এইচএসসির ফলাফল প্রকাশ ॥ সিলেট বোর্ডে পাসের হার ৬২.১১, জিপিএ ৫- ৮৭৩ শিক্ষার্থী ॥ শতভাগ ফেল ২, শতভাগ পাস ১০ প্রতিষ্ঠান, ৫ বছরে এবার পাসের হার কম

127

সিন্টু রঞ্জন চন্দ :
সারাদেশের ন্যায় সিলেট শিক্ষা বোর্ডের অধীনে উচ্চ মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এইচএসসি) পরীক্ষায় ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। সিলেট শিক্ষা বোর্ডে পাসের হার ৬২.১১। জিপিএ ৫ পেয়েছে ৮৭৩ শিক্ষার্থী। সিলেটে এবার পাসের হার কমেছে। শতভাগ ফেল করেছে ২টি প্রতিষ্ঠান ও ১০ প্রতিষ্ঠান শতভাগ পাস করেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডের সম্মেলন কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মো. কবির আহমদ আনুষ্ঠানিকভাবে এ ফলাফল ঘোষণা করেন।
এবারের এইচএসসি পরীক্ষায় সিলেট শিক্ষা বোর্ড থেকে মোট ৭১ হাজার ৪২ জন পরীক্ষার্থী অংশগ্রহন করে। এদের মধ্যে পাস করেছে ৪৪ হাজার ১শ’ ২৭ জন শিক্ষার্থী। অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ছাত্র ছিল ৩২ হাজার ৮শ’ ৮৫ জন। পাস করেছে ১৯ হাজার ১শ’ ৮৬ জন। পাসের হার ৫৮.৯২। ছাত্রী ছিল ৩৮ হাজার ৭শ’ ৯০ জন। পাস করেছে ২৪ হাজার ৯শ’ ৪১ জন। পাসের হার ৬৪.৮১। গত বছর (২০১৭) পাসের হার ছিল ৭২ শতাংশ। এবার তা কমে দাড়িয়েছে ৬২.১১ শতাংশে। অন্যদিকে সিলেটে মোট জিপিএ ৫ পেয়েছে ৮৭৩ শিক্ষার্থী। এদের মধ্যে ছেলে ৫৩৪ ও মেয়ে ৩৩৯ জন। এছাড়া এবারের পরীক্ষার ফলাফলে বিজ্ঞান বিভাগে পাসের হার সবচেয়ে বেশি। এই বিভাগে মোট পাসের হার ৮৩ দশমিক ১৬। পাসের হারের ক্ষেত্রে ছেলেদের চেয়ে এগিয়ে মেয়েরা।
শতভাগ ফেল ২, শতভাগ পাস ১০ প্রতিষ্ঠান: এবারের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় সিলেট শিক্ষা বোর্ডের ২ টি প্রতিষ্ঠানে শতভাগ ফেল করেছে শিক্ষার্থীরা। এছাড়া শতভাগ পাসকৃত প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ১০। যা গতবার ছিল ৮টি। প্রতিষ্ঠান দুটি হলো- সুনামগঞ্জের ছাতকের উত্তর সুরমা আসমত আলী উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ এবং মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের খয়রুন্নেছা খাতুন চৌধুরী কলেজ। বৃহস্পতিবার ফলাফল প্রকাশ উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মো. কবির আহমদ।
৫ বছরের মধ্যে এবারই পাসের হার কম সিলেট বোর্ডে: গত ৫ বছরের মধ্যে এবারের পরীক্ষা সবচেয়ে পাসের হার সিলেট বোর্ডে কমেছে। এ বোর্ডে ২০১৪ সালে পাসের হার ছিল ৭৯ দশমিক ১৬, ২০১৫ সালে ৭৪ দশমিক ৫৭, ২০১৬ সালে পাসের হার ছিল ৬৮ দশমিক ৫৯, ২০১৭ সালে ৭২। আর এবারের পাসের হার ৬২ দশমিক ১১। যা গতবারের চেয়ে ৯ দশমিক ৮৯ শতাংশ কম।
গত বছরের তুলনায় এ বছর জিপিএ-৫ প্রাপ্তির সংখ্যা বেড়েছে। গতবার জিপিএ-৫ পেয়েছিল ৭০০ জন শিক্ষার্থী। এবার জিপিএ-৫ পেয়েছে ৮৭৩ জন। যা গতবারের চেয়ে ১৭৩ বেশি। তবে ২০১৪ সালের ফলাফলে রেকর্ড সংখ্যক জিপিএ-৫ পেয়েছিল সিলেট বোর্ডে। যা পরবর্তীতে গত তিনবছরে ক্রমান্বয়ে কমেছে। ২০১৪ সালে জিপিএ-৫ পেয়েছিল ২ হাজার ৭০জন, ২০১৫ সালে ১ হাজার ৩৫৬ জন, ২০১৬ সালে জিপিএ ৫ পায় ১ হাজার ৩৩০ জন।
সিলেট শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মো. কবির আহমদ জানান, ইংরেজীতে বেশি ফেল করায় পাসের হার কমেছে। তবে সার্বিক ফলে তারা সন্তুষ্ট। পাসের হার কমলেও গুণগত মান বৃদ্ধি পেয়েছে। বোর্ডের অধিনে ২৮২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শতভাগ পাসকৃত প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ১০টি। এছাড়া শতভাগ ফেল করা প্রতিষ্ঠান রয়েছে ২টি।
কোন গ্রেডে কতজন পাস : এ বছর এইচএসসিতে সিলেটে ৭১ হাজার ৪২ জন পরীক্ষার্থী অংশ নেন। এর মধ্যে পাস করেছে ৪৪ হাজার ১শ’ ২৭ জন। জিপিএ-৫ পেয়েছে ৮৭৩ জন। জিপিএ-৫ ছাড়াও সিলেট শিক্ষা বোর্ডের পাসকৃতদের মধ্যে ‘এ’ গ্রেডে পাস করেছে ৪ হাজার ৬৯২ জন, ‘এ মাইনাস’ গ্রেডে পাস করেছে ৭ হাজার ৭৩১ জন, ‘বি’ গ্রেডে পাস করেছে ১২ হাজার ৩৩৯ জন, ‘সি’ গ্রেডে ১৭ হাজার ৫৭ এবং ‘ডি’ গ্রেডে পাস করেছে ১ হাজার ৪৩৫ জন শিক্ষার্থী। এছাড়া অকৃতকার্য হয়েছে ২৬ হাজার ৯১৫ জন এবং বহিস্কার করা হয়েছে ২৮ জনকে।