উঠে দাঁড়ান, ফেটে পড়ুন, নেতা-কর্মীদের ফখরুল

33

কাজিরবাজার ডেস্ক :
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে দলের নেতাকর্মীদেরকে ‘উঠে দাঁড়িয়ে’ বিক্ষোভ ফেটে পড়ার আহ্বান জানিয়েছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
২৬ মার্চ স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে শনিবার রাজধানীতে বিএনপি আয়োজিত আলোচনায় এই আহ্বান জানান বিএনপি মহাসচিব।
সরকার উৎখাতে দেশবাসী মুখিয়ে আছে বলেও মনে করেন ফখরুল। বলেন, ‘সরকারের পক্ষ থেকে বিএনপিকে সভা সমাবেশ করতে বাধা দেয়া হয়। তারপরও মানুষের ঢল নামে। মানুষ অপেক্ষা করছে সুযোগের জন্য। সুযোগ পেলে তারা চিরতরে এদের উৎখাত করে দেবে।’
আলোচনায় বিএনপির নেতারা আন্দোলনের মাধ্যমে কারাগার থেকে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করার প্রত্যয়ের কথা বলেন।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় গত ৮ ফেব্রুয়ারি পাঁচ বছরের কারাদণ্ড হয়েছে খালেদা জিয়ার। এরপর থেকে তার মুক্তির দাবিতে রাজপথ এবং উচ্চ আদালতে বিএনপির সব চেষ্টা এখন অবধি ব্যর্থ হয়েছে। হাইকোর্ট গত ১২ মার্চ খালেদা জিয়াকে চার মাসের জামিন দিলেও আপিল বিভাগ সে আদেশ আটকে দিয়েছে।
নেতাকর্মীদের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সবাই উঠে দাঁড়ান, ফেটে পড়ুন। কোনো বিকল্প নেই।’
‘আন্দোলন, আন্দোলন, আন্দোলন। আন্দোলনের মাধ্যমে বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করবে। এর আগে কোনো বিষয় চিন্তা করব না।’
আন্দোলনের জন্য প্রস্তুতির বিষয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমাদের সংগঠন শক্তিশালী করতে হবে। প্রত্যেকের ঘরে ঘরে চলে যেতে হবে।’
‘নিজের অধিকার আদায় করার জন্য বুকের উপর চেপে বসে থাকা দানব সরকারকে সরাতে হবে। এজন্য সবাইকে দলমত নির্বিশেষে জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলতে হবে।’
আওয়ামী লীগ জোর করে ক্ষমতা দখল করে রেখে স্বাধীনতার চেতনা ধ্বংস করে দিয়েছে বলেও অভিযোগ করেন ফখরুল। বলেন, ‘বন্দুক, অস্ত্রের জোরে তারা জনগণকে জিম্মি করে রেখেছে। এটা আওয়ামী লীগের চরিত্র।’
১৯৭১ সালের পর ক্ষমতায় এসেও আওয়ামী লীগ জনগণকে জিম্মি করেছিল, গণতন্ত্র ধ্বংস করেছিল বলেও অভিযোগ করেন বিএনপি মহাসচিব।
ফখরুল বলেন, ‘কোনো বিরোধী মত তারা সহ্য করতে পারছে না। গণতন্ত্রের মাতা বেগম খালেদা জিয়াকে তারা কারাবন্দি করে রেখেছে।’
বিএনপির তিন এজেন্ডা: মওদুদ
আলাচনায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদও আন্দোলনের মাধ্যমে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে আনার কথা বলেন।
মওদুদ বলেন, ‘আমাদের তিনটি মূল এজেন্ডা। প্রথমটি হলো: বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে। আমরা নেত্রীকে ফিরে পেতে চাই। তাই যত কলাকৌশল করুন, ষড়যন্ত্র করুন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর যতই টেনে ধরুন। তাকে আমরা মুক্ত করে আনব।’
‘এজন্য শুধু আইনি লড়াই নয়, জনমত তৈরি করতে হবে। আমাদের আন্দোলন করতে হবে। তাহলে তিনি মুক্ত হয়ে আসবেন।’
‘দ্বিতীয়টি হলো: নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে। এরজন্য যে আন্দোলন চলছে এটা চলবে। শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে আরো বেগবান করতে হবে।’
‘তৃতীয় এজেন্ডা হলো: আমরা গণতান্ত্রিক দল। তাই গণতান্ত্রিক পন্থায় নির্বাচনের মাধ্যমে আমাদের মানুষের প্রতিনিধিত্ব করতে হবে। এজন্য আমাদের নির্বাচনী প্রস্তুতি নিতে হবে। কারণ আওয়ামী লীগ অনেক দূর এগিয়ে গেছে।’
‘তাই আমাদের এখন থেকেই সবাইকে কাজ শুরু করতে হবে। কারণ রাজনৈতিক ব্যাপার। যে কোনো সময় নির্বাচন হতে পারে’- বলেন মওদুদ।
অন্যান্য বছর এই আলোচনায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকতেন দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। তবে তিনি কারাগারে থাকায় আজকের আলোচনায় প্রধান অতিথি ছিলেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন।
বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানির সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য জমির উদ্দিন সরকার, নজরুল ইমলাম আলমগীর, মির্জা আব্বাস, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, শাহজাহান ওমর, ফজলুর রহমান প্রমুখ আলোচনায় বক্তব্য রাখেন।