সিওমেকের ছাত্র তৌহিদুল হত্যাকান্ড ॥ ছাত্রলীগ নেতাসহ ১৬ জন বেকসুর খালাস

70

স্টাফ রিপোর্টার :
সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (সিওমেক) এমবিবিএস ৪র্থ বর্ষের ৪৯ ব্যাচের ছাত্র ও কলেজ ছাত্রদলের আপ্যায়ন বিষয়ক সম্পাদক তৌহিদুল ইসলাম (২৩) হত্যা মামলায় ছাত্রলীগ নেতাসহ ১৬ আসামীকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত। গতকাল সোমবার দুপুরে সিলেটের অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মমিনুন নেসা এ রায় ঘোষণা করেন।
খালাসপ্রাপ্তরা হচ্ছেন- ময়মনসিংহ জেলার থুবাউড়া থানার বাসিন্দা ও সিলেটের ছাত্রলীগ নেতা মো. মুশফিকুজ্জামান আকন্দ রাফি (২২), জামালপুর জেলার বাসিন্দা ও সিওমেকের এমবিবিএস ৪র্থ বর্ষের ৪৯ ব্যাচের ছাত্র হাফিজুর রহমান (২৩), ময়মনসিংহ জেলার সিওমেকের একই ব্যাচের ছাত্র ফারহান আনজুম নিশাত পাঠান (২৩), চট্টগ্রাম জেলার বাসিন্দা একই কলেজের ছাত্র অন্তরদীপ নন্দী উরফে অনন্ত (২৩), চাঁদপুর জেলার পুরানবাজার থানার বাসিন্দা সিওমেক কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি সৌমেন দে উরফে শাওন (২৫), ব্রাক্ষনবাড়ীয়া জেলার বাসিন্দা সিওমেকের ছাত্র ও সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হাই (২২), নেত্রকোনা জেলার বাসিন্দা ও একই কলেজের এমবিবিএস ছাত্র আবু সালাহ মো. ফাহিম (২৬), টাংগাইল জেলার বাসিন্দা সিওমেকের কলেজ ছাত্র মো. শরিফুল ইসলাম খান (২৩), ফেনী জেলার বাসিন্দা ও একই কলেছের ছাত্র মো. জুবায়ের ইবনে খায়ের ওরফে জুবায়ের (২৩), চট্টগ্রাম জেলার বাসিন্দা ও কলেজ ছাত্র জহুর রায়হান উরফে রিপন (২৩), শেরপুর জেলার দূর্গা নারায়নপুর থানার বাসিন্দা এটিএম তামজিদুল ইসলাম সজল উরফে সজয় (২০), পাবনা জেলার সদর থানার বাসিন্দা মো. সারওয়ার হোসেন টুটুল (২০), ঢাকা খিলগাঁও থানার বাসিন্দা মো.ওয়াহিদুর রহমান খান উরফে মামুন (২৭), ময়মনসিংহ জেলার কোতোয়ালী থানার বাসিন্দা মো. আরিফুর রহমান চৌধুরী উরফে জিসান (২৫), নেত্রকোনা জেলার বারহাট্টা থানার বাসিন্দা মো. আফজালুল আলম উরফে আফজাল (২২) এবং সিওমেকের এমবিবিএস ৪র্থ বর্ষের ৪৯ ব্যাচের ছাত্র আশিষ কুমার শীল (২২)। রায় ঘোষণার সময় সকল আসামী আদালতের কাঠগড়ায় উপস্থিত থাকলেও অপর আসামী সৌমেন দে উরফে শাওন পলাতক ছিলেন।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা গেছে, ২০১৪ সালের ৪ জুন সন্ধ্যার দিকে শরিয়তপুর জেলার বড় গোপালপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সামসুর রহমানের পুত্র সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজের এমবিবিএস ৪র্থ বর্ষের ৪৯ ব্যাচের ছাত্র এবং কলেজ ছাত্রদলের আপ্যায়ন বিষয়ক সম্পাদক তৌহিদুল ইসলামকে বাসা থেকে ডেকে নিয়ে ওসমানী মেডিকেল কলেজের আবু সিনা ছাত্রাবাসের ১০০৩ নং কক্ষে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে কতিপয় তার সহপাঠীরা। পরে ওসমানী হাসপাতালে রাত সাড়ে ৮টার দিকে তার মৃত্যু হয়। নিহত তৌহিদুল ইসলাম বাগবাড়ী এলাকায় মা ও ছোট বোনকে নিয়ে ভাড়াটে বাসায় বসবাস করে লেখাপাড়া করে আসছিলেন। এই ঘটনায় নিহত তৌহিদুলের চাচা মো: আনোয়ার হোসেন মাতবর বাদি হয়ে ১০ ঘাতকের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরো ৮/১০ জনকে আসামী করে কোতোয়ালী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। যার নং-৪ (০৫-০৬-২০১৪)।
দীর্ঘ তদন্ত শেষে কোতোয়ালী থানার ওসি (তদন্ত) মো: মোশাররফ হোসেন ২০১৫ সালের ১৫ অক্টোবর ১৬ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে এ মামলার চার্জশিট (অভিযোগপত্র) দাখিল করেন এবং ২০১৬ সালের ৩১ অক্টোবরে আদালত মামলাটির বিচারকায্য শুরু করেন। দীর্ঘ শুনানী ও ৪৪ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত উল্লেখিত আসামীদের বিরুদ্ধে আদালতে ৩০২/৩৪ ধারায় দোষ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদেরকে বেকসুর খালাস দেয়া হয়েছে।
রাষ্ট্রপক্ষে এপিপি এডভোকেট মাসুক আহমদ ও আসামীপক্ষে এডভোকেট মো: মনির উদ্দিন, এডভোকেট কবির আহমদ এবং এডভোকেট আব্দুল খালিক মামলাটি পরিচালনা করেন।