ঐক্যফ্রন্টের জনসভা আজ, আসছে কর্মসূচি

29

কাজিরবাজার ডেস্ক :
বিএনপিসহ সরকারবিরোধী দলগুলোর জোট জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের জনসভা থেকে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করবে। আজ মঙ্গলবার এই জনসভা হবে। তবে কী ধরনের কর্মসূচি আসতে পারে সে ব্যাপারে কিছু জানাননি ঐক্যফ্রন্টের নেতারা।
সোমবার রাতে মতিঝিলে মওদুদ আহমদের অফিসে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটির বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয়। বৈঠকে শেষে এ ব্যাপারে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন জোটের মুখপাত্র ও বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
ফখরুল বলেন, ‘আমাদের আজকের মিটিং ভালো হয়েছে, এই মিটিংয়ের ফলাফল আগামীকাল জানিয়ে দেয়া হবে। আগামীকাল আমাদের ঐক্যফ্রন্টের জনসভা থেকে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।’
ঘণ্টাতিনেক ধরে চলা বৈঠক থেকে বেরিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী ঐক্যফ্রন্টে যোগদান করায় ধন্যবাদ জানানো হয় বৈঠকে। তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে জোটে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।’
ফখরুল জানান, স্টিয়ারিং কমিটির বৈঠকে বিএনপি নেতা তরিকুল ইসলামের মৃত্যুতে শোক প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে। পাশাপাশি জোটের অন্যতম নেতা মইনুল হোসেনের ওপর রংপুরের আদালতে আক্রমণের ঘটনায় নিন্দা জানানো হয়। জড়িতদের গ্রেফতারসহ আইনি প্রক্রিয়ায় মইনুল হোসেনের মুক্তি দাবি করা হয়।
জোটের মুখপাত্র জানান, বুধবার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে যে সংলাপ হবে সেখানে তাদের কারা কারা যাবেন এর তালিকা মঙ্গলবার চূড়ান্ত করা হবে।
প্রথম দফা সংলাপে প্রধানমন্ত্রীর মৌখিক আশ্বাসের পরেও দেশজুড়ে গণগ্রেফতার চলছে দাবি করে মির্জা ফখরুল বলেন, এসব থেকে বিরত থাকার আহ্বান করছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট।
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের জনসভা ও পরদিন গণভবনে আওয়ামী লীগের সঙ্গে সংলাপ নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা হয় বৈঠকে। জনসভা সফল করতে পরিকল্পনা ও দায়িত্ব বণ্টন করা হয়। দ্বিতীয় দফা সংলাপে নিজেদের সাত দফাকে গুরুত্ব না দিয়ে সংবিধান ও আইনসম্মত বিষয়গুলোর তাৎপর্য নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানা গেছে বৈঠক সূত্রে।
স্টিয়ারিং কমিটির বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মওদুদ আহমদ, ঐক্যফ্রন্টের নেতা আ স ম আবদুর রব, মাহমুদুর রহমান মান্না, সুলতান মোহাম্মদ মনসুর, মোস্তফা মহসিন মন্টু, এডভোকেট সুব্রত চৌধুরী প্রমুখ।
এদিকে সংলাপ শেষ না হওয়া পর্যন্ত তফসিল ঘোষণা না করার দাবি জানিয়েছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। আ স ম রবের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল সোমবার (৫ নভেম্বর) প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে দেখা করে এ দাবি জানায়।
ঐক্যফ্রন্ট প্রতিনিধি দলের প্রধান আ স ম রব নির্বাচন কমিশনে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের বলেন, কমিশনের সঙ্গে সুন্দর পরিবেশে কথা হয়েছে। তারা কিছু বিষয়ে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, দুই-একটা বিষয়ে দিতে পারেননি।
তিনি বলেন, সংলাপ হচ্ছে। সংলাপের ফল না জেনে আমরা তফসিল না দিতে বলেছি কমিশনকে। বলেছি, ২৮ জানুয়ারি পর্যন্ত নির্বাচন করার সময় আছে। অতীতে অনেকবার এভাবে তফসিল পেছানোও হয়েছে। জাতির স্বার্থে তফসিল পেছানো কোনও ব্যাপার নয়।
আ স ম রব বলেন, ‘আমরা কমিশনকে বলেছি, আপনাদের অংশীজন হচ্ছে রাজনৈতিক দল। তাদের সম্মতি ছাড়া তফসিল ঘোষণা করলে প্রশ্নের সম্মুখীন হবেন।’
তিনি বলেন, কমিশন পোলিং এজেন্টদের নিরাপত্তা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের প্রশ্নে আ স ম রব বলেন, আমরা ইভিএম চাই না। ভোটাররা চায় না। রাজনৈতিক দলগুলো চায় না। আপনারা (কমিশন) এ ব্যাপারে সিরিয়াস হবেন না। তবে কমিশন এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেয়নি।
তিনি বলেন, আমরা সেনাবাহিনীকে ম্যাজিস্ট্রেসি পাওয়ার দেওয়ার দাবি জানিয়েছি। সিইসি বলেছেন, সেনাবাহিনী থাকবে না আমরা কখনও বলিনি। অতীতে নির্বাচনে সেনাবাহিনী ছিল। তবে ম্যাজিস্ট্রেসি পাওয়ার দেওয়ার ক্ষমতা নেই। তাদের সঙ্গে ম্যাজিস্ট্রেট থাকবেন। কিন্তু আমরা বলেছি, সেনাবাহিনীকে গ্রেফতারের ক্ষমতা দিতে হবে।’
তফসিল পেছানোর বিষয়ে কমিশন বিবেচনা করবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে আ স ম রব বলেন, ‘কমিশন বিষয়টি বিবেচনা করবে।’