স্থিতিশীল গণতান্ত্রিক পরিবেশ চাই

81

দেশের মানুষের মনোযোগ ছিল গণভবনের সংলাপ অনুষ্ঠানের দিকে। এদিন সরকারের সঙ্গে সংলাপে বসে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় ধারণা করা যেতে পারে, প্রথমবারের মতো দ্বিতীয় দফার বৈঠকেও কোনো সমঝোতায় পৌঁছতে ব্যর্থ হয়েছে উভয় পক্ষ। এর প্রধান কারণ হতে পারে দুই পক্ষের অনড় অবস্থান। তবে সংলাপ থেকে কিছুই যে অর্জিত হয়নি তা নয়। রাজনৈতিক অঙ্গনের প্রধান দুই পক্ষ একটি সমাধানসূত্র খুঁজে বের করার প্রয়াসে মুখোমুখি বসেছে, এটাও কম পাওয়া নয়। হতে পারে, দাবি নিয়ে কোনো পক্ষই কোনো ছাড় দিতে চায়নি। তার মানে এই নয় যে আলোচনার সব পথ রুদ্ধ হয়ে গেল। উভয় পক্ষ নতুন করে বসার ব্যাপারে আলোচনা করতে পারে। একবার বরফ যখন গলেছে, তখন সম্পর্ক উষ্ণ হতে খুব বেশি সময় নেবে বলে মনে হয় না। আমরা একটি গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিশ্চিত করতে চাই। সবচেয়ে বড় চাওয়া একটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন। ২০১৪ সালের নির্বাচনে সব দল অংশগ্রহণ করেনি। এবার যাতে তেমন কিছু না ঘটে, সে জন্যই তো সংলাপ। দীর্ঘদিন ধরেই প্রধান দুই প্রতিপক্ষের মুখ দেখাদেখি বন্ধ ছিল। সেই অবস্থা থেকে উভয় পক্ষের মুখোমুখি বসা এটা একেবারে কম প্রাপ্তি নয়। আগের দিনের সংলাপে প্রধানমন্ত্রী মিথ্যা মামলার তালিকা চেয়েছিলেন। বৈঠকে আংশিক একটি তালিকা দিয়েছে বিএনপি।
সংলাপ কতটা সফল, সে কথা বলার সময় এখনো আসেনি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সংলাপের দ্বিতীয় দফায় কোনো সমাধান পাওয়া যায়নি বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা মাহমুদুর রহমান মান্না। গণভবন থেকে বেরিয়ে আসার সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আলোচনা মনঃপূত হয়নি। সংলাপে কোনো সমাধান আসেনি।’ অন্যদিকে আওয়ামী লীগ নেতা তোফায়েল আহমেদ সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘সংলাপ এখানে শেষ। শিডিউল ঘোষণার পর তাঁরা যদি আবার বসতে চান, আপত্তি নেই।’ অর্থাৎ তেমন কার্যকর কোনো সমাধান খুঁজে পাওয়া না গেলেও সময় ফুরিয়ে যায়নি। সব সুযোগ হাতছাড়া হয়ে যায়নি। এখনো অনেক সময় হাতে আছে। দেশের গণতন্ত্রের স্বার্থে উভয় পক্ষকে নিয়েই নতুন করে আবার বসার ব্যবস্থা করা যেতেই পারে। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহলও মনে করে, সংলাপেই সমাধান খুঁজে পাওয়া যাবে। যেমনটি প্রথমবারের সংলাপের পরও বলা হয়েছিল, সে অবস্থা এখনো বিরাজমান। কাজেই সমাধান খুঁজে বের করতে বারবার বসতে অসুবিধা আছে বলে মনে হয় না। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহল মনে করে, উভয় পক্ষকেই যথেষ্ট ধৈর্য ও সহনশীলতার পরিচয় দিতে হবে। কোনো অবস্থাতেই স্থিতিশীল গণতান্ত্রিক পরিবেশ নষ্ট হতে দেওয়া যাবে না। নির্বাচন সামনে রেখে যেকোনো রাজনৈতিক কর্মসূচি ঘোষণার সময়ও এ বিষয়টি মনে রাখা দরকার বলে আমরা মনে করি।