প্রতিশোধের জয় বাংলাদেশের

48
Bangladeshi cricketers celebrate their win at the end of the third day of the first Test cricket on match between Bangladesh and West Indies at the Zahur Ahmed Chowdhury Stadium in Chittagong on November 24, 2018. (Photo by MUNIR UZ ZAMAN / AFP) (Photo credit should read MUNIR UZ ZAMAN/AFP/Getty Images)

স্পোর্টস ডেস্ক :
চলতি বছরের শুরুতে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে গিয়ে নাস্তানাবুদ হয়ে ফিরেছিল বাংলাদেশ। দুই ম্যাচের সিরিজে ক্যারিবীয়দের কাছে পাত্তাই পায়নি টাইগাররা। হেরে গিয়েছিল দুটিতেই। চার মাস পর ঘরের মাঠে সেই হারের প্রতিশোধ নিল সাকিব আল হাসানের দল।
শনিবার চট্টগ্রাম টেস্টে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ৬৪ রানে হারিয়েছে বাংলাদেশ। ঘরের মাঠে ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে এটি টাইগারদের প্রথম জয়।
আর সবমিলিয়ে তৃতীয় জয়। তাছাড়া ক্রিকেটের এই দীর্ঘ সংস্করণে বাংলাদেশের ১৩তম জয় এটি।
দুই ম্যাচ সিরিজের প্রথম টেস্টে বাংলাদেশের ছুঁড়ে দেয়া ২০৪ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে ১৩৯ রানে গুটিয়ে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। টাইগারদের পক্ষে ৬ উইকেট নিয়েছেন বাঁহাতি স্পিনার তাইজুল ইসলাম। সফরকারী দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৪৩ রান করেন সুনীল আমব্রিস।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের শুরুটা ছিল দুঃস্বপ্নের মতো। সাকিব-তাইজুলের ঘূর্ণিতে মাত্র ১১ রানের চার উইকেট হারায় সফরকারীরা।
ইনিংসের শুরুতেই জোড়া আঘাত আনেন বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিব। তৃতীয় ওভারের ৪ নম্বর ডেলিভারিতে কাইরন পাওয়েলকে (০) ফেরান তিনি। আর এই উইকেটের মাধ্যমে প্রথম বাংলাদেশি বোলার হিসেবে টেস্টে দুইশ উইকেট নেয়ার কীর্তি গড়েন বাঁহাতি এই স্পিনার। তাছাড়া ২০০ উইকেট এবং ৩০০০ রান নিয়ে অভিজাত ক্লাবের সবাইকে ছাড়িয়ে যান তিনি।
১৪ জনের এই ক্লাবে সবচেয়ে কম ম্যাচ(৫৪) ম্যাচ খেলে সবার উপরে জায়গা করে নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক।
পাওয়েলের পর শাই হোপকেও টিকতে দেননি সাকিব। দারুণ ডেলিভারিতে মাত্র ৩ রানে হোপকে সাজঘরে পাঠান তিনি। সাকিবরে পর দ্শ্যৃপটে তাউজুলের আগমণ। এক ওভারে পরপর দুই ব্যাটসম্যানকে ফেরান তিনি । নিজের প্রথম ওভারের প্রথম ডেলিভারিতেই ওপেনার ব্রাথওয়েট (৮) এবং পঞ্চম ডেলিভারিতে রোস্টন চেজকে (০) প্যাভিলিয়নের পথ দেখান তাইজুল।
৪ উইকেট হারানো ওয়েস্ট ইন্ডিজকে লাঞ্চের পর আরো চেপে ধরেন বাংলাদেশি স্পিনাররা। প্রথম ইনিংসে দুর্দান্ত খেলা শিমরন হেটমায়ারকে থামান মেহেদী হাসান মিরাজ। ফেরার আগে ১৯ বলে ৩ চার এবং ১ ছক্কায় ২৭ রান করেন এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান।
প্রতিরোধগড়া শেন ডওরিচকে (৫) নিজের তৃতীয় শিকার বানান তাইজুল। খানিক বাদে তুলে নেন দেবেন্দ্র বিশুকেও (২)। পরের ওভারে কেমার রোচকে এলবির ফাঁদে ফেলে পাঁচ উইকেট পূর্ণ করেন তাইজুল। এ নিয়ে টানা তিন টেস্টে অন্তত এক ইনিংসে পাঁচ উইকেট নেয়ার কৃতিত্ব দেখালেন বাঁহাতি স্পিনার।
এরপর নবম উইকেটে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন অ্যামব্রিস এবং ওয়ারিক্যান। দুজন মিলে গড়ে তুলেন ৬৩ রানের জুটি। বল হাতে এসে ওয়ারিক্যানকে ফিরিয়ে জুটি ভাঙেন মিরাজ। ওয়ারিক্যানের পর আর বেশিক্ষণ স্থায়ী হলো না ক্যারিবীয় ইনিংস। সুনীল অ্যামিব্রিসকে নিজের ষষ্ঠ শিকার বানিয়ে অতিথিদের ১৩৯ রানে থামান তাইজুল ইসলাম।
বাংলাদেশি বোলারদের মধ্যে ১১.২ ওভার বোলিং করে ৩৩ রান দিয়ে সর্বোচ্চ ৬টি উইকেট নেন তাইজুল ইসলাম। ৩০ রান দিয়ে ২ টি উইকেট নেন অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। ২৭ রানের খরচায় মিরাজের ঝুলিতে উঠে ২ উইকেট।
চট্টগ্রাম টেস্টের তৃতীয় দিন লাঞ্চের আগে শেষ বাংলাদেশের দ্বিতীয় ইনিংস। দেবেন্দ্র বিশুর দারুণ বোলিংয়ে ১২৫ রানেই অলআউট বাংলাদেশ। প্রথম ইনিংসের লিড সহ বাংলাদেশের সংগ্রহ দাঁড়ায় ২০৩ রান। বৃহস্পতিবার প্রথম ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে সব উইকেট হারিয়ে ৩১৫ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশে। এরপর প্রথম ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে ২৪৬ রানে অল আউট হয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। একই দিনে শেষ সেশনে ৭৮ রানের লিড নিয়ে দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করেছিল লাল-সবুজরা।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ৩২৪
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১ম ইনিংস: ২৪৬
বাংলাদেশ ২য় ইনিংস: ১৭ ওভারে ১২৫ (ইমরুল ২, সৌম্য ১১, মুমিনুল ১২, মিঠুন ১৭, সাকিব ১, মুশফিক ১১*, মিরাজ ১৮, মাহমুদউল্লাহ ৩১, নাঈম ৫, তাইজুল ১, মোস্তাফিজ ২; , ওয়ারিক্যান ১৬/২, চেজ ১৮/৩, বিশু ২৬/৪)
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২য় ইনিংস: ১৩৫ অলআউট (ব্র্যাথওয়েট ৮, কাইরন পাওয়েল ০,শাই হোপ ৩, আমব্রিস ৪৩, চেজ ০, হেটমায়ার ২৭, ডাওরিচ ৫, বিশু ২ , রোচ ১, ওয়ারিক্যান ৪১ , গ্যাব্রিয়েল ০*; মিরাজ ২৭/২, তাইজুল ৩৩/৬ , সাকিব ৩০/২ , নাঈম )