সকল জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে সিলেট-৬ আসনে নৌকার মাঝি হলেন নাহিদ

130

সেলিম হাসান কাওছার গোলাপগঞ্জ থেকে :
আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অনেক জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে সিলেট-৬ আসনে নৌকার মাঝি হলেন আওয়ামী লীগের আ’লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শিক্ষামন্ত্রী নরুল ইসলাম নাহিদ। রবিবার সকালে মনোনয়ন সংক্রান্ত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাক্ষরিত এ সংক্রান্ত এক চিঠি পেয়েছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর এই সদস্য। সিলেট-৬ (বিয়ানীবাজার-গোলাপগঞ্জ) আসনে মোট ৩ লাখ ৭১ হাজার ৯০৩ ভোটার রয়েছে। এর মধ্যে ১ লাখ ৮৩ হাজার ৮৫৬ পুরুষ এবং নারী ভোটার রয়েছেন ১ লাখ ৮৮ হাজার ৪৭ জন। গোলাপগঞ্জ-বিয়ানীবাজার দুটি উপজেলা নিয়ে গঠিত সিলেট -৬ আসন। ১৯৭৩ সালে প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এই আসনে বিজয়ী হন আওয়ামী লীগ প্রার্থী এডভোকেট মরহুম আবদুর রহিম। ১৯৭৯ সালে ২য় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির মরহুম লুৎফর রহমান এ আসনে বিজয়ী হন। সেই থেকে প্রায় দেড় যুগ ধরে আসনটি বিএনপি, জাপা ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর দখলে ছিল। এরপর ১৯৯৬ সালে ৭ম সংসদ নির্বাচনে নরুল ইসলাম নাহিদের বিজয় লাভের মধ্য দিয়ে এই আসনটি আওয়ামী লীগ ফিরে পায়। এরপর নবম ও দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী হলেও আবার ২০০১ সালে হাতছাড়া করে আওয়ামী লীগের। ২০০৮ সালে ৯ম সংসদ নির্বাচনে চারদলীয় জোট প্রার্থী জামায়াত নেতা মাওলানা হাবিবুর রহমানকে হারিয়ে আসনটি পুনরুদ্ধার করেন নুরুল ইসলাম নাহিদ। এর পর টানা প্রায় ১০ বছরে এ আসনটি আওয়ামী লীগের বর্তমান প্রেসিডিয়াম সদস্য শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের দখলে। এবার এ আসনে নাহিদসহ আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পত্র কিনেছিলেন এক ডজন নেতা। প্রার্থী হতে দলীয় মনোনয়ন ক্রয় করেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও এ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ, কানাডা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি সরওয়ার হোসেন, সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট নাসির উদ্দিন, ফ্রান্স আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা চৌধুরী সালেহ আহমদ, লন্ডন ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক ও লন্ডন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আফছার খাঁন সাদেক, বাংলাদেশ যুব-মহিলা লীগের সহ-সভাপতি ও ঢাকা উত্তর সিটির প্যানেল মেয়র ডেইজী সরওয়ার, নিউ জাস্ট স্টেট আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ভিপি সফিক উদ্দিন, গোলাপগঞ্জ উপজেলা কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সদস্য ও বিয়ানীবাজার উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জাকির হোসেন, বিয়ানীবাজার উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান আবুল কাশেম পল¬ব, সিলেট জেলা যুবলীগের সাবেক সিনিয়র সদস্য এডভোকেট রুহুল আনাম মিন্টু, যুক্তরাজ্য স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার সামসুল ইসলাম বাচ্চু, গোলাপগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক জাকারিয়া আহমদ পাপলু, উপজেলা তাঁতীলীগের আহবায়ক হেলাল আহমদ চৌধুরী। কিন্তু কিছুদিন ধরে খবর রটে এখানে আওয়ামীলীগ থেকে মনোনয়ন পেতে পারেন বিকল্পধারার প্রার্থী প্রেসিডিয়াম সদস্য, সাবেক বিএনপি নেতা শমসের মুবিন চৌধুরী। এতে নড়েচড়ে বসেন আওয়ামীলীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা। তারা আওয়ামীলীগের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত এই আসনটি ধরে রাখতে আওয়ামীলীগ থেকে নরুল ইসলাম নাহিদকে পূনরায় দলীয় মনোনয়ন দেয়ার দাবী জানান। অবশেষে সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে নরুল ইসলাম নাহিদই এই আসনে নৌকার মাঝি হিসেবে দলীয় মনোনয়ন পেলেন।