পরিবেশবাদীদের উদ্যোগে নাগরিক বন্ধন ॥ ধোপাদীঘির অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ না করে স্থাপনা নির্মাণ বন্ধ করার দাবী

52

সিলেটের হাতেগোনা প্রাকৃতিক জলাধারের অন্যতম ধোপাদীঘি। ধোপাদীঘির অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ না করে ওয়াকওয়ে নির্মাণ ও দীঘির মধ্যবর্তী জায়গা ভরাট করে রাস্তাসহ স্থাপনা নির্মাণের প্রতিবাদে সিলেটে পরিবেশবাদীদের উদ্যোগে ‘নাগরিকবন্ধন’ কর্মসুচি পালন করা হয়েছে । ২৩ এপ্রিল বিকেলে সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সম্মুখে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা)। সিলেট শাখা এই নাগরিকবন্ধন কর্মসুচির আয়োজন করে।
বিভিন্ন নাগরিক সংগঠনের প্রতিনিধি ও পরিবেশবাদীদের অংশগ্রহণে ঘন্টাব্যাপী চলা এ কর্মসূচিতে নাগরিক প্রতিনিধিরা সংহতি বক্তব্য রাখেন। গণজাগরণ মঞ্চ সিলেটের মুখপাত্র দেবাশিষ দেবু’র সঞ্চালনায় ও বাপা সিলেট শাখার সহ-সভাপতি ই ইউ এমাদুল্লাহ শহিদুল ইসলাম-এর সভাপতিত্বে কর্মসুচির প্রেক্ষাপট তুলে ধরে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাপা সিলেটের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল করিম কিম । অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ইলেকট্রনিক মিডিয়া জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের সভাপতি আশরাফুল কবির, সমাজকর্মী ডা. নাজরা চৌধুরী, সিনিয়র সাংবাদিক বদরুদ্দোজা বদর ও আফম সাঈদ, নাগরিক মৈত্রী সিলেটের আহ্বায়ক সমর বিজয় সি শেখর, নাগরিক সংগঠক এডভোকেট গোলাম সোবহান চৌধুরী দিপন, বাংলাদেশ পরিবেশ আইনজীবী সমিতি (বেলা)-সিলেট এর বিভাগীয় সমন্বয়কারী এডভোকেট শাহ শাহেদা আখতার, বাপা’র যুগ্ম সম্পাদক সাংবাদিক ছামির মাহমুদ, , সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সহযোগী অধ্যাপক প্রণবকান্তি দেব, সারি বাঁচাও আন্দোলনের সমন্বয়ক আব্দুল হাই আল হাদী, বিশিষ্ট ব্যাবসায়ী মোহাইমিন চৌধুরী সংস্কৃতিক সংগঠন শতভিষা’র মুখ্য নির্বাহী রীমা দাস, ওয়েমেন ওয়ার্ডস-এর সম্পাদক অদিতি দাস, নারী সংগঠক বর্ণা ব্যানার্জি, লিটল ম্যাগাজিন মেঠোসুর সম্পাদক বিমান তালুকদার, বাপা সংগঠক সুপ্রজিত তালুকদার, সিলেট ডিবেট ফেডারেশনের সভাপতি রেদোয়ান আহমদ, ইয়াং বাংলার কো-অর্ডিনেটর আলি হাসান রুমেল, তরুণ সংগঠক নাবিদ হাসান ও অরুপ রায় প্রমুখ ।
বক্তারা বলেন, পুকুর ও দিঘির নগরী খ্যাত সিলেটের হাতেগোনা প্রাকৃতিক জলাধারের অন্যতম ধোপাদিঘি । ধোপা দিঘির পার্শ্ববর্তি স্থানেই সিলেট জেলা কারাগার । ধোপাদিঘি ও দিঘির পার্শ্ববর্তি সিলেট জেলা কারাগারের স্থানে একটি উন্মুক্ত পার্ক নির্মাণের ঘোষণা দিয়েছিলেন আলোকিত সিলেটের স্বপ্নদ্রষ্টা অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত । ২০০৮-এর সংসদ নির্বাচনকালে নিজের নির্বাচনী ইশতেহারে এই পার্ক প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি ছিল । যা নগরীর ফুসফুস হিসাবে কাজ করবে বলে তিনি একাধিকবার উল্লেখ করেছেন। নির্বাচনের পর সরকারের অর্থমন্ত্রী হয়ে জেলা কারাগারের জন্য নতুন জায়গা নির্ধারন করা হয়। সে জায়গাতে আধুনিক কারাগার ভবন নির্মাণের কাজ শুরুও হয় কিন্তু দুঃখের বিষয় সরকারের দুই মেয়াদেও কারাগার স্থানান্তর করা সম্ভব হয়নি। জেলা কারাগারের পরিত্যাক্ত জায়গায় উন্মুক্ত পার্ক স্থাপনের জন্য যেখানে ধোপাদিঘিকে দখলদারদের হাত থেকে পুনরুদ্ধার করা উচিত ছিল, সেখানে দিঘি গত দশ বছরে আরও সঙ্কুচিত হয়েছে। দিঘির জায়গায় সিলেট সিটি কর্পোরেশনের লীজকৃত ‘ওসমানী শিশু পার্ক’ নামের রুচিহীন স্থাপনা উন্মুক্ত পার্ক ও জলাধারের স্বপ্নকে পরিহাস করে। এ অবস্থায় দিঘির অভ্যন্তর ভরাট করে স্থাপনা নির্মাণ ও দখলদারদের উচ্ছেদ না করে ওয়াকওয়ে নির্মাণ শুরু করায় দিঘির ভবিষ্যত নিয়ে আশংকা সৃষ্টি হয়েছে। বক্তারা অবিলম্বে দিঘির চারপাশে ওয়াকয়ে নির্মাণ ও দিঘির অভ্যন্তরে মাটি ভরাট কাজ বন্ধের দাবি জানান। বিজ্ঞপ্তি