উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে নৌকায় ভোট চাই – প্রধানমন্ত্রী

81
গোপালগঞ্জে আওয়ামীলীগ আয়োজিত জনসভায় উপস্থিত জনগণের উদ্দেশ্যে হাত নেড়ে অভিনন্দন জানাচ্ছেন গোলাপগঞ্জ-৩ (কোটালীপাড়া-টুঙ্গীপাড়া) থেকে আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

কাজিরবাজার ডেস্ক :
মানুষের কল্যাণে ও দেশের উন্নয়ন অব্যাহত রাখতে আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দেশবাসীর কাছে নৌকা মার্কায় ভোট চাইলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেছেন, এই জনসভার মধ্য দিয়ে আগামী নির্বাচনে দেশবাসীর কাছে আবেদন জানাই, বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় এগিয়ে যাচ্ছে এই ধারা যেনো অব্যাহত থাকে। আমি আপনাদের কাছে নৌকা মার্কায় ভোট চাই। নৌকায় ভোট দিয়ে আরেকবার দেশসেবার সুযোগ করে দেবেন আপনারা।
বুধবার (১২ ডিসেম্বর) বিকেলে নিজ নির্বাচনী এলাকা কোটালীপাড়ার শেখ লূৎফর রহমান সরকারি ডিগ্রি কলেজ মাঠে আয়োজিত এক জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে শেখ হাসিনা এ আহ্বান জানান।
আসন্ন নির্বাচনে গোপালগঞ্জ-৩ (কোটালীপাড়া-টুঙ্গীপাড়া) আসনে ভোট করছেন শেখ হাসিনা। এ আসন থেকে বেশ কয়েকবার সংসদে প্রতিনিধিত্বও করেছেন তিনি।
বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা বলেন, আসন্ন নির্বাচনে যুদ্ধাপরাধীদের দোসর, অগ্নিসংযোগ ও সন্ত্রাস সৃষ্টিকারীদের প্রার্থী করেছে। নৌকায় ভোট দিয়ে তাদের উপযুক্ত জবাব দিতে হবে। নৌকাকে বিজয়ী করতে না পারলে তারা ক্ষমতায় গিয়ে দেশকে ধ্বংস করে দেবে। মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলবে। যাতে কেউ এমন ছিনিমিনি খেলতে না পারে সেজন্য আপনাদের কাছে নৌকা মার্কায় ভোট চাই।
‘দেশকে ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্র্যমুক্ত করতে চাই, নৌকা মার্কায় ভোট চাই। যাকে যেখানে প্রার্থী করেছি তাদের নৌকা মার্কায় ভোট দিতে আমি দেশবাসীর কাছে আহ্বান জানাচ্ছি। নৌকায় ভোট দিয়ে কেউ বঞ্চিত হয় না, উন্নত জীবন পায়।’
কোটালীপাড়া-টুঙ্গীপাড়ার মানুষের প্রতি উদ্দেশ্য করে শেখ হাসিনা বলেন, আমার আপনজন বলতে একটা ছোটবোন, আর আছেন আপনারা। জাতির পিতার কাছে আমার প্রতিজ্ঞা ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠা করা, দেশের মানুষকে অর্থনৈতিক মুক্তি দেওয়া। সেই জন্য কোটালীপাড়ার মাটি থেকে নির্বাচনী সভা শুরু করলাম।
তিনি বলেন, পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট আমার মা-বাবাসহ পরিবারের অনেক সদস্যকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। এমনকি তাদের বিচার যাতে না হয় সেজন্য ইনডেমনিটি অধ্যাদেশও জারি করা হয়। খুনিদের বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরি দেওয়া হয়।
‘১৯৮১ সালে দেশে ফিরে থানায় গিয়ে মামলা পর্যন্ত করতে পারিনি। ২১ বছর পর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসে, পরে ওই ইনডেমনিটি আদেশ বাতিল করে জাতির পিতার খুনিদের বিচার করা হয়। আমরা যুদ্ধাপরাধের বিচার করেছি।’
নিজ নির্বাচনী এলাকার মানুষের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, কৃতজ্ঞতা জানাই কোটালীপাড়া ও টুঙ্গীপাড়ার মানুষের প্রতি, স্বজনহারা হয়ে এদেশের মাটিতে যখন ফিরে আসি তখন তারাই আমায় আশ্রয় দেন। আপনাদের মাঝেই ফিরে পেয়েছিলাম আমার হারানো মা-বাবা ও ভাইয়ের স্নেহ-ভালোবাসা।
তিনি বলেন, আমাকেও বিভিন্ন সময় হত্যাচেষ্টা করা হয়েছে। এই কোটালীপাড়ায়-ও বোমা রেখে দেওয়া হয়েছিলো। একজন চা দোকানি জীবন বাজি রেখে আমার জীবন রক্ষা করে। আমি জানি তিনি আজও আছেন এখানে! বারবার মৃত্যুর মুখোমুখি হয়েছি। কিন্তু কখনও কোনো ষড়যন্ত্রকে ভয় করিনি।
‘কখনও পিছু হটিনি। আমার বাবার মতো লক্ষ্য একটাই বাংলার মানুষের জন্য কাজ করা। আমি চাই বাংলার ঘরে ঘরে স্বাধীনতার সুফল পৌঁছে দিতে। ২১ বছর যখন সুযোগ পেলাম, তখন থেকেই উন্নয়ন করতে শুরু করেছি দেশের। সরকার জনগণের সেবক। প্রত্যেকটা মানুষ অন্ন পাবে, বস্ত্র পাবে, তাদের কোনো অভাব থাকবে না-এটাই আমার স্বপ্ন।
স্থানীয় আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় সভাপতিত্ব করছেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য কাজী আকরাম উদ্দিন আহমেদ।
জনসভায় উপস্থিত ছিলেন- চিত্রনায়ক রিয়াজ ও ফেরদৌস। এ সময় আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম, কর্নেল (অব.) ফারুক খান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান প্রমুখ বক্তব্য দেন।
এই নির্বাচনী জনসভার মধ্য দিয়ে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরু করলেন আওয়ামী লীগের সভাপতি।
এর আগে সকালে ঢাকা থেকে সড়ক পথে টঙ্গীপাড়ায় যান বঙ্গবন্ধুকন্যা। সেখানে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা জানান এবং দোয়ায় অংশ নেন শেখ হাসিনা। ফেরার পথে বেশ কয়েকটি নির্বাচনী পথসভায়ও অংশ নেবেন তিনি।