রমজানকে সামনে রেখে নিত্যপণ্যের বাজার ॥ আমদানী বেশি হলে দাম কমবে আর কম হলে বাড়বে

193

সিন্টু রঞ্জন চন্দ :
আসন্ন রমজানে নিত্য পণ্যের আমদানী বেশী হলে দাম কমবে এবং আমদানী কম হলে দাম বাড়বে এমনটি জানিয়েছেন সিলেট নগরীর খুচরা ব্যবসায়ীরা। তারা জানিয়েছেন, বর্তমানে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম মানুষের ক্ষয়ক্ষমতার ভেতরের রয়েছে। যদি জিনিসপত্রের এই পর্যায়ে দাম বাজারে থাকে তাহলে আসন্ন রমজান মাসে লোকজনের উপর এর কোন প্রভাব পড়বে না। গতকাল শনিবার বিকেলে বিভাগীয় শহর বন্দরবাজার এলাকা সরেজমিনে ঘুরে এমন তথ্য বেরিয়ে এসেছে।
বর্তমানে খুচরা বাজারে প্রতি কেজি ছোলা ৭০ টাকা, কেসারী ৮০ টাকা, বুটের ডাল ৩৮ টাকা, লাল ডাল বড়টা ৬৫ টাকা, বেসন প্রতি কেজি ৬০ টাকা, প্রতি কেজি এলসি পিঁয়াজ ২০ থেকে ২২ টাকা, ভারতীয় রসুন প্রতি কেজি ৮৫ টাকা এবং দেশী রসুন প্রতি কেজি ৬০ টাকা, আদা ৬০ টাকা, সোয়াবিন তেল লিটার প্রতি ১০৫ টাকা, প্রতি লিটার সরিষার তেল ২৫০ টাকা, মরিচ ৩২০ টাকা, হলুদ ৩৪০ টাকা, ধনিয়া কেজিপ্রতি ২৫০ টাকা, লবন ৩৮ টাকা ও মুগডাল প্রতিকেজী ১৩০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
রমজানে মুসলমানদের ইফতারের সময় প্রথমে পানি পানের পর দ্বিতীয় খাবের রয়েছে খেজুর। বিক্রির জন্য রমজান উপলক্ষে বর্তমানে ফলের দোকানগুলোতে বিভিন্ন দেশের খেজুর প্যাকেটজাত করছেন বন্দরবাজারের সাদেক ফল ভান্ডার দোকানদার সাদেক আহমদ। তিনি জানিয়েছেন, তার দোকানে প্রায় ৮ জাতের খেজুর রয়েছে। দামও প্রকারভেদ রয়েছে। যেমন- সৌদি-আরবের নাগাল প্রতিকেজি খেজুর ১৮০ টাকা, আলজেরিয়ার বারারী আড়াই’শ গ্রাম (পেকেট) ১২০ টাকা, সৌদি আরবের লুল ৪৫০ টাকা, দুবাইয়ের ইনপোর্ট করা সারের ১৪০ টাকা, সৌদি-আরবের সাবাস ২৬০ টাকা ও খালাস খেজুর দেড়’শ গ্রাম (পেকেট) ৮০ টাকা, পাকিস্তানী খুরমা প্রতিকেজি ১৫০ টাকা, ইরাকি খেজুর ১২০ টাকা। এছাড়া সৌদি-আরবে সবচেয়ে দামী ও সু-স্বাদু খেজুর এখনও রমজান উপলক্ষে বাজারে আসিনি। পাকিস্তানী সাদা আঙ্গুর ২৫০ টাকা, পাকিস্তানী কালা আঙ্গুর ৫০০ টাকা, ব্রাজিলের আপেল প্রতিকেজি ১৫০ টাকা, চায়না ও মিশরী মালটা প্রতিকেজি ১১০ টাকা, চায়না নাশপাতি ১৬০ টাকা, দেশী প্রতিপিছ তরমুজ প্রকারভেদে খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে। সাদেক আহমদ আরো জানান, এসব ফলে আমার জানামতে কোন ফরমালিন নেই। কারন এসব ফলে মাছি বসছে। মাছি যদি ফলে না বসে তাহলে বুঝে নিতে হবে এসব ফলে ফরমালিন রয়েছে। বর্তমানে ফলের দাম মানুষের ক্ষয়ক্ষমতার ভেতরে রয়েছে।
বাজারে বর্তমানে বয়লার সাদা মোরগীর কেজিপ্রতি ১৩০ টাকা, লাল লেয়ার মোরগী প্রতি পিছ ৩৬০ টাকা, কক প্রতি পিছ ১৩৫ টাকা, গরু’র মাংস প্রতিকেজি ৪৮০ টাকা, খাসি প্রতিকেজি ৭৫০ টাকা ও ছাগল প্রতিকেজি ৫৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
বন্দরবাজারে ইত্যাদি পোল্ট্রিা ব্যবসায়ী দুলাল আহমদ জানালেন, রমজানে আমদানী বেশী হলে বয়লার জাতীয় মোরগের দাম কমবে আর আমদানী কম হলে দাম কিছুটা বাড়বে।
মেসার্স শুভেচ্ছা মিট হাউসের ব্যবসায়ী আব্দুল কাইয়ুম জানান, বর্তমানে মাংসের যে দাম বাজারে রয়েছে আসন্ন রমজান মাসে এসব জিনিসের দাম বাড়ার সম্ভবনা কম।
নতুন বোরে চাউল বাজারে এখনও আসেনি। তবে রমজান মাসে হয়তো এ চাউল বাজারে আসবে। বর্তমানে অন্যান্য চাউলের মধ্যে রয়েছে কাজল লতা সিদ্ধ চাউল কেজিপ্রতি ৫০ টাকা, মালা সিদ্ধ ৪৮ টাকা, মালা আতব ৪৫ টাকা, পাইজং আতব কেজিপ্রতি ৪৫ টাকা, জিরা সিদ্ধ ৬২ টাকা, কালিজিরা ৬৫ টাকা, চিনিরগুড়া ৮০ টাকা, কাটারিভোগ ৬২ টাকা, মিনিকেট ৫২ টাকা, নাজির সাইল ৬০ টাকা দরে চাউল বিক্রি হচ্ছে।
লালবাজার সিকন্দর আলী এন্ড সন্স’র চাউল ব্যবসায়ী আমিরুল ইসলাম বলেন, রমজান মাসে চাউলের দাম বাড়ার সম্ভবনা কম। এখনও বোরো চাউল বাজারে আসেনি। তবে এ চাউল বাজারে আসলে হয়ত চাউলের দাম উঠানামা করতে পারে।
বর্তমানে প্রতিকেজি টমেটো ৩০ টাকা, বেগুন প্রতিকেজি ৩৫ টাকা, আলু ১৫ টাকা থেকে ১৮ টাকা, গাজর কেজিপ্রতি ৫০ টাকা, লেবু প্রতিহালি ২০-২২ টাকা, কাচামরিচ কেজি প্রতি ৩০ টাকা, শশা প্রতিকেজি ৩০ টাকা ও ধনেপাতা কেজিপ্রতি ১০০ টাকা দরে বাজারে বিক্রি হচ্ছে।
লালবাজারের সবজী ব্যবসায়ী কাচা মিয়া জানান, এসব কাচামাল। রমজানে দাম উঠানামা করতে পারে। এছাড়া আমদানী বেশী হলে দাম কম থাকবে আর আমদানী কম হলে দাম বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।