শাবিতে গাঁজাসহ আটক ৫ জনকে কোর্টে প্রেরণ

54
শাবি ক্যাম্পাস থেকে আটক মাদক ব্যবসায়ী ও উদ্ধারকৃত গাঁজা (ইনসেটে)।

শাবি থেকে সংবাদদাতা :
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয়ে গাঁজাসহ পাঁচ বহিরাগতকে আটক করেছে বিশ^বিদ্যালয় প্রশাসন। পরে তাদেরকে অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য জালালাবাদ থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিশ^বিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক জহীর উদ্দিন আহমদ। তবে অন্য একটি সূত্রে জানা গেছে, বহিরাগত পাঁচ জন ছাড়াও ছয় শাবি শিক্ষার্থীকে গাঁজা কেনা-বেচায় সংশ্লিষ্টতা পেয়েছে প্রশাসন। তবে তাদেরকে শুধুমাত্র সতর্ক করে ছেড়ে দেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। শনিবার তাদেরকে কোর্টে প্রেরণ করা হয়েছে।
প্রক্টর অধ্যাপক জহীর উদ্দিন আহমদ জানান, শুক্রবার রাতে নগরীর টিলারগাও এলাকার গাঁজা যোগানদাতা সোয়াব আলীকে আটক করে প্রক্টরিয়াল বডি। তিনি বিশ^বিদ্যালয় সহ বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষের কাছে কৌশলে গাঁজা বিক্রি করছিলেন। তিনি এই চক্রের মূল হোতা। নগরীর টিলারগাও এর বড়গুল এলাকার তিতাসা মাজারে তিনি গাঁজা বিক্রি করে থাকেন। তার কাছ থেকে মোট ৩২ পুরিয়া গাঁজা পাওয়া যায়। যা একেকটি গড়ে ২৫ গ্রামের মতো। এছাড়া পরে সূত্র ধরে যুগিপাড়া এলাকার মিলন মিয়া, শাবি ক্যা¤পাসের টং দোকানের কর্মচারী মইনুল মিয়া, এইচএসসি পরীক্ষার্থী অর্ঘ্য সরকার, নাজিরগাও এলাকার সালেহ আহমেদ ও পল্লাল আহমেদকে আটক করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এর মধ্যে অর্ঘ্য আহমেদ, পল্লাল সরকার, সালেহ আহমেদকে সন্দেহভাজন হিসেবে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে মামলারও প্রস্তুতি চলছে বলে জানান প্রক্টর অধ্যাপক জহীর উদ্দিন আহমদ। অন্যদিকে আরেকটি সূত্র জানিয়েছে, সোয়াব আলীর কাছ থেকে গাঁজা কিনতে আসেন বেশ কজন শাবি শিক্ষার্থী। পরে এদেরকে কৌশলে প্রক্টরিয়াল বডি আটক করে। এরা অনেকেই ক্যা¤পাসের বেশ পরিচিত মুখ। তবে জানা যায়, শিক্ষার্থীদের বেশ কজনের সেমিস্টার ফাইনাল চলমান থাকায় মুচলেকা দিয়ে ছেড়ে দেয় বিশ^বিদ্যালয় প্রশাসন।
সূত্র জানায়, এরা হলেন বিশ^বিদ্যালয়ের স্থাপত্য বিভাগের শিক্ষার্থী মুরশিদুল মুকারাব্বিন ওরফে ওরিয়ন, পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী সাজিদ মোস্তফা, একই বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী এ এম আবু সাবিত, ইন্ডাস্ট্রিয়াল এন্ড প্রোডাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী রেজা সোয়েব, শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী ওমর ফারুক, বিএমবি বিভাগের আহমদুর রহমান, ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড টি টেকনোলজি বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী ফাহাদ বিন আহমেদ, শেষ বর্ষের
শিক্ষার্থী আশিক আরাফাত, পেট্রোলিয়াম এন্ড মাইনিং ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের খালিদ আল রাফি ও দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী রাকিবুল ইসলাম। সূত্র জানায়, এদের অনেকের ফাইনাল পরীক্ষা থাকায় মুচলেকা দিয়ে ছাড়া পায় প্রক্টরিয়াল বডির কাছ থেকে।
প্রক্টর অধ্যাপক জহীর উদ্দিন আহমদ জানান, আমরা অনেক দিন ধরেই সোয়াব আলীকে খুঁজছিলাম। আজকে পেয়ে গেছি। বিশ^বিদ্যালয় সহ আশেপাশের বিস্তৃত একটা এলাকায় মাদকদ্রব্য সরবারহ করতো সে। এছাড়া তার সহযোগী আরো কয়েকজনকে প্রশাসনের তৎপরতায় আটক করে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে।
সার্বিক বিষয়ে শাবি ভিসি অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, মাদক মানুষের চিন্তাশক্তিকে বিনষ্ট করে। বিশ^বিদ্যালয়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণে সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছে প্রশাসন। এজন্য সংশ্লিষ্ট সব প্রশাসনকে সহযোগীতার হাত বাড়িয়ে দেয়ার আহ্বান জানান তিনি।
ওসি শাহ মো. হারুনুর রশীদ জানান, আটককৃতদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে এবং শনিবার তাদেরকে কোর্টে চালান করে দেওয়া হয়েছে।
আর আটককৃত একজন এইচএসসির শিক্ষার্থীর সাথে মাদক সংশ্লিষ্টতা না থাকায় তাকে ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ।