সিলেট সহ তিন সিটিতে এমপি-মেয়রদের প্রচারণা ঠেকাতে ইসির উদ্যোগ ॥ সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়া কাউকে গ্রেফতার করা হচ্ছে না- ইসি সচিব

32

কাজিরবাজার ডেস্ক :
রাজশাহী, বরিশাল ও সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনের প্রচারে সংসদ সদস্য এবং অন্য সিটির মেয়ররা যেন অংশ নিতে না পারেন এ ব্যাপারে উদ্যোগ নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। সংসদ সদস্যরা যাতে প্রচারে অংশ না নেন এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীকে চিঠি দিয়েছে ইসি। এছাড়া প্রচারে অংশ নেয়ায় খুলনা ও গাজীপুরের মেয়রকে মৌখিকভাবে সতর্ক করেছে সংস্থাটি।
বুধবার বিকালে আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ এসব তথ্য জানান।
রাজশাহীতে সরকারি দলের দুই সংসদ সদস্য নির্বাচনী প্রচারে অংশ নেন বলে অভিযোগ তুলে বিএনপি। এছাড়া সদ্য নির্বাচিত গাজীপুর ও খুলনা সিটি মেয়র বরিশাল ও রাজশাহীতে সরকারি দলের প্রার্থীর পক্ষে প্রচারে অংশ নেন। বিএনপির অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে নির্বাচন কমিশন এ ব্যাপারে তৎপর হয়।
ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার আগে আওয়ামী লীগের একটি প্রতিনিধি দল ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে বৈঠক করে নির্বাচন কমিশন। আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি দলের প্রধান এইচ টি ইমাম বৈঠক থেকে বের হয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে দাবি করেন, রাজশাহী সিটি নির্বাচনে খুলনা ও গাজীপুর সিটি মেয়র প্রচারে অংশ নিয়ে আচরণবিধি লঙ্ঘন করেননি। কারণ গাজীপুর সিটি মেয়র এখনও শপথ নেননি এবং খুলনা সিটি মেয়র শপথ নিলেও দায়িত্বভার গ্রহণ করেননি। কাজেই তারা আচরণবিধি লঙ্ঘন করেননি।
এইচ টি ইমামের কথা বলার পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ইসি সচিব। আওয়ামী লীগের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কী কথা হয়েছে— এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাংবাদিকদের ইসি সচিব বলেন, ‘সামনে তিন সিটি নির্বাচন হবে। উনারা বলেছেন সুষ্ঠু নির্বাচনে কমিশনকে সার্বিক সহযোগিতা করবেন।’
বিএনপির অভিযোগ করছে তাদের নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে, এ বিষয়ে ইসি সচিব বলেন, ‘সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়া কাউকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না।’
তিন সিটি নিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে একবার বৈঠক করেছে ইসি। পুনরায় আজ তাদের ডাকার বিষয়ে সচিব বলেন, ‘তিন সিটি নির্বাচনের সর্বশেষ পরিস্থিতি জানাতে তাদের ডাকা হয়েছে। তারা বলেছেন নির্বাচনের পরিবেশ ভালো আছে। এছাড়া নির্দেশনা দেয়া হয়েছে, যাতে কাউকে অহেতুক হয়রানি করা না হয়।’
সিলেট, বরিশাল ও রাজশাহী মহানগর পুলিশ কমিশনার ও বিভাগীয় কমিশনারদের সঙ্গে ইসির বৈঠক হয়। তিন সিটিতে আইনশৃঙ্খলার সর্বশেষ পরিস্থিতি এবং নির্বাচনসংক্রান্ত বিষয়ে আলোচনা করতে নির্বাচন কমিশন এ বৈঠকের আয়োজন করে। প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সভাপতিত্বে অন্য চার নির্বাচন কমিশনার বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
বিএনপি নেতাকর্মীদের হয়রানি ও আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগের বিষয়ে সাংবাদিকদের ইসি সচিব বলেন, ‘পত্রপত্রিকায় বা অন্যভাবে যেসব তথ্য এসেছে সেগুলোর বিষয়ে পুলিশ কমিশনারদের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছে। তারা জানিয়েছেন কাউকে হয়রানির উদ্দেশ্যে নয়, সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে এবং মামলার ভিত্তিতে তাদের গ্রেফতার করা হচ্ছে।’
বিএনপির লিখিত অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এ ধরনের কোনো অভিযোগের সত্যতা পুলিশ কমিশনাররা আমাদের দেননি। আমরা বিষয়গুলো তলিয়ে দেখছি। রিটার্নিং অফিসারের কাছে অভিযোগের তালিকা দেয়া হয়েছে। তারাও বিষয়গুলো দেখছেন। তারা দেখছেন সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়া কাউকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না। পুলিশের পক্ষ থেকে সুনির্দিষ্ট তথ্য চাওয়া হয়েছে।’
ইসি সচিব আরও বলেন, ‘প্রত্যেকটি অভিযোগের তদন্ত হয়। কোনো অভিযোগের সত্যতা আমরা পাইনি। একজন যুগ্ম সচিবের নেতৃত্বে আমরা খুলনায় তদন্ত করে দেখেছি। এই বিষয়ে তদন্ত করে দেখেছি।’