পুরাতন খোয়াই নদী দখল ও দূষণমুক্ত করে সংরক্ষণের দাবিতে জেলা প্রশাসককে বাপার স্মারকলিপি ॥ নদী তীরবর্তী জনপদের জন্য কৃত্রিম বন্যা, পানি দূষণসহ অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের আকর হিসেবে ধরা দিচ্ছে

40

হবিগঞ্জ শহরের পুরাতন খোয়াই নদীর পূর্ণাঙ্গ সীমান চিহ্নিতকরণ, দখল এবং দূষণমুক্ত করে সংরক্ষণের দাবিতে জেলা প্রশাসককে স্মারকলিপি দিয়েছে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) হবেগঞ্জ শাখা ও খোয়াই রিভার ওয়াটারকিপার। গতকাল ৩ মে সকাল ১০ টায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে এই স্মারকলিপি দেয়া হয়। জেলা প্রশাসক মাহমুদুল কবির মুরাদ স্মারকলিপি গ্রহণ করেন এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ^াস প্রদান করেন। স্মারকলিপিতে বলা হয় ৫ কিঃ মিঃ লম্বা পুরাতন খোয়াই নদী হবিগঞ্জ শহরের প্রধানতম জলাধার। বর্ষা মৌসুমে শহরের বৃষ্টির পানি ধারণ ও পরিবেশগত ভারসাম্য রক্ষায় পুরাতন খোয়াই নদীর ভূমিকা অপরিসীম। এছাড়া এই শহরের ইতিহাস-ঐতিহ্য ও সৌন্দর্য বর্ধণের সাথে পুরাতন খোয়াই নদী একইসূত্রে গাঁথা। অথচ দুঃখজনক হলেও সত্য যে, কিছু স্বার্থান্বেষী মহল নদীটিকে অব্যাহতভাবে দখল করার কারণে এর শেষ চিহ্ন মুছে যেতে চলেছে। দীর্ঘদিন ধরে ভূমি দখলদারদের অবৈধ দখল, ভরাট ও দূষণের কারণে পুরাতন খোয়াই নদীর অবস্থা চরমে পৌঁছেছে। নদীটি ক্রমাগত ভরাট ও অবৈধ স্থাপনা গড়ে উঠার কারণে বর্তমানে অল্প বৃষ্টিপাতের ফলে বর্ষা মৌসুমে শহরের বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। যা শহরের নি¤œাঞ্চলে কৃত্রিম বন্যা হিসেবে রূপ নেয়। এতে ভুক্তভোগী এলাকার মানুষকে দুর্গন্ধময় ও আবর্জনা মিশ্রিত পানিতে আবদ্ধ অবস্থায় বসবাস করতে হয়।অথচ দুঃখের বিষয় কয়েক বছর ধরে চলা আসা এসব সমস্যা দূরীকরণে কার্যকর কোন পদক্ষেপ লক্ষ্য করা যাচ্ছে না।
পুরাতন খোয়াই নদীর উপর এরকম অনাকাঙ্খিত অন্যায় কোনভাবেই গ্রহনযোগ্য নয়। এভাবে নদীটি ধবংস করা হলে হবিগঞ্জে শুধু পরিবেশ বিপর্যয়ই নয়; ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় নেমে আসবে। তাই অনতিবিলম্বে পুরাতন খোয়াই নদীটিকে রক্ষা করার বিকল্প নেই।
স্মারকলিপিতে ৫টি দাবি উপস্থাপন করা হয়। দাবিগুলো হচ্ছে,অবিলম্বে পুরাতন খোয়াই নদীর পূর্ণাঙ্গ সীমানা চিহ্নিত করা, পুরাতন খোয়াই নদীতে গড়ে উঠা সকল অবৈধ স্থাপনা ও দখল উচ্ছেদ করে নদী খনন করা, পুরাতন খোয়াই নদীকে পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে দখলদারদের মাধ্যমে ভরাট অংশের মাটি সরিয়ে নিতে ব্যবস্থা গ্রহণসহ দখলদারদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ, নদীর উভয় পাড়ে প্রয়োজনীয় স্থান সমূহে গাইডওয়াল ও ওয়াকওয়ে নির্মাণ করা এবং নদীর পারে ঘাস লাগানো, গাছ রোপন, মানুষের বসার স্থান করা ও নদী রক্ষায় স্থানীয় প্রশাসন, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও নাগরিক সমাজের সমন্বয়ে নদী রক্ষা মনিটরিং টিম গঠন করা ।
বাপা হবিগঞ্জের সভাপতি অধ্যাপক মোঃ ইকরামুল ওয়াদুদ এর নেতৃত্বে স্মারকলিপি প্রদানকালে উপস্থিত ছিলেন সদর উপজেলা চেয়ারম্যান সৈয়দ আহমদুল হক, বাপা হবিগঞ্জের সহ-সভাপতি তাহমিনা বেগম গিনি, বাপা হবিগঞ্জের সাধারণ সম্পাদক ও খোয়াই রিভার ওয়াটারকিপার তোফাজ্জল সোহেল, সদস্য আলাউদ্দিন আহমেদ, কবি পারভেজ চৌধুরী ও মোঃ আমিনুল ইসলাম। বিজ্ঞপ্তি