ঈদ যাত্রায় সড়ক দুর্ভোগ

63

আর মাত্র কয়েক দিন। এর পরই শুরু হবে ঈদ যাত্রা। সড়কপথে বাসের টিকিট বিক্রি শেষ হয়ে গেছে। নৌপথে লঞ্চের টিকিটও বিক্রি শেষ। বরাবরের মতো এবারও ঈদে নাড়ির টানে বাড়ি ফিরবে মানুষ। ঈদ উৎসবের আনন্দ ভাগাভাগি করে নেবে নিকটজনদের সঙ্গে। ঈদ যাত্রা বরাবরই এক ভোগান্তির নাম। এবারও তার ব্যতিক্রম কিছু ঘটবে না বলেই আশঙ্কা করা হচ্ছে। রাজধানী থেকে বের হওয়ার প্রায় সব পথেই থাকবে বড় ধরনের যানজট। উত্তরের যাত্রীদের ভোগান্তিতে পড়তে হবে টাঙ্গাইল মহাসড়কে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের অবস্থাও ভালো নয়। গত বছরের জুনে মেরামত শেষ হওয়া ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক ২০ বছর টেকসই হওয়ার কথা থাকলেও এক বছর পার না হতেই বিভিন্ন স্থানে দেখা দিয়েছে ভগ্নদশা। এরই মধ্যে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর রক্ষণাবেক্ষণের নতুন প্রকল্প অনুমোদনের জন্য পরিকল্পনা পাঠিয়েছে মন্ত্রণালয়ে। অন্যান্যবারের মতো এবারও খানাখন্দে ভরা রাস্তা মানুষকে ভোগাবে। ঈদের সময়ের স্বাভাবিক চিত্র হচ্ছে, রাস্তায় ফিটনেসবিহীন লক্কড়ঝক্কড় গাড়ি চলে আসবে। পথে পথে যানজট ভোগাবে। তার সঙ্গে এবারও যুক্ত হচ্ছে ক্ষতবিক্ষত সড়ক-মহাসড়ক। পথে পথে যত্রতত্র যাত্রী ওঠানো ও গাড়ি পার্কিং, রাস্তার মাঝখানে যেকোনো যানবাহন নষ্ট হয়ে যাওয়া ইত্যাদি কারণে যানবাহনের গতি শ্লথ হয়ে যায়। অন্যদিকে এ সময় মহাসড়কে শ্লথগতির যানবাহনও উঠে আসে। অধিক লাভের আশায় আন্ত জেলা বাস কম্পানিগুলো তাদের ট্রিপের সংখ্যা বাড়িয়ে দেয়।
সড়কপথে ঢাকা থেকে বাড়ি যাওয়ার পথে যানজট থেকে শুরু করে নানা দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে রেল ভ্রমণকেই পছন্দ করতে শুরু করেছে মানুষ। গত শুক্রবার থেকে শুরু হয়েছে রেলের আগাম টিকিট বিক্রি। মহাসড়কের যানজট ও নৌপথের বিড়ম্বনার কথা মাথায় রেখে এবার বেশির ভাগ ঈদের যাত্রী ট্রেনকেই ঈদ যাত্রার বাহন হিসেবে চিন্তা করতে শুরু করে। কিন্তু সেখানেও বিপত্তি। এবারও চাহিদার চেয়ে ট্রেনের টিকিট কম। কৃত্রিম সংকট এরই মধ্যে তৈরি করা হয়েছে। অসাধু কর্মকর্তাদের আশকারায় এবারও দালালরা টিকিট বাণিজ্য শুরু করেছে বলে প্রথম দুই দিনেই অভিযোগ উঠেছে। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের ভাষ্য অনুযায়ী, এবার ঈদ যাত্রায় প্রতিদিন দুই লাখ ৭৫ হাজার যাত্রী চলাচল করবে। এবারের ঈদ যাত্রায় পূর্ব রেলে ৯০টি অতিরিক্ত বগি সংযোজনের কথা বলা হচ্ছে। কারখানায় বগি মেরামত চলছে।
ঈদ যাত্রা নির্বিঘœ করার দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের। ঈদের আগেই দেশের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক-মহাসড়কগুলো যাতে মেরামত করা হয়ে যায়, সেদিকে দৃষ্টি দেওয়া প্রয়োজন। ফিটনেসবিহীন যানবাহন যাতে যাত্রী পরিবহনে ব্যবহৃত না হয়, সে বিষয়ে হাইওয়ে পুলিশ ও ট্রাফিক বিভাগকে দৃষ্টি দিতে হবে। সবার সম্মিলিত চেষ্টায় ঈদ যাত্রা নির্বিঘœ করতে হবে।