমনি দেশের বাইরে ব্র্যান্ড বাংলাদেশ ইমেজ সৃষ্টি হয়েছে। নতুন নতুন কারখানা গড়ে উঠেছে। দেশের অনেক কারখানার পরিবেশ আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেয়েছে। সেখানে শুধু মজুরিকে কেন্দ্র করে শ্রমিক অসন্তোষ দেখা দেওয়া বা এ ধরনের কাজে উসকানি দেওয়া দুঃখজনক। বিজিএমইএর সভাপতি এই শ্রমিক বিক্ষোভের নেপথ্যে ষড়যন্ত্র আছে বলে মনে করছেন। এসব বিষয় খতিয়ে দেখা এখন জরুরি হয়ে পড়েছে। কারণ সামনে একটি জাতীয় নির্বাচন হতে যাচ্ছে। এই নির্বাচনের আগে কোনো ধরনের সংঘাতময় পরিস্থিতি তৈরি হোক, তা কাম্য নয়। অন্যদিকে মজুরিতে যদি কোনো ধরনের বৈষম্য থেকে থাকে, সেদিকেও দৃষ্টি দেওয়া প্রয়োজন। মনে রাখা দরকার, শ্রমিকের ঘামে-শ্রমেই আজ বাংলাদেশের তৈরি পোশাক বিদেশের বাজারে ক্রেতাদের দৃষ্টি কেড়েছে। কাজেই এই শিল্পকে রক্ষা করতে হবে। আর সে কারণেই উত্তেজনা প্রশমনে ব্যবস্থা নিতে হবে। আমরা আশা করব, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে কার্যকর উদ্যোগ নেবে।