নবীগঞ্জ শহরে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে পুলিশ সহ আহত শতাধিক, দোকানপাট ভাংচুর, কয়েক লক্ষাধিক টাকার ক্ষয়ক্ষতি

38

হবিগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা :
হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ পৌর এলাকায় সিএনজি চালককে মারধরকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে পুলিশসহ উভয় পক্ষের শতাধিক লোকজন আহত হয়েছেন।
গুরুতর আহত অবস্থায় গুলিবিদ্ধ পুলিশ সদস্য খায়রুলসহ ৬ জনকে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। শহরের মাছ বাজার, পোল্ট্রি ফার্ম, রেস্টুরেন্টসহ বিভিন্ন দোকানঘর ভাংচুর লুটপাট করা হয়।
সংঘর্ষ চলাকালে ভাংচুরে কয়েক লক্ষ টাকার ক্ষতি সাধিত হয়েছে। এ ঘটনায় শহরজুড়ে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে, সংঘর্ষ এড়াতে পুরো শহর এবং গুরুত্বপূর্ণস্থানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। আতংকে বন্ধ রয়েছে নবীগঞ্জ শহরের অধিকাংশ দোকান পাট। বৃহস্পতিবার বিকেলে নবীগঞ্জ জেকে উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠের নিকটবর্তী শহীদ মিনারের সামনে ১ম দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
ঘটনার সূত্রপাত, গত বুধবার বিকেলে বানিয়াচং কাগাপাশা থেকে নবীগঞ্জ শহরের ফেরার পথিমধ্যে কানাইপুর শ্মশানঘাট এলাকায় পৌঁছামাত্রই চরগাঁও সিএনজি স্ট্যান্ডের সিএনজি চালক কাওছার মিয়াকে (রাজাবাদ) থানা পয়েন্টের সিএনজি স্ট্যান্ডের সিএনজি চালক শিশু মিয়াসহ কয়েকজন একত্রিত হয়ে মারধর করে।
এ ঘটনার জের ধরে বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে মারধরের ব্যাপারে রাজাবাদ পয়েন্টের ম্যানেজারের আফজল মিয়া, মিজান মিয়া, ফয়েজ মিয়া, বেলাল মিয়ার কাছে চরগাও সিএনজি স্ট্যান্ডের ম্যানেজার আব্দুল আমিন চৌধুরী, আলমন্দর চৌধুরী, নিপন, রিপন, শাহজাহান, আলমসহ কয়েকজন সেখানে গেলে তাদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডা হয়। এক পর্যায়ে উভয় গ্রামের লোকজন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এ সময় মাছ বাজার, পোল্ট্রি ফার্ম, দোকানপাটসহ বেশ কয়েকটি দোকান ভাংচুর করা হয়। প্রায় ৩ ঘন্টা ব্যাপী সংঘর্ষে উভয় পক্ষের শতাধিক লোকজন আহত হয়। আহতদের নবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক গুরুতর আহত অবস্থায় ইব্রাহিম মিয়া (৫৫), আব্দুল জলিল (৪০), আরদাশ (২৫), ফয়জুর রহমান (২৬), সাহিদুর রহমান (৫৪), জাবেদ চৌধুরী (৩৬) সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। পরে খবর পেয়ে নবীগঞ্জ-বাহুবল সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার পারভেজ আলম চৌধুরী নেতৃত্বে অতিরিক্ত ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন।
এ সময় সংঘর্ষ থামাতে মিস ফায়ারে (অসাবধানতামূলক) কারণে গুলিবিদ্ধ হয়ে পুলিশ সদস্য খায়রুল ইসলাম (২২) আহত হন। পরে তাকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে আনতে নবীগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান এড. আলমগীর চৌধুরী, নবীগঞ্জ পৌর মেয়র আলহাজ্ব ছাবির আহমদ চৌধুরী, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল জাহান চৌধুরী, ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা আতাউল গণি ওসমানী, হবিগঞ্জ জেলা পরিষদের সদস্য এড. সুলতান মাহমুদ, উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান চৌধুরী সেফুসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের সহায়তায় পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরে পুলিশ কর্মকর্তাসহ উপস্থিত সকল নেতৃবৃন্দ ভাংচুরকৃত মাছবাজার ও দোকানপাট পরিদর্শন করেন।
নবীগঞ্জ-বাহুবল সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার পারভেজ আলম চৌধুরী বলেন বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে,শহরজুড়ে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।