নতুন চমক নিয়ে আসছে আওয়ামিলীগ

52

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের নির্বাচনী ইশতেহার চূড়ান্ত করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। খুব শিগগিরই আনুষ্ঠানিকভাবে এটি প্রকাশ করা হবে বলে জানা গেছে। এবারের ইশতেহারে বেশ কিছু ‘নতুন চমক’ আনতে যাচ্ছে টানা দশ বছর ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগ।
আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা গেছে, এরই মধ্যে নির্বাচনী ইশতেহার চূড়ান্ত করে দলীয় সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে পাঠানো হয়েছে। তার অনুমোদনের পর বর্ণাঢ্য আয়োজনের মাধ্যমে এটি প্রকাশ করা হবে।
জানা গেছে, মহাজোটের মনোনয়ন চূড়ান্ত করার পর আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহার প্রকাশ করা হবে। রাজধানীর যেকোনো একটি সম্মেলন কেন্দ্রে এটি প্রকাশ করবেন দলটির সভাপতি শেখ হাসিনা। এবারের নতুন চমকগুলো এখনো গোপন রাখা হয়েছে, যা ইশতেহার ঘোষণার দিন তিনিই প্রথম উচ্চারণ করবেন।
এর আগে ২০০৮ সালের নবম সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহার ছিল ‘দিন বদলের সনদ’। তাতে ভিশন-২০২১ পরিকল্পনা ঘোষণা করা হয়েছিল। ২০১৪ সালে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ‘শান্তি গণতন্ত্র উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ’ নামে ইশতেহার প্রকাশ করে দলটি। এতে ভিশন-২০৪১ ঘোষণা করা হয়। এবার টানা তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় থাকতে ‘শতাব্দীর ইশতেহার’ ঘোষণা করতে যাচ্ছেন শেখ হাসিনা। এটিকে ‘ডেল্টা প্ল্যান’ও বলা যেতে পারে।
ইশতেহার তৈরির কাজে দায়িত্বপ্রাপ্ত একাধিক নেতা জানান, এবার বেশি গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে গ্রাম উন্নয়নে। এ জন্য গ্রাম নিয়ে গুচ্ছ পরিকল্পনা ও তা বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি যুক্ত হচ্ছে নতুন করে। বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগেই বলে দিয়েছেন। তিনি বলেছিলেন, ‘গ্রাম হবে শহর। প্রতিটি গ্রামে শহরের মতো নাগরিক সুবিধা পৌঁছে দেয়া হবে।’
এবারের ইশতেহারে গত ১০ বছর আওয়ামী লীগ সরকার পরিচালনা করায় কোন কোন খাতে কী পরিমাণ উন্নয়ন হয়েছে, সেই চিত্র তুলে ধরা হবে। পাশাপাশি নতুন করে যুক্ত করা হবে দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনা।
এছাড়া তথ্যপ্রযুক্তি, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ মোকাবিলা, নারীর ক্ষমতায়ন, স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা, শিক্ষা, কর্মসংস্থান, দারিদ্র্য বিমোচন, ব্যাংকিং ইত্যাদি খাতে নতুন পরিকল্পনা তুলে ধরা হচ্ছে।
আওয়ামী লীগের ইশতেহার তৈরি হচ্ছে দলটির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ড. আবদুর রাজ্জাকের নেতৃত্বে। এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য রাজ্জাক বলেন, ‘ইশতেহার তেরির কাজ প্রায় শেষ। এখন এটি দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনার কাছে পাঠানো হবে। তিনি অনুমোদন করলেই প্রকাশের দিনক্ষণ জানানো হবে।’
আবদুর রাজ্জাক জানান, ইশতেহারে সরকারের উন্নয়ন চিত্র তুলে ধরার পাশাপাশি নতুন কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যুক্ত হচ্ছে। দেশের উন্নয়নের গতি আরো ত্বরান্বিত করতে তা ভূমিকা রাখবে বলে আমরা মনে করি। এর মধ্যে দারিদ্র্য বিমোচন ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির ওপরও জোর দেয়া হয়েছে।
দলটির তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক আফজাল হোসেন বলেন, ‘দলীয় প্রধান শেখ হাসিনার পরামর্শ অনুযায়ী আমার ইশতেহার তৈরির কাজ প্রায় চূড়ান্ত হয়েছে। দেশকে এগিয়ে নিতে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা ঘোষণা করা হচ্ছে এবার। এতে জঙ্গিবাদ, মৌলবাদ, সন্ত্রাস, সাম্প্রদায়িকতা, দুর্নীতি ও সুশাসনের বিষয়টিও গুরুত্ব পাচ্ছে। থাকছে ২১০০ সালের ‘ডেলটা প্লান’।