নিরপেক্ষ নির্বাচন হোক

84

বাংলাদেশের রাজনীতি এখন একটা টার্ণিং পয়েন্টে এসে দাঁড়িয়েছে। প্রতিদিনই কিছু না কিছু এমন ঘটনা ঘটছে যা জাতি আগে কখনো দেখেনি। জাতীয় নির্বাচন নিয়ে সরকার প্রধানের বিরোধী দলসমূহের সাথে বসা। বিরোধী দল বিশেষ করে বিএনপিকে সভা সমাবেশ করতে দেয়া। প্রথমে বলা হয়েছিল ৭ দফার এক দফাও মানা হবে না, কিন্তু এখন বলা হচ্ছে কিছু মানা হয়ে গেছে এবং অন্তত ৩টি দফা নিয়ে আলোচনা হতেই পারে। এমনকি খালেদা জিয়াকে প্যারোলে মুক্তি দেয়ার ব্যাপারে চিন্তা ভাবনা হচ্ছে। এসবই অভূতপূর্ব। বাংলাদেশের ৪৭ বছরের জীবনে এমন ঘটনা আগে ঘটেনি। এখন ঘটছে কারণ এটা বদলে যাওয়া বাংলাদেশ। এক নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন এখন আর সুদূর পরাহত নয়। সময় আসছে আমরা যেমন মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে গর্ব করি, তেমনি আমাদের রাজনীতি নিয়েও গর্ব করব।
১৯৯১ সালে সামরিক শাসন থেকে গণতন্ত্রে উত্তোরণের পর বাংলাদেশ একটা অ™ভূত ধরনের গণতন্ত্র চালু হয়েছিল। জাতীয় সংসদে বিরোধী দলকে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করা। গণতান্ত্রিক রীতিনীতি পরিহার করে স্বৈরতান্ত্রিক পদ্ধতিতে দেশ পরিচালনার চেষ্টা করা। দেশের প্রধান দুই নেত্রী আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ হাসিনা ও বিএনপি প্রধান খালেদা জিয়ার মধ্যে সীমাহীন দূরত্ব এমন কি কেউ কাউকে দেখতেও চাইতেন না। শুধু মাত্র বছরে একদিন সেনা দিবসে দুই নেত্রীর দেখা সাক্ষাৎ হত, তাও এক সময় বন্ধ হয়ে যায়। রাজনীতিতে সামান্য শিষ্টাচারেরও অবশেষ ছিল না। সেই জায়গা থেকে দেশ হঠাৎ করেই একটা বিরাট ইতিবাচক রাজনীতির ধারায় ফিরে এসেছে। আর সেটা হচ্ছে, আমাদের ত্যাগী, পেশাদার রাজনীতিকদের হাত ধরেই। যদি বর্ষিয়ান নেতা, সংবিধান প্রনেতা ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে ঐক্যফ্রন্ট গঠিত না হত তাহলে এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হত কিনা সন্দেহ।
কি হচ্ছে, কি হতে যাচ্ছে তা এখনই নিশ্চিত করে বলা যায় না। তবে ইতিমধ্যে যেটুকু হয়ে গেল তা অভূতপূর্ব। বর্তমান সরকার দেশে বিদ্যুৎ এবং অবকাঠামোসহ অনেক উন্নয়ন করাতে এখন অনেকটা আত্মবিশ্বাসী যে জনগণ তাদের ভোট দেবে, আর সেজন্যেই তারা ইতিবাচক রাজনীতি ফিরিয়ে আনার জন্য আলোচনার বসতে রাজী হয়েছে। এখন পর্যন্ত সবকিছু ঠিক আছে। একটা সুষ্ঠু নিরপেক্ষ সর্বজন গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে এক নতুন বাংলাদেশের দিকে এগিয়ে যাবে জাতি, এখন এটাই প্রত্যাশা।