কমলগঞ্জে উদ্ধার হওয়া মস্তক বিহীন লাশের মস্তক উদ্ধার, আটক ৩

40

কমলগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা :
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের মাধবপুর ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী ধলই চা বাগান থেকে উদ্ধার হওয়া বৈষ্ণবী ইরানী তাঁতীর মূল হত্যাকারীকে সিলেট থেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পুলিশের উপস্থিতিতে খন্ডিত মস্তক ত্রিপুরা সীমান্তবর্তী নো-ম্যান্স ল্যান্ড এলাকা থেকে বের করে দিয়েছে হত্যাকারী। এ ঘটনায় অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হত্যাকারীসহ তিনজনকে কমলগঞ্জ থানায় আটক রাখা হয়েছে।
গত শনিবার (২২ সেপ্টেম্বর) বিকাল ৪টায় ধলই চা বাগানের ১নং প্লান্টেশন এলাকা থেকে মস্তকবিহীন অবস্থায় বৈষ্ণবী ইরানী তাঁতী (২৫)-র লাশ পুলিশ উদ্ধার করেছিল। সে শ্রীমঙ্গল উপজেলার কালিঘাট চা বাগানের দেব তাঁতী ও সেতু তাঁতীর মেয়ে। গত বুধবার সে নিজ বাসা থেকে বের হওয়ার পর শনিবার সকালে ধলই চা বাগানের প্লান্টেশন এলাকায় মস্তকবিহীন অবস্থায় তার লাশ দেখতে পায় চা শ্রমিকরা। এ দিন বিকালে কমলগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আরিফুর রহমানের নেতৃত্বে পুলিশ মস্তকবিহিন বৈষ্ণবীর লাশ উদ্ধার করেছিল।
এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কমলগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক চম্পক দাম জানান, প্রাথমিক তদন্তে এ হত্যাকান্ডের অনেক তথ্য বের হলেও ঘটনার তথ্য সংগ্রহে সন্দেহজকভাবে ধলই চা বাগানের দয়াল সেতু, রতন, দুদু ও হাসান নামের ৪জনকে থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে ইউপি চেয়ারম্যান পুষ্প কুমার কানুর জিম্মায় তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়। পরে ধলই চা বাগানের পঞ্চায়েত কমিটিসহ সাধারণ চা শ্রমিকদের সময় বেঁধে দিয়ে ঘটনার সাথে জড়িতদের খোঁজে বের করতে সহায়তা চাওয়া হয়েছিল। ফলে ২৬ সেপ্টেম্বর রাতে। রাতের আঁধারে নিহত বৈষ্ণবীর ব্যবহৃত কাপড়ের বেগসহ আরও কিছু সামগ্রী লাশ উদ্ধারের স্থানে ফেলে যায় কে বা কারা।
ফেলে যাওয়া কাপড়ের সাথে নিহত বৈষ্ণবীর মুঠোফোনের নম্বরসহ আরও কয়েকটি নম্বর পাওয়া যায়। এগুলো ট্রেক করে পুলিশ শমসেরনগর চা বাগানের অধীন দেওছড়া চা বাগানের বাবুল দাস (২৪) কে আটক করে। পরে তাকে সাথে নিয়ে সিলেট শহরের মেহেদী বাগ এলাকা থেকে ধলই চা বাগানের বিক্রম দাসের ছেলে বাবলু দাসকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার হওয়া বাবলু দাসই বৈষ্ণবী ইরানী তাঁতীর মূল হত্যাকারী। সে লাশ উদ্ধারের দিন সকাল ৭টায় বাবার চিকিৎসার নাম করে সিলেট চলে যায়।
গ্রেফতার বাবলু দাসের দেওয়া তথ্যে তাকে সাথে নিয়ে কমলগঞ্জ-শ্রীমঙ্গল সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মো. আশরাফুজ্জামান, কমলগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আরিফুর রহমান, পরিদর্শক(তদন্ত) সুধীন চন্দ্র দাস ও তদন্তকারী কর্মকর্তা গতকাল শুক্রবার সকাল ৯টায় ধলই চা বাগানের ত্রিপুরা সীমান্তবর্তী নাউকুছি এলাকার নো-ম্যান্স ল্যান্ড থেকে খন্ডিত মস্তক উদ্ধার করেন।
তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক চম্পক দাম বলেন, বাবলু দাস একাই বৈষ্ণবী ইরানী তাঁতীকে হত্যা করেছে বলে স্বীকার করলে ধারনা করা হচ্ছে এ ঘটনায় আরও কয়েকজন জড়িত আছে। তাই কমলগঞ্জ থানায় এখন বাবলু দাস, ধলই চা বাগানের বাবুল দাস ও দেওছড়া চা বাগানের বাবুল দাসকে আটক রাখা হয়েছে।
কমলগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) মো. আরিফুর রহমান মূল হত্যাকারীসহ ৩ জনকে আটকের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, খন্ডিত মস্তকও উদ্ধার হয়েছে। এ মামলাটির জোর তদন্তক্রমে আরও কেউ জড়িত থাকলে তাদেরও গ্রেফতার করা হবে বলেও তিনি জানান।