টহল পুলিশের হাতে আসা বালিকা এখন পিতার কোলে

49

গোলাপগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা :
গত শুক্রবারের ঘটনা। রাত ১১টা কুড়ি মিনিট। রাস্তা অনেকটা ফাঁকা। সিরামপুর বাইপাস এলাকায় একটি সিএনজি অটোরিক্সায় সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে রাতের ডিউটি পালন করছিলেন মোগলাবাজার থানার এএসআই আব্দুল জলিল। এ সময় পুলিশের ওই অফিসার দু’জন পুলিশ সদস্য নিয়ে চৌ’রাস্তার মাঝখানে দাঁড়িয়ে দায়িত্ব পালন করছিলেন। হঠাৎ দেখা যায় বালিকা তানিয়া আক্তারকে। সে সিলেট-জকিগঞ্জ সড়ক দিয়ে আসছিল। এ সময় ডিউটিতে থাকা পুলিশ অফিসার তার কাছে জানতে চায় তুমি এতো রাতে একা কোথায় যাবে। পুলিশের প্রশ্নে সে জানায় আমি বাড়ি যাবো! পুলিশ তাকে জানায় তুমি একা কিভাবে যাবে এবং তোমার বাড়ি কোথায়? সে জানায় আমার বাড়ি মৈশাপুরে। কোন মৈশাপুর জানতে চাইলে সে পুলিশকে জানায় আমি জানি না। তবে এই রাস্তা দিয়ে আমার বাড়ী যেতে হয়। এ সময় পুলিশ তার কাছে জানতে চায় তুমি কোন জায়গা থেকে এসেছো। সে জানায় আমি ফুলবাড়ী থেকে আসছি। কয়েকমাস পূর্বে আমার বাবা ফুলবাড়ী এলাকার একটি বাসায় কাজের জন্য দিয়ে যান। মা-বাবা তার খোঁজ খবর না নেয়ায় সে তার মালিককে না জানিয়ে বাড়ীর উদ্দেশ্য রওয়ানা হয়। এ সময় তৎকালীন গোলাপগঞ্জ থানার ও বর্তমান মোগলাবাজার থানার এএসআই আব্দুল জলিল সেলিম হাসান কাওছার নামে গোলাপগঞ্জের এক সাংবাদিককে বিষয়টি অবগত করেন। পরে ঐ সাংবাদিকের সহযোগিতায় তানজিনাকে ফুলবাড়ী এলাকা ও পরে গোলাপগঞ্জ বাজার চৌমুহনীতে নিয়ে আসা হয়। অনেক খোঁজাখুঁজির পর তার স্বজনদের কোন সন্ধান না পেয়ে রাত সাড়ে ১২টায় পুলিশ তাকে মোগলাবাজার থানায় নিয়ে যায়। পরদিন শনিবার সকালে সিলেট সদরের কোতোয়ালী থানার পুলিশ হেফাজতে মেয়েটিকে পাঠানো হয়। সিরামপুর থেকে প্রথমে ফুলবাড়ী ও পরে গোলাপগঞ্জ বাজারে নিয়ে আসার পর সাংবাদিক কাওছার কিশোরী তানজিনার নাম ও গ্রামের বাড়ীর নাম ঠিকানা জিজ্ঞাসা করে উনার মোবাইলে ভিভিও ধারণ করেন। পরে ওই ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম উনার ব্যক্তিগত ফেইসবুক আইডি এস.এইচ কাওছারে আপলোড করেন। ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে দেশ বিদেশের বিভিন্ন লোকের সহযোগিতায় ওই কিশোরীর পিতার কাছে হস্তান্তর করা হয়। ওই কিশোরী সুনামগঞ্জ জেলার ছাতক উপজেলার গোবিন্দোগঞ্জ ইউপির সেই মৈশাপুর গ্রামের ছায়াদ আলীর কন্যা। এ ব্যাপারে মোগলাবাজার থানার এএসআই আব্দুল জলিলের সাথে আলাপ করা হলে তিনি জানান, উদ্ধার হওয়া ঐ কিশোরী মেয়ের প্রাথমিক কিছু তথ্য ভিডিও করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে সাংবাদিক কাওছার সাহেব প্রকাশ করার পর ফেইসবুক ব্যবহার কারীদের সহযোগিতায় পরিচয় শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে। পুলিশ হেফাজতে থাকা মেয়েটিকে মৈশাপুর গ্রামের ইউপি সদস্য ও উদ্ধার হওয়া কিশোরীর পিতার কাছে হস্তান্তর করি। তিনি আরো জানান,ওই মেয়েটিকে তার পিতা গোলাপগঞ্জ উপজেলার ফুলবাড়ী ইউপির কিছমত মাইজভাগ এলাকার একটি বাসায় কাজের জন্য দিয়ে গেছিলেন। মেয়েটির বাবা-মা খোঁজখবর না নেয়ায় সে তার মালিককে না বলেই নিজ বাড়ীর উদ্দেশ্য রওয়ানা হয়। যে বাসায় ঐ মেয়ে কাজ করত বাসার মালিক ফেইসবুকে বিষয়টি জানতে পেরে মেয়ের পিতাকে অবগত করেন। পরে স্থানীয় ইউপি সদস্য ও মেয়ের বাবা তাকে নিয়ে যান।