দূষণের হুমকিতে তাহিরপুরের পর্যটন শিল্প

50

বাবরুল হাসান বাবলু তাহিরপুর থেকে :
যত্রতত্র ময়লা আবর্জনা ফেলায় দুষনের হুমকিতে পড়ছে তাহিরপুরের পর্যটন। হাওর থেকে শুরু করে নদী,লেক সর্বত্রই ময়লা আবর্জনা চোখে পড়ছে। এ অবস্থা এখনই ঠেকানো না গেলে দিন দিন তাহিরপুরের পর্যটন স্পটগুলো শ্রী হারাবে।
সরজমিন উপজেলার বিভিন্ন স্পট ঘুরে দেখা গেছে, গাছের ছায়া কিংবা পর্যটক ছাউনি যেখানেই পর্যটকরা বসে খাবার খাচ্ছেন সেখানেই উচ্ছিষ্ট ময়লাগুলো ফেলে যাচ্ছেন। বেশীর বাগ ক্ষেত্রে চোখে পড়ছে বিস্কুটের প্যাকেট, চিপস, চানাচুর, পলিথিন, প্লাস্টিকের বোতল, ওয়ান টাইম খাবারের থালা ও গ্লাস। যার একটিও পচনশীল দ্রব্য নয়। হাওর কিংবা নদীর জলে যেখানে এই অপচনশীল দ্রব্যগুলো ফেলা হচ্ছে সেখানেই সে অবস্থায় দীর্ঘদিন একই অবস্থায় অপচনশীল দ্রব্যগুলো পড়ে আছে।
জানা যায়, ২০০০ সালের শুরু দিকে বিচ্ছিন্নভাবে তাহিরপুর উপজেলার টাঙ্গুয়া, ট্যাকেরঘাট চুনাপাথর লেক, যাদুকাটা, বারেকটিলা দেখতে ভ্রমণ পিপাসু লোকজন আসতে শুরু করেন। দিনদিন পর্যটকদের আগমন বৃদ্ধি পায় এ এলাকায়। বর্তমানে বন্ধের দিনগুলোতে হাজরো পর্যটকের সমাগম ঘটে উপজেলায়। কমপক্ষে শতাধিক নৌকা চলাচল করে পর্যটকদের নিয়ে। পর্যটকদের অনেকে দিনে দিনে চলে যান আবার অনেকে রাতে হাওরে থেকে যান। খাওয়া দাওয়া সহ সব কিছু নৌকাতে সারেন। আর যে যেখানে খাওয়া দাওয়া করেন সেখানেই উচ্ছিষ্ট ময়লাগুলো ফেলে যান। প্রতিদিন এরকমভাবে একজন দু’জন করে ময়লা ফেলতে ফেলতে চোখে পড়ার মত ময়লা জমে যাচ্ছে পর্যটন স্পটগুলোতে। স্থানীয় লোকজন সহ অনেকে জানান, এখনই এর প্রতিকার না করা গেলে একদিন এ পর্যটন স্পটগুলো ময়লার বাগাড়ে পরিণত হবে।
নৌকার মাঝি শিবলি মিয়া বলেন, পর্যটকরা যতক্ষণ আমার নৌকাতে থাকে ততক্ষণ পানিতে কোন কিছু ফেলতে দেই না। যখন তারা উপরে উঠে হাঁটাহাঁটি করে কোন কিছু খেয়ে ময়লা আবর্জনা যেখানে সেখানে ফেলে যায় তখন তো সে বিষয়টি আমি দেখতে পাই না। একই অবস্থার কথা জানালেন মাঝি জানে আলম, আল আমীন সহ অনেকে।
ফটোগ্রাফার পয়েল আহমেদ জানান, শিমুল বাগান ঘুরতে এসে তিনি দেখেন পর্যটকরা বারবিকিউ করে আগুনে পুড়া কাটগুলো বাগানেই ফেলে দিচ্ছে সে সময় এ নিয়ে তাদের সাথে পয়েল আহমেদের কথা কাটকাটি হয় বলে তিনি জানান।
ট্রাভেল অনলাইন ফেইস বাংলাদেশ এর এডিটর ভ্রমণ প্রেমী শাহীন আহমেদ বলেন, আপনি পাহাড় কিংবা হাওর, নদী কিংবা ঝর্ণা যেখানেই যাবেন দেখবেন এর আশপাশে পর্যটকরা পানির খালি বোতল, চিপস, চানাচুর কিংবা পলিথিন ব্যাগ ফেলে আসছেন। শুধু তাহিরপুর নয় বর্তমানে বাংলাদেশের প্রতিটি পর্যটন স্পটের একই দশা।
তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার পূর্নেন্দু দেব বলেন,আমি বিষয়টি দেখে সম্প্রতি নৌকার মাঝিদের নিয়ে বসেছিলাম। সবাইকে বলে দিয়েছি নৌকাতে একটা করে ঝুড়ি রাখতে সেই সাথে নৌকায় উঠার পর আগত পর্যটকদের বলতে তারা যেন যত্রতত্র ময়লা না ফেলে।