সিটি নির্বাচন শান্তিপূর্ণ হউক

45

তিন সিটি করপোরেশন রাজশাহী, বরিশাল ও সিলেট নির্বাচনের প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হলো। গত মঙ্গলবার সকালে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে মেয়র, সংরক্ষিত নারী আসন ও সাধারণ আসনের কাউন্সিলর পদপ্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হয়। তিন সিটিতে মেয়র পদে ১৮ জন ও কাউন্সিলর পদে ৫৩০ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তফসিল অনুযায়ী মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন ছিল ২৮ জুন। মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই হয় ১ ও ২ জুলাই; প্রত্যাহারের শেষ দিন ছিল ৯ জুলাই। সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হয়। আগামী ৩০ জুলাই তিন সিটিতে নির্বাচন হবে।
আনুষ্ঠানিক প্রচার-প্রচারণা শুরু হলেও অঘোষিত প্রচারণা শুরু হয়েছে অনেক আগেই। ভোটারদের সঙ্গে জনে জনে সংযোগ, ভোট প্রার্থনা, দলীয় প্রার্থীদের পক্ষে ভোট চাওয়া এসব চলছে। প্রার্থীরা, বিশেষ করে মেয়র পদের প্রার্থীরা নির্বাচিত হলে কী কী করবেন সে কথা জানাচ্ছেন ভোটারদের। বিভিন্ন এলাকায় যাচ্ছেন তাঁরা। আমাদের দেশে নির্বাচন রীতিমতো উৎসব। স্থানীয় সরকার নির্বাচনে জনসাধারণের সংশ্লিষ্টতা বেশি থাকে। বিরুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি না হলে তিন সিটি নির্বাচনেও এর ব্যত্যয় হবে না।
এই তিন সিটি নির্বাচনেও সংসদ সদস্যরা প্রচারণায় অংশ নিতে পারবেন না। নির্বাচন কমিশন যেভাবে চেয়েছিল সেভাবে অনুমোদন দেয়নি আইন মন্ত্রণালয়। তাই কমিশনের সভায় এ নিয়ে আর কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। সংসদ সদস্যদের সুবিধার্থে আচরণবিধি সংশোধনের উদ্যোগও থেমে গেছে। সমালোচনার কারণে আগ্রহও দেখাচ্ছে না নির্বাচন কমিশন। ফলে বিদ্যমান আচরণবিধিই কার্যকর হবে। প্রসঙ্গত, বর্তমান আচরণবিধিতে সংসদ সদস্যদের প্রচারে নামার সুযোগ না থাকায় এটি সংশোধনের দাবি তুলেছিল ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। তারা বলেছিল, বিএনপি সংসদে না থাকায় তাদের নেতারা প্রচারে নামতে পারছেন, কিন্তু আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্যরা প্রচারের সুযোগ পাচ্ছেন না। ফলে নির্বাচনে সবার সমান সুযোগ থাকছে না। তাদের দাবির মুখে খুলনা ও গাজীপুর সিটি নির্বাচনের আগে আচরণবিধি সংশোধনে উদ্যোগী হয় নির্বাচন কমিশন। এর বিরোধিতা করে বিএনপি। তারা বলে, ক্ষমতাসীনদের খুশি করতেই আচরণবিধি সংশোধন করছে নির্বাচন কমিশন। অতঃপর শুধু সংশ্লিষ্ট এলাকার সংসদ সদস্যদের প্রচারে অংশ নেওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা রেখে সংশোধিত আচরণবিধির খসড়া তৈরি করে কমিশন এবং অনুমোদনের জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠায়। আইন মন্ত্রণালয়ের মতামতের পর এ নিয়ে আর আগ্রহী হয়নি কমিশন।
কমিশন আসলে বিরূপ সমালোচনা এড়িয়ে চলতে চাইছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে তাদের এ প্রবণতা অমূলক নয়। যদিও সরকারিপক্ষ সমান সুযোগ মেলেনি বলে অসন্তোষ প্রকাশ করবে। তবু এটি মন্দের ভালো; নির্বাচনে সরকারি দল সুযোগের অপব্যবহার করেছে, এ অভিযোগ তত জোরালোভাবে উঠবে না। যা হোক, প্রচার-প্রচারণা শুরু হয়েছে। সুষ্ঠুভাবে সবাই প্রচারণায় অংশ নিক। সংঘাত নয়, শান্তিপূর্ণ প্রচারণা কাম্য।