সিলেটে ফুটবলের মহারণ আজ শুরু ॥ লাওস-বধে সেমিতে যাওয়ার স্বপ্ন বাংলাদেশের

70

স্পোর্টস ডেস্ক :
হাওর-বাঁওরের দেশ, দেশের আধ্যাত্মিক রাজধানী এবং পর্যটনের নগরী সিলেট। দেশের সবচেয়ে ধনী জেলা হিসেবেও সুখ্যাতি আছে সিলেটের। তাছাড়া এ অঞ্চল সুপরিচিত বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক ওসমানীর জন্মস্থান হিসেবে। এই সিলেটেই আজ থেকে মাঠে গড়াচ্ছে বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ ফুটবলের আসর। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় উদ্বোধনী ম্যাচে স্বাগতিক বাংলাদেশ মুখোমুখি হবে লাওসের। এ টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত হবে পঞ্চমবারের মতো। সর্বশেষ ২০১৬ আসরে ৮ দল অংশ নিলেও এবার দলের সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে ৬-এ। এশিয়ার পাঁচটি ফুটবল জোন আছে। এই ৫টি জোন থেকে ৫টি দেশ এবং স্বাগতিক বাংলাদেশকে নিয়েই আসরটি আয়োজিত হতে যাচ্ছে। আগের চার আসর খেলে একবার রানার্সআপ হয়েছিল স্বাগতিক বাংলাদেশ। এবার তাদের লক্ষ্য সেমিফাইনাল খেলা। এবারের টুর্নামেন্টের দলগুলোকে দুটি গ্রুপে ভাগ করা হয়েছে। যেখানে ‘এ’ গ্র“পে রয়েছে ফিলিস্তিন, নেপাল ও তাজিকিস্তান। আর গ্র“প ‘বি’তে রয়েছে বাংলাদেশ, ফিলিপিন্স ও লাওস।
বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপের ম্যাচগুলো সরাসরি সম্প্রচার করবে বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি), মাছরাঙ্গা এবং নাগরিক টিভি। এছাড়া রেডিও ভূমি, রেডিও ফূর্তি এবং বাংলাদেশ বেতারেও বাংলা ধারাভাষ্য প্রচার করা হবে।
উল্লেখ্য, এর আগে সিলেটে বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপের খেলা হয়েছিল ২০১৫ সালে। সেবার রানার্সআপ হয়েছিল লাল-সবুজরা।
রবিবার আসর শুরুর আগে শেষবারের মতো খাদিমনগরে বিকেএসপির মাঠে অনুশীলনে ঘাম ঝরায় বাংলাদেশ দল। বাংলাদেশ দলের ব্রিটিশ কোচ কোচ জেমি ডে বলেন, ‘এশিয়ান গেমস এবং সাফ সুজুকি কাপের পর আমরা এবার বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ খেলতে যাচ্ছি। দলে কিছু নতুন খেলোয়াড় এসেছে। দলের সবাই ফিট আছে। ছেলেরা ভাল খেলতে মুুখিয়ে আছে।’
এ পর্যন্ত লাওসের সঙ্গে বাংলাদেশ দুটি ম্যাচ খেলেছে। দুটি ম্যাচই ছিল ফিফা ফ্রেন্ডলি প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশ হারে ২-১ গোলে ২০০৩ সালে। দ্বিতীয় ম্যাচে বাংলাদেশ ড্র করে ২-২ গোলে।
দলের অধিনায়ক এখনও ঠিক করেননি কোচ। তবে ধারণা করা হচ্ছে জামাল ভুঁইয়ারই অধিনায়ক হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
এ আসর উপলক্ষে রবিবার সিলেটের একটি অভিজাত হোটেলে এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
১১৪ ফিফা র‌্যাঙ্কিংধারী-আসিয়ান অঞ্চলের দেশ ফিলিপিন্স দলটির সব খেলোয়াড় বাংলাদেশে এখনও আসেনি। ২০ জনের মধ্যে মাত্র ১১ জন এসেছে। এরা সবাই ‘বি’ দলের খেলোয়াড়। এমনকি হেড কোচ এবং অধিনায়কও আসেননি। তারা এখন কাতার সফরে প্রীতি ম্যাচ খেলায় ব্যস্ত। আজ এবং কালকের মধ্যেই বাকিরা এসে পড়বেন বলে জানান ফিলিপিন্স দলের ম্যানেজার জোসেফ মারিমালিনে। ২০১১ সালে ঢাকায় এসে একটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলে গিয়েছিল ফিলিপিন্স। সেবার ৩-০ গোলে জিতেছিল তারা।
১০০ ফিফা র‌্যাঙ্কিংধারী-মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ফিলিস্তিনই এই আসরের সবচেয়ে ফেবারিট দল বলে আখ্যা দিয়েছেন ১৯৩ র‌্যাঙ্কিংধারী বাংলাদেশের কোচ জেমি ডে। তবে নিজেদের ফেবারিট ভাবতে নারাজ ফিলিস্তিনের কোচ নুরুদ্দিন আউলাদি।
১৭৯ ফিফা র‌্যাঙ্কিংধারী লাওসের কোচ মাইক ওং মুন হেঙ্গ বলেন, ‘বাংলাদেশের খেলা পর্যবেক্ষণ করেছি গত মাসে। তারা সাফের সেমিতে যেতে পারেনি। তবে এই আসরে ভাল করতে পারে। তাছাড়া তারা স্বাগতিক বলে বাড়তি সুবিধা পেতে পারে। কাজেই আমরা তাদের সমীহ করছি। এই ম্যাচটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ। গত মার্চে বাংলাদেশের সঙ্গে ফিফা ফ্রেন্ডলি ম্যাচে ২-২ গোলে ড্র করেছিল স্বাগতিক লাওস। ওই দলের আট খেলোয়াড় এবার নেই। বর্তমান দলের তিন ফুটবলার থাই লীগে খেলে থাকেন।
তাজিকিস্তান এবং নেপাল দল রবিবার পর্যন্ত বাংলাদেশে পেীঁছায়নি। আজ তারা আসবে বলে জানিয়েছে বাফুফে।
এখন দেখার বিষয়, আজকের ম্যাচে লাওসকে হারিয়ে শেখ চারে নাম লেখাতে পারে কি না জেমি ডে’র শিষ্যরা।