সরকারী কর্মকর্তাদের সাথে মতবিনিময়কালে অর্থমন্ত্রী ॥ বিদ্যুৎ নিয়ে গ্রাহকরা অভিযোগ করলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের চাকুরী থাকাই উচিত না

52

স্টাফ রিপোর্টার :
সুষ্ঠু, অবাধ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের জন্য বর্তমানে দেশে যে ব্যবস্থা আছে, এর চেয়ে উত্তম ব্যবস্থা করা সম্ভবপর নয় বলে মন্তব্য করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। তিনি বলেছেন, বিএনপি আগামী নির্বাচনে না এলে দল হিসেবেই তাদের অস্তিত্ব থাকবে না। আর এনিয়ে আওয়ামী লীগও চিন্তিত নয়।
গতকাল সোমবার দুপুরে সিলেটের জেলা প্রশাসনের সম্মেলন কক্ষে জেলার সকল সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তাদের সাথে আয়োজিত মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন।
এর আগে মত বিনিময় সভায় অর্থমন্ত্রী সিলেট অঞ্চলে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের তাগিদ দিয়ে বলেন, সরকার বিদ্যুতের সরবরাহের জন্য নিরলস কাজ করে যাচ্ছে। সিলেটে চাহিদা মতো বিদ্যুৎ সরবরাহও করা হচ্ছে। তাই বিদ্যুৎ সম্পর্কিত গ্রাহকেরা কোন অভিযোগ করলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের চাকুরী থাকাই উচিত না।
সভায় অর্থমন্ত্রী ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন- সাংসদ মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী, জাতিসংঘে বাংলাদেশের সাবেক স্থায়ী প্রতিনিধি একে মোমেন, সিলেটের জেলা প্রশাসক নূমেরী জামান, মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার গোলাম কিবরিয়া, সিলেটের পুলিশ সুপার মো. মনিরুজ্জামান, সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরী, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আশফাক আহমদ প্রমুখ।
এদিকে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, প্রবীণরা সমাজের সম্মানিত ব্যক্তিত্ব। তাদেরকে সম্মান জানানোর মাধ্যমে নিজেদেরকেই সম্মানিত করা হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও প্রবীণ ব্যক্তিবর্গের প্রতি অত্যন্ত সহানুভূতিশীল এবং আন্তরিক। প্রবীণ ব্যক্তিদের চিন্তা-চেতনা এবং অভিজ্ঞতাকে কাজে আমাদেরকে এগিয়ে যেতে হবে। সমাজের প্রত্যেক স্তরে প্রবীণ ব্যক্তিবর্গের সম্মানকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য কাজ করতে হবে।
বিশ্ব প্রবীণ দিবস-২০১৮’ উদযাপন উপলক্ষে বর্ণাঢ্য র‌্যালির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
গতকাল সোমবার (১ অক্টোবর) সকালে সমগ্র বিশ্বের ন্যায় সিলেটেও বর্ণাঢ্য এবং উৎসবমুখর পরিবেশের মধ্য দিয়ে জেলা প্রশাসন এবং প্রবীণ হিতৈষী সংঘ ও জরা বিজ্ঞান প্রতিষ্ঠান, সিলেট-এর উদ্যোগে র‌্যালি পরবর্তী সিলেট জেলা পরিষদ মিলনায়তনে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে বর্ণাঢ্য র‌্যালিটি জেলা প্রশাসকের কার্যালয় হয়ে নগরীর বন্দরবাজারস্থ কোর্ট পয়েন্টসহ শহরের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট প্রদক্ষিণ করে আলোচনা সভায় মিলিত হয়। র‌্যালিতে ড. কে এম আবদুল মোমেন, ড. আহমদ আল কবির, সিলেটের জেলা প্রশাসক নুমেরী জামান, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আশফাক আহমদসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তারা অংশগ্রহণ করেন।
‘মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায়-প্রবীণদের স্মরণ পরম শ্রদ্ধায়’ প্রতিবাদ্যকে ধারণ করে সংঘের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা এডভোকেট মুজিবুর রহমান চৌধুরীর সভাপতিত্বে আয়োজিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে সিলেটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) আবু সাফায়েত মোহাম্মদ শাহেদুল ইসলাম বলেন, প্রবীণ ব্যক্তিদেরকে সম্মান জানালে নিজেরাও সম্মানিত হওয়া যায়। জীবনে মানুষের প্রতি যা আচরণ করা হয়, তা-ই কোনো না কোনোভাবে ফিরে আসে। সমাজে তাঁেদর অধিকারকে প্রতিষ্ঠার জন্য আমাদেরকে কাজ করতে হবে। আজকের এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রবীণদেরকে সম্মান জানানোর অনুভূতি অন্যরকম।
সিলেট এক্সপ্রেসের স্টাফ রিপোর্টার তাসলিমা খানম বীথির সঞ্চালনায় সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন প্রবীণ সাংবাদিক-কলামিস্ট, সংঘের সহ সভাপতি আফতাব চৌধুরী, বিভাগীয় সমাজসেবা অধিদপ্তর, সিলেট-এর উপপরিচালক মো. আব্দুর রফিক, সিলেট জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উম্মে সালিক রুমাইয়া, সংঘের সাবেক সভাপতি এডভোকেট আব্দুল মান্নান চৌধুরী।
সংঘের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক দেওয়ান মসুদ রাজা চৌধুরীর স্বাগত বক্তব্যের মাধ্যমে শুরু হওয়া সভায় শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন কলামিস্ট বেলাল আহমদ চৌধুরী, সংঘের সদস্য আনোয়ার উদ্দিন বুরহানাবাদী, প্রবীণ হিতৈষী সংঘ ও জরা বিজ্ঞান প্রতিষ্ঠানের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য আলহাজ্ব আতাউর রহমান খান সামছু। সভার শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন সংঘের কোষাধ্যক্ষ মোস্তফা কামাল। সভাতে শ্রেষ্ঠ বক্তব্যের জন্য প্রবীণদের মধ্য থেকে কলামিস্ট বেলাল আহমদ চৌধুরীকে প্রথম, আনোয়ার উদ্দিন বুরহানাবাদীকে দ্বিতীয় এবং আতাউর রহমান খান সামছুকে তৃতীয় পুরস্কার প্রদান করা হয়। এছাড়া স্ত্রীসেবার জন্য কলামিস্ট আফতাব চৌধুরী এবং শাশুড়ির সেবার জন্য রাশেদা আক্তার পারুলকে সম্মাননা ক্রেস্ট তুলে দেওয়া হয়। সভার শেষে প্রবীণ ব্যক্তিদের সম্মানে জেলা শিল্পকলা একাডেমীর উদ্যোগে একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সিলেট জেলা কালচারাল অফিসার অসিত বরুণ দাশ গুপ্তের সঞ্চালনায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সংগীত শিল্পী শংকর ধর, শ্রাবন্তী ধর, মিতালী চক্রবর্তী, কৃষ্ণপদ বিশ্বাসসহ জেলা শিল্পকলা একাডেমির শিল্পীরা সংগীত এবং নৃত্য পরিবেশন করেন।