জয়ের উৎসব বাংলাদেশের

70

স্পোর্টস ডেস্ক :
তৃতীয় চেষ্টায় প্রথম জয়। সিলেটের মাটিতে প্রথম জয়। লোকাল হিরো বিপলুর ক্যারিয়ারের প্রথম আন্তর্জাতিক গোলে মধুর জয় … এই তিনের সমন্বয় ছিল সোমবার, সিলেট জেলা স্টেডিয়ামে। বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ আন্তর্জাতিক ফুটবল টুর্নামেন্টের সেমিফাইনালে ওঠার পথে একধাপ এগিয়ে গেল স্বাগতিক বাংলাদেশ দল। এদিন তারা উদ্বোধনী দিনে ‘বি’ গ্র“পের ম্যাচে ১-০ গোলে হারায় লাওসকে। জয়ের নায়ক ছিলেন ফরোয়ার্ড বিপলু আহমেদ। যিনি আবার সিলেটেরই ছেলে। গোল করার পরই তিনি গ্যালারির একদিকে ছুটে যান। সেখান হাজির কিছু দর্শকের গায়ে টি-শার্টে লেখা ছিল তার নামটি। সেদিকে তিনি চুমু ছুড়ে এবং হাত নাড়িয়ে দর্শক অভিবাদনের জবাব দেন। ম্যাচের সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কারটি পান তিনিই।
ম্যাচ শেষে ১৫ নম্বর জার্সিধারী বিপলুর প্রতিক্রিয়া ছিল, ‘এই মাঠে খেলেই আমি বড় হয়েছি। এটা আমার চেনা মাঠ। আর এই মাঠেই আমার গোলে আজ বাংলাদেশ জেতায় যে কত খুশি হয়েছি, তা ভাষায় প্রকাশ করতে পারব না।’
বিপলুকে গোলে যিনি সহায়তা করেছেন, সেই আরেক ফরোয়ার্ড নাবিব নেওয়াজ জীবন বলেন, ‘ম্যাচে আমিও গোল করতে পারতাম। কিন্তু তাড়াহুড়া করেছি। ফলে গোল মিস করেছি। আশা করি এই ভুল শুধরে আগামী ম্যাচে ভাল খেলব ও গোল পাব। মাঝখানে জাতীয় দলে খেলিনি। ফেরার পর প্রচুর অনুশীলন করেছি। কোচ সুযোগ করে দিয়েছেন খেলার। তাকে ধন্যবাদ।
বাংলাদেশ দলের ব্রিটিশ কোচ জেমি ডে বলেন, ‘আজ ফর্মেশন বদলে ৪-৪-২ ফর্মেশনে খেলেছি। একটু পরিবর্তন ছিল। এই ম্যাচে জিতলেও ছেলেরা কিছু ভুল করেছে। এগুলো নিয়ে কাজ করব। আশা করি পরের ম্যাচে আমরা আরও ভাল করব।’
বাংলাদেশ ম্যাচ শুরু করেছিল আক্রমণাত্মক ছকে। শুরু থেকে লাওসের ওপর চড়াও হয়েই খেলতে থাকে স্বাগতিক দলের খেলোয়াড়রা। মাঝমাঠে প্রাধান্য রেখে লাওসের অর্ধে বারবারই বল ছেড়েছিল দুই উইং থেকে। কিন্তু বাংলাদেশের ফুটবলে পুরনো রোগ ফিনিশিংয়ের দুর্বলতায় ম্যাচ এগিয়ে যাচ্ছিল গোলশূন্যের দিকে। তবে স্বাগতিক ফুটবলাররা শেষ পর্যন্ত হতাশ করেননি। প্রত্যাশিত জয়ে নিয়ে উল্লাস ছড়িয়ে দেয় সিলেট জেলা স্টেডিয়ামে। যে উল্লাসের ঢেউ সিলেট থেকে ছড়িয়ে যায় দেশের প্রতিটি কোনায়।
বাংলাদেশের দ্বিতীয় ম্যাচ ৫ অক্টোবর খেলবে ফিলিপিন্সের বিপক্ষে। তার আগে বুধবার মুখোমুখি হবে লাওস ও ফিলিপিন্স। ওই ম্যাচে ফিলিপিন্স জিতলে বাংলাদেশ উঠে যাবে শেষ চারে। লাওস জিতলে শেষ ম্যাচে বাংলাদেশের প্রয়োজন হবে ড্র। আর লাওস ড্র করলেও সেমিতে যাবে স্বাগতিক দল।
সোমবারের ম্যাচে বল নিয়ন্ত্রণে (৪৮%-৫২%) এবং আক্রমণ রচনায় পিছিয়ে ছিল বাংলাদেশ। কিন্তু আসল যে কাজটি, সেটিই ঠিকঠাক করে বাজিমাত করে তারা। তৃতীয়বারের চেষ্টায় অবশেষে লাওস-বধে সফল হয়েছে বাংলাদেশ। এর আগে ফিফা ফ্রেন্ডলি ম্যাচে বাংলাদেশ হারে ২-১ গোলে, ২০০৩ সালে। দ্বিতীয় ম্যাচে বাংলাদেশ ড্র করে ২-২ গোলে, এ বছরের মার্চে।
এখন দেখার বিষয়, সেমিতে যাওয়ার স্বপ্ন পূরণ করতে পারে কি না লাল-সবুজরা।