প্রার্থীতা ফিরে পেতে ৮৪ জনের আপিল

221

কাজিরবাজার ডেস্ক :
রিটার্নিং কর্মকর্তা মনোনয়নপত্র বাতিল করে দিয়েছেন, এমন ৮৪ জন আগামী জাতীয় নির্বাচনে প্রার্থিতা ফিরে পেতে আপিল করেছেন নির্বাচন কমিশনে। আরও দুই দিন আপিলের সুযোগ রয়েছে।
রবিবার যাচাই বাছাইয়ে ৭৮৬ জনের প্রার্থিতা বাতিল হয় দণ্ড, খেলাপি ঋণ, সঠিকভাবে মনোনয়নপত্র পূরণ না করা, কাগজপত্রের ঘাটতি, স্থানীয় সরকারের পদ না ছেড়ে মনোনয়নপত্র জমা দেয়া, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের পদ ছাড়লেও পদত্যাগপত্র গৃহীত না হওয়াসহ নানা কারণে।
তবে একাধিক প্রার্থী বলেছেন, যেসব কারণে মনোনয়নপত্র বাতিলের কথা জানানো হয়েছে সেগুলো সত্য নয়। আর এ কারণেই তারা নির্বাচন কমিশনে ছুটে আসেন।
নির্বাচন কমিশনে আপিলে প্রার্থিতা ফিরে না পাওয়া গেলে সংক্ষুব্ধ ব্যক্তিদের হাইকোর্টে আবেদন করার সুযোগ রয়েছে। আর এরই মধ্যে এই ঘোষণা আগাম দিয়ে রেখেছেন কেউ কেউ।
সোমবার আপিলের প্রথম দিন যারা নির্বাচন কমিশনে আবেদন করেন, তাদের মধ্যে আছেন সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ আ স ম কিবরিয়ার ছেলে রেজা কিবরিয়া (গণফোরাম), বিএনপির সাবেক মন্ত্রী মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দীন, বিএনপিতে যোগ দেয়া আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম মাওলা রনি, স্বতন্ত্র প্রার্থী ইমরান এইচ সরকার।
মীর নাছির সাংবাদিকদের বলেন, ‘সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে আমার মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। সরকারের চাপে রিটার্নিং কর্মকর্তা বাতিল করতে বাধ্য হয়েছেন।’
পটুয়াখালী-৩ আসনের গোলাম মাওলা রনি বলেন, ‘সামান্য ভুলের কারণে বাতিল হয়েছে। এটা বাতিলের মতো ভুল ছিল না, যেখানে ইসি থেকে ছোট ভুলে জন্য বাতিল না হওয়ার নির্দেশনা দিয়েছে।’
বগুড়া-৪ আসনের হিরো আলম বলেন, ‘আশা করি নির্বাচন কমিশেনে ন্যায় বিচার পাব। অনথ্যায় আমি আদালতে যাব।’
‘রাজারা চায় না প্রজারা রাজা হোক। জিরো থেকে হিরো হয়েছি। ষড়যন্ত্র করে আমার মনোনয়ণপত্র বাতিল করা হয়েছে। শেষ পর্যন্ত লড়াই করে যাব’- জাতীয় পার্টির মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র হিসেবে দাঁড়ানো হিরো আলম খেদ প্রকাশ করেন সাংবাদিকদের কাছে।
আপিলকারিদের মধ্যে আরো রয়েছেন- ঢাকা-১ আসনের খন্দকার আবু আশফাক, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-১ আসেন নবাব মোহাম্মদ শামছুল হুদা, চাপাইনবাবগঞ্জ-২ মো. তৈয়ব আলী, বগুড়া-৭ আসনের মোরশেদ মিলটন, খাগড়াছড়ি থেকে আব্দুল ওয়াদুদ ভূঁইয়া, ঝিনাইদহ-১ আসনের আব্দুল ওয়াহাব, ঢাকা-২০ আসনের তমিজউদ্দিন, সাতক্ষীরা-২ আসনের আফসার আলী, কিশোরগঞ্জ-২ আসনের আখতারুজ্জামান রঞ্জন, মাদারীপুর-৩ আসনের আব্দুল খালেক, দিনাজপুর-২ আসনের মোকারম হোসেন, ঝিনাইদাহ-২ আসনের আব্দুল মজিদ, ঢাকা-১ আসনের খন্দকার আবু আশফাক, দিনাজপুর-৩ আসনের সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলম, জামালপুর-৪ আসনের ফরিদুল কবির তালুকদার, পটুয়াখালী-৩ আসনের মো. শাহাজাহান, পটুয়াখালী-১ আসনের সুমন সন্যামাত, দিনাজপুর-১ আসনের পারভেজ হোসেন, মাদারীপুর-১ আসনের জহিরুল ইসলাম মিন্টু, সিলেট-৩ আসনের কাইয়ুম চৌধুরী, ঠাকুরগাঁও-৩ আসনের এসএম খলিলুর রহমান, জয়পুরট-১ আসনের ফজলুর রহমান প্রমুখ।
আগামীকাল বুধবার পর্যন্ত আপিল করা যাবে নির্বাচন কমিশনে। আপিল স্মারকলিপি আকারে হবে এবং মনোনয়নপত্র গ্রহণ বা বাতিলের তারিখ, আপিলের কারণ সম্বলিত বিবৃতি এবং রিটার্নিং কর্মকর্তা কর্তৃক তর্কিত আদেশের একটি সত্যায়িত অনুলিপি সংযুক্ত করতে হবে।
৬ থেকে ৮ ডিসেম্বর শুনানি করে আপিল নিষ্পত্তি করবে ইসি। নির্বাচন কমিশনে শুনানিতে প্রার্থীর পক্ষে আইনজীবীরও বক্তব্য দেয়ার সুযোগ রয়েছে।
একজনের প্রার্থিতা বাতিলের আবেদন : আপিলকারীদের মধ্যে একজন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল করার জন্য স্মারকলিপি জমা দিয়েছেন। জামালপুর-২ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বৈধ হওয়া ফরিদুল হক খানের মনোনয়নপত্র গ্রহণের বৈধ আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করেছেন মুস্তাফিজুর রহমান নামে একজন।
আবেদনে বলা হয়, আওয়ামী লীগের প্রার্থী ফরিদুল হক খান তার আয়কর রিটার্ন দাখিল করেননি। স্ত্রীর আয়কর রিটার্ন দিয়ে হলফনামায় তথ্য দিয়েছেন।