খোশ আমদেদ মাহে রমজান

464

কাজিরবাজার ডেস্ক :
পবিত্র মাহে রমজানের আজ ১২তম দিবস। এ মাসের সিয়াম সাধনা আমাদের একটি আত্মজিজ্ঞাসামূলক জীবন পানে ধাবিত করতে চায়। ইসলাম পরিপূর্ণ একটি জীবন ব্যবস্থার নাম। এর পঞ্চ রোকন বা পঞ্চস্তম্ভ আর ইমানের ৭টি রোকন একজন মুসলমানের জন্য একান্ত বিশ্বাস, ভক্তি ও দৈনন্দিন আমলযোগ্য। এসব বিষয় আমলের ম্যাধমে মুসলমান একটি স্বতন্ত্র চরিত্র নিয়ে বিশ্বাসী জাতির অন্তর্ভুক্ত হয়। ইসলামী আমলগুলো অনুসরণের মাধ্যমে মুসলমানের মধ্যে ইহপরকালীন মুক্তির দৃঢ়তা সৃষ্টি হয়। সিয়াম তদ্রƒপ একটি প্রধানতম নৈতিক ভিত্তি। এ সাধনায় কিছু নীতি নৈতিকতার অনুশীলন হয়। যেমন- ১. আল্লাহ বলেছেন, কামা কুতিবা আলাল্লাযিনা মিন কাবলিকুম-এ এমন এক ফরজ কাজ যা তোমাদের পূর্ববর্তী জাতিদের ওপরও অবধারিত ছিল। এ থেকে মুসলমানদের মাঝে একটি ঐতিহ্যগত জাতীয় ঐক্যের তাগিদ রয়েছে। দ্বিতীয়ত, মাসব্যাপী সিয়াম সাধনার অন্তরালে আছে সামাজিক একতাবদ্ধতার সঙ্গে রোজা রাখা, একই সময় ইফতার করা, একই সময় ঈদ করা ইত্যাদি। কুরআনে এসেছে ফামান শাহিদা মিন কুমুশ শাহারা ফাল ইয়াসুম- যারাই এ মাস পাবে তাকে অবশ্যই মুখে সিয়াম সাধনার সূচনা করতে হবে। তৃতীয়ত, শারীরিক ও পারিপার্শ্বিক অবকাশ প্রদান। ইসলাম শৃঙ্খলার নাম। তাই বলে অপারগ ব্যক্তিদের এ ব্যাপারে সুন্দর ছাড় দেয়ার বিধানও রয়েছে। যেমন যথা সময়ে রোজার সূচনা করার নির্দেশ জারির সঙ্গে সঙ্গে আল্লাহ এও বলেছেন তোমাদের মধ্যে যারা অসুস্থ কিংবা সফরের হালতে থাক তারা এ নিয়মের বাইরেও অবস্থান করতে পার, ভাঙতে পারো তোমাদের রোজা এবং শারীরিক পারিপার্শ্বিক সুবিধা বিবেচনায় আবার তা আদায় করবে। চতুর্থত, মহানবী হুজুর কারীম (স.) ইরশাদ করেছেন, আল্লাহ তোমাদের দিনব্যাপী সিয়াম ফরজ করেছেন আর আমি রাতে তোমাদের জন্য সুন্নত করেছি কিয়ামুল লাইল বা তারাবির নামাজ। এর দ্বারা দিবাভাগের সঙ্গে রাতের ভাগকেও পরিপূর্ণভাবে সাধনার অন্তর্ভুক্ত করা হলো। সুতরাং কেউ যদি মনে করে শুধু উপোস থাকা মানে রোজা তা ঠিক নয়। এর সঙ্গে অন্যান্য নফল ইবাদতকেও সন্নিবেশ করতে হবে। পঞ্চমত, হুজুরে কারীম (স.) ইরশাদ করেছেন, মান লাম ইয়াদ আ’ কাওলায যুর। কোন ব্যক্তি যদি অশালীন কথা থেকে দূরে না থাকে এবং গর্হিত কাজ বর্জন না করে তাহলে পরওয়ার দিগারের কাছে তার উপোস থাকার কোন মূল্য নেই। তাই জবানের হেফাজতও রোজার অন্যতম আচরণবিধি। সর্বশেষ যে কথাটি বলতে চাই সিয়াম সাধনার সুবেহ সাদিক থেকে পবিত্র ইফতার গ্রহণের বেলা এবং পরবর্তী ইশা তারাবি থেকে সেহরি পর্যন্ত যে আধ্যাত্ম সাধনায় আমরা নিমজ্জিত হই তা সত্যিকার অর্থে আমাদের কর্মজীবনে, ব্যবসা বাণিজ্যে, চাকরি বাকরিতে সংযত ও নৈতিক আচরণ বদ্ধমূল করে কিনা তা উপলব্ধি করাই মাসব্যাপী সিয়াম সাধনার হাকিকত।