জামায়াত নেতা ফরিদ চৌধুরীকে সিলেট-৫ আসনে মনোনয়ন না দেওয়ার জন্য বিএনপি ও জমিয়ত একজোট

58

কানাইঘাট থেকে সংবাদদাতা :
সিলেট-৫ (কানাইঘাট-জকিগঞ্জ) আসন থেকে পুনরায় আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নেতা সাবেক সাংসদ অধ্যক্ষ মাওলানা ফরিদ উদ্দিন চৌধুরী কে ২৩ দলীয় জোটের মনোনয়ন না দেওয়ার জন্য জোটের প্রধান দল বিএনপি ও শরীকদল জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম ও খেলাফত মজলিসের মনোনয়ন প্রার্থীরা একজোট হয়েছেন। ফরিদ চৌধুরীকে জোটের মনোনয়ন দেওয়া হলে এ আসন থেকে ঐক্য ফ্রন্টের বিদ্রোহী প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেন তা নির্বাচনী মাঠে জোরে শোরে উচ্চারিত হচ্ছে। বিএনপি, জমিয়ত ও খেলাফত মজলিসের নেতৃবৃন্দ ও তৃণমূলের নেতাকর্মীরা জানিয়েছেন সিলেট-৫ আসনে জামায়াতে পূর্বের সেই যৌলুস ও সমর্থন আগের মতো নেই। নির্বাচনী মাঠে জামায়াত শিবিরের নেতাকর্মীরা নামতে পারছে না। বিগত সাড়ে ৯ বছরে জামায়াত শিবিরের শত শত নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক অসংখ্য মামলার কারনে জামায়াতের সাংগঠনিক কার্যক্রম ভেংগে পড়েছে। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরও জামায়াতের অনেক নেতাকর্মীকে পুলিশ গ্রেফতার করছে। এমতাবস্থায় ফরিদ চৌধুরীকে এ আসন থেকে জোটের মনোনয়ন দেওয়া হলে নির্বাচনী মাঠে তিনি সুবিধা করতে পারবেন না। তারপর সিলেট-৫ আসনে ক্বওমী মাদ্রাসা সমর্থক ও জামায়াত বিরোধী ইসলামী দলগুলো বড় ধরনের ভোট ব্যাংক রয়েছে। ফরিদ চৌধুরী কে জোটের মনোনয়ন দেওয়া হলে সেই ভোট থেকে তিনি বঞ্চিত হবেন। বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে সিলেট-৫ আসনে বিএনপি থেকে ৭ জন মনোনয়ন প্রত্যাশী বিএনপির নির্বাচনী বোর্ডে সাক্ষাতকার দিয়েছেন। মনোনয়ন প্রত্যাশী সবাই জামায়াতের বর্তমান অবস্থা বিবেচনা করে সিলেট-৫ আসনে বিজয়ী হওয়ার জন্য বিএনপি থেকে প্রার্থী দেওয়ার জন্য মনোনয়ন বোর্ডের কাছে লিখিত পত্র দিয়েছেন। প্রয়োজনে তারা এ আসন থেকে বিএনপি থেকে কাউকে মনোনয়ন না দেওয়া হলে ২০ দলীয় জোটের শরীক দল জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক হেফাজত নেতা মাওলানা ওবায়দুল্লাহ ফারুক কে জোটের মনোনয়ন দেওয়ার দাবী জানান। এদিকে জোটের শরীক দল জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম ও খেলাফত মজলিসের নেতাকর্মীরা জামায়াত নেতা ফরিদ চৌধুরী কে পুনরায় জোটের মনোনয়ন না দেওয়ার জন্য প্রতিদিন নির্বাচনী মাঠে সোচ্চার রয়েছেন। ইতি মধ্যে বিরোধী জোটের শীর্ষস্থানীয় নেতৃবৃন্দের কাছে এ আসনে জামায়াতের বর্তমান অবস্থান ও নানা দিক তোলে ধরে ফরিদ চৌধুরী কে পুনরায় মনোনয়ন দেওয়া হলে জোটে বিদ্রোহ ছড়িয়ে পড়বে। জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম দীর্ঘদিন থেকে এ আসনে তাদের কেন্দ্রীয় নেতা মাওলানা ওবায়দুল্লাহ ফারুক কে মনোনয়ন দেওয়ার জন্য জোর দাবী জানিয়ে আসছে। বর্তমানে কেন্দ্রে এ নিয়ে জোটের শীর্ষস্থানীয় নেতৃবৃন্দের সাথে সাথে জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ বার বার বৈঠক করছেন বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে। জমিয়তের নেতৃবৃন্দ বলেন, সিলেট ৫ আসনে জামায়াতের কোন ধরনের সাংগঠনিক কার্যক্রম দীর্ঘদিন ধরে নেই। এছাড়া জামায়াত বিরোধী ভোট ব্যাংক রয়েছে এই আসনে। জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম থেকে মাওলানা ওবায়দুল্লাহ ফারুক কে জোটের মনোনয়ন দেওয়া হলে মহাজোটের কবল থেকে এ আসনে বিজয় নিশ্চিত করা যাবে। তাদের দাবী ক্বওমী মাদ্রাসা সমর্থিত বড় ধরনের ভোট ব্যাংক এখানে রয়েছে, তারা সবাই জামায়াত বিরোধী। জামায়াতের প্রার্থী কে ঠেকাতে অন্য দলের প্রার্থীকে ক্বওমী পন্থি সমর্থকরা ভোট দিবেন। আর ওবায়দুল্লাহ ফারুক কে বিরোধী জোটের মনোনয়ন দেওয়া হলে আলিম উলামা ও ধর্মপ্রান মানুষের ভোটে তার বিজয় নিশ্চিত হবে। বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী দু’জনের সাথে কথা হলে তারা বলেন ফরিদ চৌধুরী কে জোটের মনোনয়ন দেওয়া হলে তারা মানবেন না এক্ষেত্রে বিএনপির নেতৃবৃন্দ ও তৃণমূলের নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধ। আমরা মনোনয়ন প্রত্যাশি সবাই বিএনপির নির্বাচনী বোর্ডের কাছে ধানের শীর্ষ থেকে যে কাউকে মনোনয়ন দেওয়া হবে তার বিজয় নিশ্চিত করার জন্য ঐক্যবদ্ধ ভাবে নির্বাচনী মাঠে কাজ করব। প্রয়োজনে মাওলানা ওবায়দুল্লাহ ফারুক কে মনোনয়ন দেওয়া হলে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশিরা মেনে নেবেন বলে জানিয়েছেন। পুনরায় ফরিদ চৌধুরীকে সিলেট-৫ আসনে বিরোধী জোটের মনোনয়ন দেওয়া হলে বিএনপির একজন মনোনয়ন প্রত্যাশী ও জমিয়ত নেতা মাওলানা ওবায়দুল্লাহ ফারুক বিদ্রোহী প্রার্থী হিসাবে নির্বাচনে প্রতিদন্ধিতা করবেন বলে বিএনপি ও জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের নেতৃবৃন্দ ও কর্মী সমর্থকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে।