সুনামগঞ্জে আলোচনায় বক্তারা ॥ হাওরবাসীর জীবনকে কর্মমুখী করতে হবে

40

সুনামগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা :
হাওর এলাকার মানুষের জীবন-জীবিকা মৌসুম ভিত্তিক। এখানে মানুষ শুকনো মৌসুমে হাওরে বোরো ধানের চাষ করেন। তখন সবজিসহ অন্য আরও কিছু ফসল ফলানো হয়। কিন্তু বর্ষা মৌসুমে অনেকটা বেকার সময় কাটে তাদের। এ সময় হাওরে মাছ ধরা ছাড়া প্রায় সাত মাস তাদের হাতে আর কোনো কাজ থাকে না। তাই হাওর এলাকার মানুষের জীবনে সচ্ছলতা আনতে হলে এখানে জীবনকে কর্মমূখী করে তুলতে হবে। তাদের কাজ দিতে হবে।
সুনামগঞ্জ সার্কিট হাউস মিলনায়তনে রবিবার ‘প্রত্যন্ত হাওর অঞ্চলে বসবাসরত দরিদ্র ও অতিদরিদ্র জনগোষ্ঠীর জীবিকা ও জীবনমান উন্নয়ন প্রচেষ্টা’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।কেয়ার বাংলাদেশের বাস্তবায়নাধীন সৌহার্দ্য-৩ কর্মসূচির উদ্যোগে এই আলোচনা সভা হয়। এতে সুনামগঞ্জের সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি, প্রকল্পের সুবিধাভোগীসহ বিভিন্ন শ্রেণি ও পেশার লোকজন অংশ নেন।
সভায় কেয়ার বাংলাদেশের সৌহার্দ্য কর্মসূচির প্রকল্প প্রধান ওয়াল্টার মাওঁসা সভাপতিত্ব করেন। প্রধান অতিথি ছিলেন সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার মোহাম্মদ মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরী। বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবদুল আহামদ, কেয়ার বাংলাদেশের সহকারী পরিচালক প্রবোধ দেভকোটা, সুনামগঞ্জ স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ এমরান হোসেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. নুরুজ্জান,কেয়ার বাংলাদেশের পরিচালক মো. মেহেরুল ইসলাম প্রমুখ। সভায় স্বাগত বক্তব্য দেন প্রকল্পের আঞ্চলিক সমন্বয়কারী সুব্রত কুমার সাহা। মূল বক্তব্য তুলে ধরেন প্রকল্পের কর্মকর্তা এ টি এম জুবাইদুর রহমান।
হাওরকে হাওরের মতো রেখেই সব উন্নয়ন কর্মকান্ড পরিচালনার তাগিদ দিয়ে সভায় বক্তারা বলেন, হাওরের প্রকৃতি, পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষা করেই সব কাজ করতে হবে। কারণ হাওরের সম্পদের ওপর মানুষ নির্ভরশীল। হাওর এলাকার প্রধান ফসল হলো বোরো ধান। কিন্তু প্রতি বছর অকাল বন্যা ও পাহাড়ি ঢলের ঝুঁকিতে পড়ে তাঁদের কষ্টার্জিত এই ফসল। আবার অনেক সময় কৃষকেরা অনুন্নত যোগাযোগ, বাজারের অভাব, উৎপাদন ব্যয় বেশিসহ নানা কারণে তাদের ফসলের প্রকৃত মূল্য পান না।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিভাগীয় কমিশনার মোহাম্মদ মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরী বলেন, হাওর এলাকার উন্নয়নে কাজ হচ্ছে, আরও হবে, কিন্তু হাওরের প্রকৃতি ও পরিবেশের কোনো পরিবর্তন বা ক্ষতি করা যাবে না। হাওর এলাকায় যেহেতু প্রায় সাত মাস পানি থাকে তাই এখানে মানুষের কাজের অভাব রয়েছে। বছরের অনেকটা সময় মানুষ অলস সময় কাটান। তাই মানুষকে কাজের মধ্যে হবে, তাদের কাজ দিতে হবে। এ জন্য হাওরের সম্পদকে কাজে লাগাতে হবে। তাহলেই মানুষের জীবনমানে পরিবর্তন আসবে।