নৌ পথে চলাচলে ভোগান্তি

41

পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে ঘরমুখো মানুষের বাড়ি ফেরার প্রস্তুতি শেষ। অনেকেই এরই মধ্যে পরিবার-পরিজন পাঠিয়ে দিলেও মূল ঈদ যাত্রা শুরু হবে শুক্রবার থেকে। এবার ঈদের ছুটির শেষে দুই দিনের সাপ্তাহিক ছুটি যোগ হওয়ায় মোট পাঁচ দিনের ছুটি ভোগ করা যাবে। ফলে অনেকেই প্রিয়জনদের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে চাইবেন। ঈদের আনন্দে মানুষের প্রধান বাধা হয়ে দাঁড়ায় ঘরে ফেরার টিকিট। বরাবরের মতো এবারও প্রথম দিনেই শেষ বাসের টিকিট। ট্রেন ও লঞ্চের টিকিট বিক্রিও শেষ হয়েছে। কিন্তু ঘরে ফেরার আনন্দে মানুষের মনে পথের বিড়ম্বনার আশঙ্কা রয়েই গেছে। এবার দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ঘরমুখো মানুষকে বিড়ম্বনায় ফেলতে পারে দুই ফেরিঘাট। কাঁঠালবাড়ী-শিমুলিয়া নৌ রুটে নাব্যতা সংকটের কারণে বড় ফেরি চলাচল করতে পারছে না। অন্যদিকে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌ রুটে প্রবল স্রোতের কারণে ফেরিগুলোকে চলাচল করতে হচ্ছে নির্দিষ্ট চ্যানেল ছেড়ে অনেকটা ঘুরে। ফলে উভয় ফেরিঘাটে দীর্ঘ হচ্ছে পারাপারের অপেক্ষায় থাকা যানবাহনের সারি। এ ছাড়া ঈদুল আজহার সময় কোরবানির পশুবাহী ট্রাকের সংখ্যা বাড়ে। নাব্যতা সংকটের কারণে ফেরি পারাপারে সময় লাগছে বেশি। বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ভাবতে হবে।
কাঁঠালবাড়ী-শিমুলিয়া নৌ রুটে নাব্যতা সংকটের কারণে রো রো ফেরি চলাচল বন্ধ রেখে ছোট ছোট কে-টাইপ ফেরিতে যানবাহন পারাপার করছে বিআইডাব্লিউটিসি। সংশ্লিষ্টদের বক্তব্য, উজান থেকে পলিমিশ্রিত পানি আসার কারণে বিকল্প চ্যানেল ও চ্যানেলমুখে দ্রুত পলি পড়ে ভরাট হয়ে যাচ্ছে। নাব্যতা সংকট দেখা দেওয়ায় এই রুটে ছয়টি ডাম্প ফেরি ও তিনটি রো রো ফেরি চলাচল করতে পারছে না। দুটি ভিআইপি ফেরিসহ মোট ৯টি ফেরি ধীরগতিতে চলছে। এ অবস্থায় চ্যানেলমুখে ড্রেজিংয়ের কাজ আরো দ্রুততর করতে হবে। এর পাশাপাশি বিকল্প রুটও খুঁজে বের করতে হবে। তা না হলে এই রুটের যাত্রীদের ভোগান্তি বাড়বে। কারণ ঈদ যাত্রা শুরু হলে যানবাহনের চাপ আরো বাড়বে। অন্যদিকে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌ রুটে পদ্মায় পানি বেড়েছে অস্বাভাবিকভাবে। অব্যাহত রয়েছে প্রবল স্রোত। এ অবস্থায় প্রতিটি ফেরিকেই দুই থেকে তিন কিলোমিটার উজানে গিয়ে নদীপথ পাড়ি দিতে হচ্ছে। এতে ফেরি পারাপারে সময় লাগছে বেশি। ফেরির ট্রিপের সংখ্যা কমে যাওয়ায় উভয় পারে যানবাহনের চাপ বাড়ছে, দীর্ঘ হচ্ছে সারি। এ অবস্থায় এই নৌ রুটে ফেরির সংখ্যা বাড়ানোর কোনো বিকল্প নেই।
আমরা আশা করব, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সমস্যা বিবেচনায় নিয়ে সংকট মোকাবেলায় সঠিক সিদ্ধান্ত নেবে।