ঈদ যাত্রায় সড়কে মৃত্যু ২৫৯

27

কাজিরবাজার ডেস্ক :
সড়ক দুর্ঘটনা কমাতে নানামুখি উদ্যোগ এবং ঘোষণার মধ্যে ঈদুল ফিতরের তুলনায় এবার প্রায় ২৪ শতাংশ কম মানুষ নিহত হয়েছে সড়কে। তারপরও যত মানুষ মারা গেছে, সেটি উদ্বেগজনক।
যাত্রী কল্যাণ সমিতির হিসাবে এবার শহর থেকে গ্রামমুখী ঈদযাত্রা এবং ফিরতি পথে ১৩ দিনে সড়কে নিহত হয়েছে ২৫৯ জন, আহত হয় ৯৬০ জন। গত ঈদুল ফিতরে নিহতের এই সংখ্যাটি ছিল ৩৩৯ জন।
শুক্রবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানান যাত্রীকল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী।
প্রতিবেদনে বলা হয়, এবারের ঈদযাত্রায় সরকারের বিভিন্ন সংস্থার নানামুখী তৎপরতা ও মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার করার কারণে ঈদুল ফিতরের তুলনায় দুর্ঘটনা ১৪ দশমিক ৪৪ শতাংশ, প্রাণহানী ২৩ দশমিক ৫৯ শতাংশ এবং আহত ২৪ দশমিক ১১ শতাংশ কমেছে।
তবে ২০১৭ সালের ঈদুল আযহার তুলনায় এবার দুর্ঘটনা ১৩ দশমিক ৫০ শতাংশ ও আহত ১১ দশমিক ৬৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
সড়কে মৃত্যুর ৩১ দশমিক ৩৮ শতাংশ দুই গাড়ির মুখোমুখি সংঘর্ষে, ৪৪ দশমিক ৩৫ শতাংশ পথচারীকে গাড়ি চাপা দেয়া, ১৭ দশমিক ৫৭ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়া, ১ দশমিক ১০ শতাংশ চলন্ত গাড়ি থেকে পড়ে যাওয়া, ১ দশমিক ২৬ শতাংশ চাকায় ওড়না পেঁচিয়ে ও ৫ দশমিক ২ শতাংশ অনান্য কারণে হয়েছে।
সংগঠিত দুর্ঘটনার যানবাহন পরিসংখ্যানে দেখা যায় ২৯ দশমিক ১৮ শতাংশ বাস, ২৩ দশমিক ৬ শতাংশ ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান, ৬ দশমিক ৬ শতাংশ নছিমন-করিমন, ৫ দশমিক ৯ শতাংশ ব্যাটারি রিকশা ও ইজিবাইক, ১১ দশমিক ১৫ শতাংশ অটোরিকশা, ৬ দশমিক ৯ শতাংশ কার-মাইক্রো ও ১৬ দশমিক ৭২ শতাংশ মোটরসাইকেল, ৯ দশমিক ১৬ শতাংশ অনান্য যানবাহন দুর্ঘটনায় পড়েছে।
গত ১৬ আগস্ট থেকে ২৮ আগস্ট পর্যন্ত সড়কে হতাহতের মধ্যে আছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ১২ সদস্য, চারজন চিকিৎসক, দুই করে প্রকৌশলী, সাংবাদিক ও শিক্ষক, ২০ জন শিক্ষার্থী, ৪২ জন চালক ও সহকারী, ৫৯ জন নারী, ৩৪ শিশু ও আট জন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী।
যাত্রীকল্যাণ সমিতির পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, ফিটনেসবিহীন যানবাহন ও পণ্যবাহী যানবাহনে যাত্রী বহন, বিরতি বা বিশ্রামহীন যানবাহন চালানো, অপ্রাপ্তবয়স্ক ও অদক্ষ চালক-হেলপার দিয়ে গাড়ি চালানো, মহাসড়কে অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত রিকশা, নসিমন-করিমন ও মোটরসাইকেল অবাধে চলাচল, বেপরোয়া গতিতে যানবাহন চালানো, সড়ক-মহাসড়কে ফুটপাত না থাকা ও সড়কের বেহাল দশা এসব দুর্ঘটনার জন্য দায়ী।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন তত্ত্বাবাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা হোসেন জিল্লুর রহমান, পিএসসির সাবেক চেয়্যারম্যান ও দুর্ঘটনা প্রতিরোধ সংগঠন ফুয়ারার সভাপতি ইকরাম আহমেদ, বিআরটিএর সাবেক চেয়্যারম্যান আইয়ুবুর রহমান প্রমুখ।