পেঁয়াজের বাজার নিয়ন্ত্রণ চাই

45

সামনে পবিত্র ঈদুল আজহা। এই ঈদে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা যে যার সাধ্যমতো পশু কোরবানি করবে। পশুর মাংস নিজেরা খাবে, গরিব-দুঃখী কিংবা আত্মীয়স্বজনের মধ্যে বিতরণ করবে। এ সময় পেঁয়াজ, আদা-রসুন ও অন্য কিছু মসলার চাহিদা কিছুটা বেড়ে যায়। আর প্রতিবছর এ সুযোগই নেয় এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী। কোরবানির ঈদের আগে আগে নানা রকম কারসাজি করে এসব পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেওয়া হয়। এবারও এর ব্যতিক্রম হয়নি। গত এক-দেড় মাসে পেঁয়াজের দাম বাড়তে বাড়তে প্রায় দ্বিগুণ হয়ে গেছে। রমজান মাসের পর দেশি জাতের পেঁয়াজের দাম ছিল ৩৫ টাকা, তা এখন বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা কেজি দরে। আর আমদানি করা পেঁয়াজের দাম হয়েছে কেজিপ্রতি ৪০ টাকা। অথচ গত সপ্তাহেও যে দামে এই পেঁয়াজের এলসি করা হয়েছে, তাতে কেজিপ্রতি আমদানিমূল্য হবে সর্বোচ্চ ২১ টাকা। এসব পণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণের কোনো উদ্যোগও চোখে পড়ছে না।
দাম বাড়ানোর পেছনে সিন্ডিকেট সক্রিয় থাকার কথাও শোনা যায়। বিগত রমজান মাস শুরু হওয়ার আগে আগে পেঁয়াজের দাম বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু রমজান মাসের শুরুতে বাজারে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা ও বাড়তি মনিটরিং চালু করায় ব্যবসায়ীরা বাধ্য হয় দাম কমাতে। তখনই দেশি পেঁয়াজের দাম নেমে আসে কেজিপ্রতি ৩৫ টাকায় এবং বিদেশি পেঁয়াজ ২০ থেকে ২৫ টাকায়। সম্প্রতি ভারতের বাজারেও পেঁয়াজের দাম সামান্য বেড়েছে। সেই বাড়তি দামে আমদানি করা হলেও কেজিপ্রতি মূল্য পড়বে ২১ টাকার মতো। সেই পেঁয়াজ ৪০ টাকা দরে বিক্রি হওয়ার পেছনে কোনো যুক্তিই থাকতে পারে না। বাজারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা মনে করছেন, এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ীর সিন্ডিকেট নানা ধরনের কারসাজি করে ক্রমাগতভাবে দাম বাড়িয়ে চলেছে। তাঁদের মতে, সরকার চাইলে এসব কারসাজি নিয়ন্ত্রণ করা মোটেও কঠিন কাজ নয়। কিন্তু সেই চাওয়াতেই যেন ঘাটতি রয়েছে।
আমরা চাই অবিলম্বে পেঁয়াজসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণের পদক্ষেপ নেওয়া হোক। সরকারি সংস্থা টিসিবিকে দ্রুত সক্রিয় করতে হবে। প্রয়োজনে টিসিবির মাধ্যমে পেঁয়াজ আমদানিরও উদ্যোগ নিতে হবে। পাশাপাশি খোলাবাজারে পেঁয়াজসহ জরুরি কিছু পণ্য বিক্রির উদ্যোগ নিতে হবে। আমাদের বাজার যেহেতু কোনো নিয়ম-নৈতিকতা মেনে চলে না, তাই এখানে সার্বক্ষণিক নজরদারি ও আইনের প্রয়োগ বাড়াতে হবে। ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে অনৈতিক মুনাফাখোরদের শাস্তি দিতে হবে। আমরা আশা করি, ঈদুল আজহায়ও বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য স্থিতিশীল রাখতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হবে।