মানব পাচারকারী চক্রের ২ সদস্য আটক

50

স্টাফ রিপোর্টার :
নগরীর জিন্দাবাজার থেকে মানব পাচারকারী চক্রের ২ সদস্যকে আটক করেছে র‌্যাব-৯’র সদস্যরা। গত বুধবার বিকেলে কানিজ প্লাজা মার্কেটের নিচতলায় তাজ ট্রাভেলস এন্ড ট্যুরস অফিস থেকে তাদের আটক করা হয়।
আটককৃতরা হচ্ছে- নগরীর দক্ষিণ সুরমা কদমতলী পানিপাড়ার মো: সাজিদুর রহমানের পুত্র মো: মিজানুর রহমান (২৭) ও গোলাপগঞ্জ থানার ফুলবাড়ী গ্রামের জলিল আহম্মেদের পুত্র মো: জয়নাল আবেদীন তোফায়েল (২৭)।
র‌্যাব জানায়, বুধবার বিকেল ৪ টার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন-৯, সিপিসি-১ (সিলেট ক্যাম্প) এর একটি আভিযানিক দল জিন্দাবাজার এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে কানিজ প্লাজা মার্কেটের নিচতলায় তাজ ট্রাভেলস এন্ড ট্যুরস অফিস থেকে মানব পাচারকারী চক্রের সদস্য মো: মিজানুর রহমান ও মো: জয়নাল আবেদীন তোফায়েলকে আটক করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে ৫৪ টি পাস পোর্ট, ১টি ল্যাপটপ, ১টি চার্জার, ২টি পেন ড্রাইভ, ১টি ডেস্কটপ, বাংলাদেশী মুদ্রা ৫ লাখ ৬৮ হাজার টাকা, বিভিন্ন দেশের মুদ্রা-৭১টি, ৯টি তুর্কি মুদ্রা, ১৯টি রেজিষ্টার খাতা, ৪টি চেক বই, বিভিন্ন ব্যাংকের ৫টি ১২ লক্ষ টাকার চেক, ৩টি বিদেশী সীম কার্ড, ৬টি মোবাইল, ৪টি সীম কার্ড, বিভিন্ন পাবলিক ও ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের সাথে অর্থ লেনদেনের হিসাব-নিকাশ মোট ১৩ পাতা উদ্ধার করা হয়েছে।
আটককৃতদেরকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, প্রথম পর্যায়ে পলাতক অভিযুক্ত আব্দুল গণি হাছান (৪৪), (তাজ ট্রাভেলস এন্ড ট্যুরস এর মালিক) বিভিন্ন মাধ্যম হতে ইউরোপে যেতে ইচ্ছুক এমন আগ্রহী ব্যক্তিদের সংগ্রহ পূর্বক তাদের পাসপোর্ট সংগ্রহ করে তা কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে পলাতক অভিযুক্ত এম শফিকুল ইসলাম (৩৪) এর নিকট প্রেরণ করে। পলাতক অভিযুক্ত এম শফিকুল ইসলাম (৩৪) উক্ত পাসপোর্ট ব্যবহার করে কৌশলে ইন্দোনেশিয়ান পাসপোর্ট তৈরী করে এবং পরবর্তীতে ভিসা প্রাপ্তির পর তাজ ট্রাভেলস এন্ড ট্যুরস এজেন্সী তালতলা রোডের সুরমা টাওয়ারের সোমা এন্টারপ্রাইজ এর মাধ্যমে টিকেটের ব্যবস্থা করে। টিকেট প্রাপ্তির পর তাজ ট্রাভেলস এন্ড ট্যুরেস অবৈধভাবে বিদেশ গামীদেরকে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন এয়ারপোর্টে ইমিগ্রেশন পুলিশসহ অন্যান্য সংস্থা কর্তৃক ঝামেলা এড়ানোর লক্ষে বিভিন্ন ধরণের কৌশল শিক্ষা দেয়।
ধৃত অভিযুক্তদ্বয়কে জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে আরো জানায় যে, ৩ মাসের ভ্রমণ ভিসা প্রাপ্তির পর অন্যান্য নথিপত্রসহ আলাদা আলাদা খামে ভরে বিদেশগামীদের ঢাকা থেকে সিঙ্গাপুরে পরবর্তীতে গ্রীস ও আজারবাইজানে প্রেরণ করে। মানব পাচারকারী দলের সদস্যরা বিদেশগামীদেরকে গ্রীসে প্রেরণের ক্ষেত্রে তুরস্ক ও আজারবাইজানকে ট্রানজিট পয়েন্ট হিসেবে ব্যবহার করে। ইন্দোনেশিয়ান পাসপোর্টে মাধ্যমে তুরস্ক ও আজারবাইজানে ভ্রমণ সহজ হওয়ায় মানবপাচারকারী চক্রের সদস্যরা অবৈধ ইন্দোনেশিয়ান পাসপোর্ট ব্যবহার করে। ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে তারা আরো স্বীকার করে যে, পাচারকৃত বাংলাদেশী বিদেশগামীরা তুরস্কে পৌঁছানোর পর দালাল চক্রের তুরস্কের এজেন্ট পলাতক অভিযুক্ত আঃ বাসেত (৪০) তুরস্কের এয়ারপোর্ট থেকে তাদের রিসিভ করে পূর্বে নির্ধারিত হোটেলে নিয়ে যায় এবং পাচারকৃত বাংলাদেশী বিদেশগামীরা আজারবাইজানে পৌঁছানোর পর দালাল চক্রের আজারবাইজানের এজেন্ট পলাতক অভিযুক্ত মিলন মিয়া (৩৩) আজারবাইজানের এয়ারপোর্ট থেকে তাদের রিসিভ করে পূর্বে নির্ধারিত হোটেলে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে সড়ক পথে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে অবৈধ ভাবে গ্রীসসহ ইউরোপিয় বিভিন্ন দেশে অবৈধ ভাবে প্রবেশ করে। এভাবে সংগবদ্ধ সিন্ডিকেটের মাধ্যমে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে অবৈধ মানব পাচার সংগঠিত করে থাকে। আটককৃত মানব পাচাকারীদেরকে কোতয়ালী থানায় হস্তান্তর করা করা হয়েছে।